বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মাদরাসায় জঙ্গি-সন্ত্রাসী তৈরি হয় না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

হেফাজত আমির আল্লামা শফির সাথে সাক্ষাত

মাদরাসায় জঙ্গি-সন্ত্রাসী তৈরি হয় না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মাদরাসায় দ্বীনের চর্চা হয় সেখানে জঙ্গি-সন্ত্রাসী তৈরী হয় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আল্লাহর রহমত রয়েছে বলেই তিনি আবারও নির্বাচনে জিতেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এ নেতার কাছেই আজকের বাংলাদেশ নিরাপদ।
তিনি গতকাল শুক্রবার বাদে জুমা উত্তর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নানুপুর জামিয়া ওবাইদিয়া মাদরাসার দু’দিনব্যাপী ইসলামি মহাসম্মেলনের শেষ দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। পরে তিনি হাটহাজারী মাদরাসায় মাদরাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সাথে সাক্ষাত করেন।
ইসলামি মহাসম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ। পৃথিবীর বহুদেশ ঘুরেছি- কিন্তু মক্কা-মদিনা ব্যতিত আমাদের দেশের মতো এ রকম ধর্মপ্রাণ আল্লাহ এবং মসজিদমুখী মানুষ কোথাও দেখিনি। আমরা মনে করি- আল্লাহ তা’য়ালার খাস রহমত আমাদের দেশের ওপর রয়েছে। অনেক ধরণের দুর্যোগ, বিপদ, অত্যাচার এখানে হয়েছে, অনেকে অনেক ধরণের ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিল। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন। আমি মনে করি- এ ধরণের মাহফিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমাদের চেতনাকে আরো বেশী পরিশুদ্ধ এবং শানিত করার সুযোগ তৈরী হয়।
তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন আল্লাহওয়ালা মানুষ, তিনি ফজরের নামাজ আদায় শেষে কোরআন তেলাওয়াত করে তার কাজ শুরু করেন। এ নেতার কাছে আজকের বাংলাদেশ নিরাপদ, আল্লাহ’র রহমত তার ওপর রয়েছে বলেই তিনি আবারো নির্বাচনে জিতেছেন। আল্লাহর খাস রহমত তার উপর রয়েছে বলেই তিনি কওমী মাদরাসার খেদমত করতে পেরেছেন। লাখো কওমী মাদরাসা ছাত্রদের স্বীকৃতি ছিল না; এখন তারা স্বীকৃতি পেয়েছে। সারা বিশ্বে তাদের সনদের মূল্যায়ন হবে।
তিনি প্রতিটি উপজেলায় একটি সুন্দর মসজিদ করে দিচ্ছেন। ইসলামি আরবি বিশ^বিদ্যালয় তিনি তৈরী করেছেন। যাতে করে আমাদের ধর্ম চর্চা এবং দ্বীনের কাজ অব্যাহত গতিতে চলে। আমরা সবাই বিশ্বাস করি- যেখানে দ্বীনের কাজ, ধর্মের কথা হয় এবং নবীজির কথা হয়, সেখানে জঙ্গি-সন্ত্রাস হয় না। সেখানে সবাই খাঁটি মুসলমান হবার চেষ্টা করে। সেজন্য আমি সবখানে দাঁড়িয়ে বলি- অনেকে এই দেশকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদী রাজ্য বানাতে চেয়েছিল, এ যে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছিল, হত্যা-খুনের রাজনীতি করতে চেয়েছিল, মহান রাব্বুল আলামীন আমাদের রক্ষা করেছেন।
মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা শাহ মুহাম্মদ ছালাহ উদ্দীন নানুপুরীর সভাপতিত্বে দু’দিনব্যাপী এ মহাসম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মুফতি মাহমুদ হাসান, মাওলানা ইয়াহিয়া মাহমুদ, মাওলানা মাহমুদুল হাসান মমতাজী, মাওলানা ফরিদ উদ্দীন আল মোবারক, ড. মাওলানা মোস্তাক আহমদ, ড. আ ফ ম খালেদ হোসাইন, মুফতি শহীদুল্লাহ ইব্রাহিম ওজালজী, মাওলানা কুতুব উদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা শিহাব উদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মানফুজুর রহমান, মাওলানা মোজাহেরুল ইসলাম প্রমুখ।
অন্যান্যদের মধ্যে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগ নেতা এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, এমআর আজিম, ফটিকছড়ি পৌর মেয়র মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দুপুর সাড়ে ১২টায় র‌্যাবের একটি হেলিকপ্টার যোগে ফটিকছড়ির লায়লা-কবির কলেজ মাঠে আসেন। সেখান থেকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক এমপি ও রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরীর কবর জেয়ারত করেন। পরে নানুপুর মাদরাসার বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলনে লাখো মুসল্লীর সাথে মাদরাসা ময়দানে সালাতে জুমা আদায় করেন। বিকেলে ৫টায় হেলিকপ্টার যোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
হেফাজতের আমীরের সাথে সাক্ষাত
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসদুজ্জামান খাঁন কামাল হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার মহাপরিচালক ও হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। মন্ত্রী বেলা ৩ টা ২৪ মিনিটে আল্লামা শফির কার্যালয়ে এসে পৌঁছেন। তিনি ৩ টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত দীর্ঘ ২৮ মিনিট তার সাথে সময় কাটান। এ সময় মন্ত্রী তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। মন্ত্রী মূলত আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কাছে দোয়া চাইতে এসেছেন বলে সাক্ষাত শেষে বের হয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান।
তিনি দেশের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধির, এবং প্রধানমন্ত্রীর জন্য হুজুরের কাছে দোয়া চেয়েছেন এবং বড় হুজুর দোয়া করেছেন বলে জানিয়েছেন। তাছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে বিশ্ব ইজতেমা সুসম্পন্ন করার জন্য ও দোয়া করেছেন। এসময় আবু রেজা মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন নদভী এমপি, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসবি) মহিউদ্দিন সোহেল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদুল্লাহ রেজা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমীন, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা শেখ আহম্মদ, মঈনুদ্দীন রুহি, মাওলানা ওমর ফারুক, মাওলানা ইবরাহিম সিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মাদরাসায় মন্ত্রীর আগমনের কথা শুনে জুমার নামাযের পর থেকে গণমাধ্যমকর্মীরা মাদরাাসায় অবস্থান করেন। তবে মন্ত্রীর সাথে আল্লামা শফির সাক্ষাতের সময় কোন গণমাধ্যমকর্মীকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammed Shah Alam Khan ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৯:১৯ এএম says : 0
এই সংবাদ পাঠ করে আমি ব্যাক্তিগতভাবে খুবই আনন্দিত হয়েছি। আল্লাআ শফি সাহেব বাংলাদেশের একজন আধ্যাত্মিক জগতের শ্রেষ্টত্ম ব্যাক্তিত্ব। ওনার কাছে থেকে দোয়া ও আধ্যাত্মিক সাহায্য চাওয়াটাই বড় কথা, এটাই ইসলামের একটা সুন্দর প্রথা। শুধু দোয়া চাইলেই হবে না সেইভাবে চলতেও হবে। কাজেই আমার বিশ্বাস আল্লাহ্ বর্তমান সরকারের সাথে থাকবেন ইনশ’আল্লাহ। আমিন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন