কয়েক দিনের হালকা ও ভারী বর্ষনে সোনারগাঁ উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে পানিবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অপরিকল্পিত নগরায়ন, নতুন বাড়িঘর ও শিল্প কারখানা নির্মাণ করার ফলে পুকুর, জলাশয়, খাল ও ছোট নদীগুলো দখল করে ভরাট করার কারণে বৃষ্টির পানি সরতে না পেয়ে এ পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তীতে পড়েছে সোনারগাঁবাসী।
জানা যায়, সমুদ্রে সৃষ্টি লঘু চাপের কারণে গত কয়েকদিন ধরে হালকা, মাঝারী ও ভারী বর্ষন হচ্ছে। এ বর্ষনে সোনারগাঁ উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে পুকুর ও জলাশয়গুলো ভরে বাড়িঘর রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। অনেক স্থানে কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তীতে পড়েছে এসব এলাকার লোকজন। অপরিকল্পিত নগরায়ন কৃষি জমি, খাল বিল, নদীনালা বালু দিয়ে ভরাট করে নতুন আবাসন নির্মাণ, শিল্পকারখানা তৈরী করার ফলে ছোট ছোট খাল ও নদীগুলো দখল করে ভরাট করার ফলে পানি সরতে না পেরে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া সোনারগাঁ উপজেলা ব্যস্ততম সড়কগুলোতে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে রাস্তাঘাট ও বাড়িঘরগুলো তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে শিল্পাঞ্চল কাঁচপুর, পিরোজপুর ইউনিয়ন ও পৌরবাসীকে সবচে বেশী দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরে জমিনে কাঁচপুর, পিরোজপুর ও পৌরসভার ঘনবসতিপূর্ন বিভিন্ন এলাকার ঘুরে দেখা গেছে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বাড়ির আশপাশের পুকুর ও জলাশয়গুলো ভরে গিয়ে পানি বাড়িতে হাটু সমান পানি জমে গেছে। সেই পানি আবার অনেকের বসত ঘরেও প্রবেশ করেছে। এ কারণে অনেকে ঘরবাড়ি থেকে বেরুতে পারছেনা ঠিক মতো রান্না করতে পারছেনা আবার অনেকে এলাকায় বিশুদ্ধ পানিরও অভাব দেখা দিয়েছে। এছাড়া গৃহপালিত গরু, ছাগর, হাস ও মুরগীগুলোও রাখতে হচ্ছে কোন উচু জায়গায়।
এ ব্যাপারে পৌরসভার চিলারবাগ গ্রামের হুমায়ন প্রধান জানান, পরিকল্পনা ছাড়া পুকুর ও জলাশয়গুলো ভরাট করার কারণে বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় পানিবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এছাড়া পৌরসভার প্রধান সড়কে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তাঘাটগুলো ডুবে গেছে।
এ ব্যাপারে ড. নুরে আলম জানান, জনগনের সচেতনায় অভাব ও প্রশাসনের কোন তদারকি না থাকার কারণে মানুষ যে যার ইচ্ছা মতো খাল ও নদীগুলো দখল করে শিল্প-কারখানা তৈরী করছে। পুকুর ও জলাশয়গুলো ভরাট করে নতুন বাড়িঘর ও আবাসন তৈরী করছে এতে করে বৃষ্টির পানি সরতে পারছেনা। এক দেখা যেত সময় যতই বৃষ্টি হতো সে পানিগুলো পুকুর জলাশয় কিংবা খাল হয়ে নদীতে চলে যেত কিন্তু এখন সোনারগাঁয়ের অনেক বড় বড় খালগুলো ব্যক্তির দখলে চলে গেছে। সেখানে শিল্প কারখানা ও আবাসন নির্মান করেছে ফলে যত দিন যাচ্ছে সমস্যা ততই ঘনিভুত হচ্ছে। এ থেকে সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে দখল হওয়া খাল ও নদীগুলো দখলমুক্ত করতে হবে। জনবসিতপূন এলাকায় ড্রেনেজের ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা আছে সেগুলোকে পরিস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন কোন পুকুর জলাশয় ভরাটের ক্ষেত্রে প্রশাসের হস্তক্ষেপ থাকতে হবে ও খালবিলগুলো যাতে নতুন করে দখল না হয় সেদিকে প্রশাসনকে লাখ্য রাখতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন