শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অভিনেত্রীদের মনোনয়ন নিয়ে ক্ষোভ আ.লীগে

সংরক্ষিত মহিলা আসনে ভোট ৪ মার্চ

ইয়াছিন রানা | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনোনয়ন নিয়ে অভিনেত্রী মনোনয়নপ্রত্যাশীদের আগমনে নানামুখী প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে আওয়ামী লীগের ভিতরে। দলের নীতি-নির্ধারণী নেতাদের মাধ্যমে অভিনেত্রীরা দলীয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করলেও তাদের মানতে পারছেন না দলেরই নারী নেত্রীরা। আওয়ামী লীগ, মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগের নারী নেত্রীদের পাশাপাশি দলের একটি অংশের নেতাদের মাঝেও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তাদের অভিযোগ তাদের প্রতি দলের মূল্যয়নের সময়ে সুযোগ সুবিধায় ভাগ বসাতে এসেছেন এই অভিনেত্রী শিল্পীরা। দলের বিপদে আপদে তারা ছিলেন না, ভবিষ্যতেও থাকবে না। পাঁচ তারকা হোটেলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে তারা আওয়ামী লীগের সাঁজছেন। ত্যাগী নেত্রীদের মূল্যায়ন না করে এক শ্রেণীর নেতারা তাদের উপরে উঠাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে ঠিক অপর দিকে দলের একটি অংশ আবার অভিনেত্রী মনোনয়নপ্রত্যাশীদের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন। দলের এ নানামুখী প্রতিক্রিয়ার অবসান হতে যাচ্ছে আগামী ৪ মার্চ সংরক্ষিত আসনের ভোটের মাধ্যমে।
নির্বাচন কশিনের তফসিল অনুযায়ী আগামী, ১১ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে। মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৬ ফেব্রুয়ারি এবং ৪ মার্চ ভোট। নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাওয়া আসন অনুপাতে আওয়ামী লীগ ৪৩টি, জাতীয় পার্টি চারটি, বিএনপি একটি, ওয়ার্কার্স পার্টি একটি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী একটি সংরক্ষিত আসন পাবে।
সূত্র জানায়, এর মধ্যেই কারা সংরক্ষিত আসনের এমপি হবেন তা মোটামুটি নির্ধারণ করা হয়ে গেছে এবং নির্বাচনে ভোটের আগেই কারা সংরক্ষিত আসনের এমপি হবেন নিশ্চিত হওয়া যাবে ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায়। দল থেকে যারা মনোনয়ন পাবেন তারাই নিশ্চিন্তে হয়ে যাবেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য। যদি মনোনয়নপত্রে কোন ভুল না করেন।
তবে আওয়ামী লীগে মৌসুমী পাখির মত আগত অভিনেত্রীদের কোন ভাবেই সহ্য করতে পারছেন না দলের নেত্রীরা। বিভিন্ন স্থানে সুযোগ পেলেই এ নিয়ে কথা বলছেন। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শো তে অভিনেত্রী তানভীন সুইটিকে প্রায় এক হাত নিলেন যুব মহিলা লীগের এক নেত্রী। ফোনে দর্শক হিসেবে তিনি অভিযোগ করেন বিএনপির অত্যাচার নির্যাতনের সময় কোথায় ছিলেন তানভীন সুইটিরা।
প্রায় সকল নেত্রীদের দাবি, দলের বিপদে আপদে কাজ করেছেন তারা, সহ্য করেছেন নির্যাতন। আর সুযোগ সুবিধা নেবেন অভিনেত্রীরা। দলের দুঃসময়ে অভিনেত্রীদের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া অভিনেত্রী মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অনেকেই এক সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। হঠাৎ করে বিভিন্ন পাঁচ তারাকা হোটেলের কিছু অনুষ্ঠানে হাজির হয়েই আওয়ামী লীগের ত্যাগী কর্মী সাঁজছেন তারা। দলের জন্য অনেক কিছু করে ফেলেছেন এবং দীর্ঘ দিন ধরে আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ বলে অভিনয় করছেন।
এবার সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন, সারাহ বেগম কবরী, মৌসুমী, সুজাতা, ফালগুনী হামিদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, অঞ্জনা, দিলারা, অরুণা বিশ্বাস, শমী কায়সার, রোকেয়া প্রাচী, শাহনূর, অপু বিশ্বাস, তারিন ও জ্যোতিকা জ্যোতিসহ অর্ধশতাধিক তারকা।
অভিনেত্রীদের আওয়ামী লীগের এমপি হতে চাওয়ার বিষয়ে বেশ প্রতিবাদী ভূমিকা রেখেছেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের গবেষক ও আজ সারাবেলার সম্পাদক জব্বার হোসেন। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, যেসব অভিনেত্রী শিল্পাঙ্গনে আওয়ামী লীগের হয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তাদের নিয়ে তো কোন সমস্যা নেই। দলের নেত্রীরাও তাদের বিষয়ে কোন কথা বলছেন না। আমরা কথা বলছি তাদের নিয়ে যাদের এক সময় দেখেছি বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে; দীর্ঘ সময় বিএনপির মন মানসিকতা লালন করতো তাদের নিয়ে। এসব অভিনেত্রীরা কেন আওয়ামী লীগের এমপি হতে আসবে। আমাদের প্রতিবাদ এখানেই যে যারা দলের কাজ করেছেন তারাই দলীয় এমপির স্থানে আসবে। বিপদে যারা ছিল, সুসময়ে তাদের মূল্যায়ন করতে হবে।
তবে এসব অভিনয় শিল্পীদের পক্ষও অবলম্বন করছেন দলের প্রভাবশালী নেতারা। তাদের দাবি, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে তারকা শিল্পীরা দলের প্রচারে কাজ করেছেন। তখন তাদের অভিনয় করা বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার আগে তো কেউ প্রতিবাদ করেনি, কেউ বলেও নি যে তারকা শিল্পীদের দলে দরকার নেই। হঠাৎ করে দলের অনেকেই ত্যাগী সাঁজছেন। আর সবাই যে মাঠে মিছিল-মিটিং এ ভূমিকা রাখবে তা নয়। সংস্কৃতি অঙ্গনেও দলকে শক্তিশালী করতে ভূমিকা পালন করছেন এ শিল্পীরা।
এ সব বিষয়ে কথা হয় আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করে তিনি বলতে চান, বিষয়টি শুধু শুধুই বিতর্কের মধ্যে চলে গেছে। ৪৩ জন সংরক্ষিত এমপির মধ্যে সর্বোচ্চ দুইজনকে মনোনয়ন দেয়া হবে, আর বেশি দিলেই না হয় ৫জন। এর বেশি তো আর না। আর এ বিষয় নিয়ে যাদের কথা বলতে দেখলাম তারা তো নিজেরাও এমপি হবার আশাও করে না। শুধু শুধুই বিষয়টা ঘোলা করছে। যারা হবার তারা এমনিতেই হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সঠিক ব্যক্তিদেরই মূল্যায়ন করবেন, এ বিষয়ে আস্থা রাখতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Md Khurshed Alam ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫৮ এএম says : 0
লক্ষীপুর চাঁদপুর নুরজাহান বেগম (মুক্তা)আপাকে চাই।
Total Reply(0)
Akbar Ahmed ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫৮ এএম says : 0
মৌলভীবাজার সৈয়দা সায়রা মহসীন কে এমপি, করে দিলে ভালো হয় ।
Total Reply(0)
গোলাম নওশাদ ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫৮ এএম says : 0
প্রার্থীদের জন্য শুভকামনা রইলো। বিশেষ করে বাংলাদেশের ২৯৮ নং সংসদীয় আসনের সংরক্ষিত মহিলা এমপি হিসেবে খাগড়াছড়ি সদরের নিগার সুলতানা আন্টি কে দেখতে চাই। আন্টি আপনার জন্যও শুভকামনা রইলো। আপনি আওয়ামী লীগের মহিলা নেতৃত্বের প্রাণ।
Total Reply(0)
Bodiul Alam Chowdhurey ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
এমপি হওয়ার সুজুগ দিন অবৈধ সন্তান নিন।
Total Reply(0)
Hamidul Hoque Feni ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
ধৈয্য ধরুন বাংলাদেশে সবই সম্বব শেখ হাছিনাকে খুশি করার চেষ্টা চালিয়ে যান
Total Reply(0)
Ahmed Shakil ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
এতোদিন সংসদে শুধু গান শোনা গেছে এখন নাচও দেখা যাবে ভোট ডাকাত অবইধ মন্ত্রী সাংসদদের বিনোদন দিতে হবে যে
Total Reply(0)
Zannat Ahmed Bhuiyan ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
যেখানে ইসলাম বলে দেশ চালাতে ইসলামিক সব গেন থাকতে হবে আর এই দেশে নাছনেআলি ধইরা আনতাছে।
Total Reply(0)
নুরুল আবছার ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
এরা হলো সুসময়ের মাছি। বিনোদন ব্যবসায় ধস নেমেছে অন্যদিকে ভোট ছাড়া এমপি হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে, পেশায় লাভজনক। তাইতো তাদের আনাগোনা।
Total Reply(0)
রিদওয়ান বিবেক ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
এই দুধের মাছিরাই দলে বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে এবং একটা পর্যায়ে দলকে ধ্বংস করে দেবে। ওদের এখনই বিতাড়িত করা উচিত।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন