বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রে গণতন্ত্রমণা কোন রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:১৮ পিএম

ছবি- মতিউর সেন্টু।


প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রে গণতন্ত্রমণা, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণরত কোন রাজনৈতিক দলই অংশগ্রহণ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, গতকাল গণভবনে নির্বাচন পরবর্তী ‘২৯ ডিসেম্বর রাতের ভোটের’ প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রে শেখ হাসিনার সদাহাস্য চেহারা ও সরকারের আনুকুল্য পাওয়া উৎফুল্ল উচ্ছিষ্ট রাজনীতিবিদ চেহারা দেখে মনে হয়েছিল তারা আনন্দে মাতোয়ারা। মহাভোট ডাকাতির পর অনুশোচনাহীন সরকারের চা-চক্রের এই আনন্দায়োজন দেখে মনে হয়েছে এটি বিবেকহীন আনন্দ। এই আনন্দ একটি সামাজিক পাপ। গোটা জাতির সাথে নির্লজ্জ মহাতামাশার নির্বাচনের পর উল্লসিত সরকারের চা-চক্রের আয়োজন বিবেকহীন আনন্দেরই সমতুল্য। জনগণের সাথে প্রতারণাকারী সরকারের জয়ল্লোসের চা-চক্র। যারা জনগণের ভোট লুট করেছে তাদের সাথে গণতন্ত্রপ্রেমী কোন ব্যক্তি, দল, গোষ্ঠী কেউই সেই লুটের আনন্দের পাপে অংশগ্রহণ করেনি। এটাই জনগণের বিজয়।
রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশ এখন গণতন্ত্রশুণ্য। গণতন্ত্রহীনতায় বাংলাদেশের জনগণ এখন রাষ্ট্রদাসত্ব করছে। রাষ্ট্র এখন এক ব্যক্তি ও এক দলের কব্জায়। একদলীয় শাসনে রাষ্ট্র জনগণকে দাসে পরিণত করে। গণতন্ত্রক মৃত্যু যন্ত্রণায় ধুকতে ধুকতে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করে। বর্তমানেও সেই দশা বিরাজমান। এক ব্যক্তির একদলীয় শাসন নিরাপদ করতেই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকানো হয়েছে। কোন কারণ ছাড়াই হাজার হাজার মিথ্যা মামলায় বিএনপি’র লাখ লাখ নেতাকর্মীকে জড়ানো হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গায়েবী মামলায় এমন মানুষদের জড়ানো হয়েছে যা শুধু অদ্ভুতই নয়, এটি নিষ্ঠুর তামাশা। কবরে শায়িত লাশ, পক্ষঘাতগ্রস্ত রোগী, হজ¦ব্রত পালনরত ব্যক্তি, বহুদিন ধরে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে নজীরবিহীনভাবে মামলার আসামী করা হয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধী তারা মিয়া, টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে শামসুল হক যিনি মস্তিস্কে রক্তক্ষরণের কারণে অচল এবং তিনি কানেও শোনেন না; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বর্গাচাষী মিলন মিয়া, ঢাকার আতর বিক্রেতা হাতকাটা ইউসুফসহ এধরণের অসংখ্য হতদরিদ্র ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদেরকে। এরা নাকি রাষ্ট্রের চোখে অপরাধী। যে রাষ্ট্র এতো বিবেকহীন, মনুষ্যত্বহীন ও নিষ্ঠুর রক্তপিপাসু কেবলমাত্র সেই রাষ্ট্রেই উল্লিখিত ব্যক্তিদের অপরাধী বানানো হয়। সুতরাং সেই রাষ্ট্র পরিচালকদের অর্থাৎ অবৈধ সরকারের পতনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা ন্যায়সঙ্গত।
ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, মহাভোট ডাকাতির নির্বাচনের পর ভুয়া ভোটের সরকারের অনুগত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচনের ঘোষনা দিয়েছে। দুর্দশাগ্রস্ত গণতন্ত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কতটুকু সুষ্ঠূ নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারে এ নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ষ্ট্যান্ডার্ড’ বিচার করা হচ্ছে, জ্ঞানান্বেষণ বা সৃজনশীলতার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে নয়, বরং চা-সমুচা ও আলুর চপ এর মুল্যে।
তিনি বলেন, শেখার স্বাধীনতা, গবেষণার স্বাধীনতার মাধ্যমে সত্যের সন্ধান কখনোই নিশ্চিত হবে না, যদি সেখানে সহাবস্থান ও পরমতসহিষ্ণুতার স্থান না থাকে। মুক্তকন্ঠে বিতর্কের স্বাধীনতা না থাকে। ক্যাম্পাসগুলো একদলীয় দু:শাসনের প্রবল প্রতাপের অংশীদার বলেই এখন শিক্ষার উৎকর্ষতার চেয়ে চা-সিঙ্গারা-চপ-এর উৎকর্ষতার বাণী শুনতে পাওয়া যায়। সুতরাং ডাকসু নির্বাচনে সব ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত না হলে ডাকসু নির্বাচন হবে মহাভোট ডাকাতির নির্বাচনের ধারাবাহিকতার আরেকটি সংযোজন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন