শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবৈধ যান

কুমিল্লা থেকে সাদিক মামুন | প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৮৫ কিলোমিটার এলাকা অবৈধ যানবাহনে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। মহাসড়কের এ অংশে চলাচলে রুটপারমিট ও ফিটনেসবিহীন ‘দরজাখোলা’ মাইক্রোবাসের দাপটে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে মহাসড়কে দুই শতাধিক অবৈধ মাইক্রোবাস দাবড়িয়ে চলার ঘটনায় ঘটছে দুর্ঘটনা। বিভিন্ন সেক্টরে চাঁদা দিয়ে চলাচল নিশ্চিত করে মহাসড়কে দাপুটে হয়ে উঠেছে ‘দরজাখোলা’ মাইক্রোবাস নামের এসব নিষিদ্ধ পরিবহন। কেবল অবৈধ মাইক্রোবাসই নয়, সিএনজি অটোরিকশা, ইজিবাইক, লেগুনা, ভটভটির চলাচলও দেখা মেলে মহাসড়কে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মহাসড়কের দাউদকান্দি, ইলিয়টগঞ্জ, কুটম্বপুর, মাধাইয়া, চান্দিনা, নিমসার, ক্যান্টনমেন্ট, পদুয়ারবাজার, সোয়াগাজী, মিয়ারবাজার, জগন্নাথদিঘী, চৌদ্দগ্রাম, নানকরা, মোহাম্মদআলী এলাকা পর্যন্ত দুই শতাধিক ফিটনেসবিহীন ‘দরজাখোলা’ মাইক্রোবাসের প্রায় ১৫টি অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে।
ভোর থেকে রাত অব্দি মহাসড়কের এসব স্ট্যান্ডে মাইক্রোবাসগুলো যাত্রী উঠা নামা করে থাকে। এসব স্ট্যান্ড থেকে টাকা উঠানোর জন্য রয়েছে অন্তত ৫০জন লাইনম্যান। দুই শতাধিক ‘দরজাখোলা’ মাইক্রোবাস মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে দাবড়িয়ে চলাচল করছে। মহাসড়কে বিআরটিএ’র নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বড় বড় যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে অবৈধ এসব ‘দরজাখোলা’ মাইক্রোবাস। অভিযোগ রয়েছে হাইওয়ে পুলিশ, সংশ্লিষ্ট পরিবহন শ্রমিক গ্রুপ ম্যানেজ করে এসব ‘দরজাখোলা’ মাইক্রোবাস মহাসড়কে চলাচল করছে। কেবল তাই নয়, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে থানা ও হাইওয়ে পুলিশের চোখের সামনে দিয়েই যাত্রী ওঠানামা করে নির্বিঘ্নে চলাচল করছে লেগুনা, মারুতিসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ যানবাহন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এধরণের ‘দরজাখোলা’ মাইক্রোবাসের বেশিরভাগই সড়কে চলাচল অনুপোযোগী। নেই ফিটনেস সার্টিফিকেট, ইনস্যুরেন্স এবং রুট পারমিটের বৈধতাও নেই। এধরণের যানবাহন চলাচলে যাতে আইনি কোন সমস্যায় পড়তে না এজন্য সমিতিও গড়ে তোলা হয়েছে। সমিতির মাধ্যমে বিভিন্ন সেক্টরে চাঁদাও দেয়া হয় এবং সবকিছু ম্যানেজ করা হয়। অবৈধ ‘দরজাখোলা’ মাইক্রোবাসের বেশ ক’জন মালিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মহাসড়ক থেকে সিএনজি অটোরিকশা তুলে দেয়ার পর অনেকেই পুরাতন মাইক্রোবাস যাত্রী পরিবহনের সুবিধা করে মহাসড়কে নামিয়েছেন। প্রায় সময় বিআরটিএ এবং হাইওয়ে পুলিশেরও অভিযানে এধরণের মাইক্রোবাস আটক হয়ে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন সেক্টরে চাঁদা দেয়ার পরও আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলাচল করে এসব মাইক্রোবাস।
কুমিল্লা অঞ্চলের হাইওয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. নজরুল ইসলাম জানান, মহাসড়কে সবধরণের অবৈধ যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এরপরও হাইওয়েতে কর্তব্যরত পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চুরি করেই অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। অবৈধ, নিষিদ্ধ ও ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধে হাইওয়ে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে বেশকিছু মাইক্রোবাস দরজাখোলা অবস্থায় যাত্রী নিয়ে মহাসড়কে চলাচল করে থাকে। যা ঝুঁকিপূর্ণ এবং এসব যানবাহনে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি থাকে। এগুলোর ব্যাপারেও হাইওয়ে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথারিটি- বিআরটিএ কুমিল্লা সার্কেলের সহকারি পরিচালক আলী আশ্রাফ সিদ্দিকী জানান, দরজাখোলা মাইক্রোবাসগুলোর বেশিরভাগই মহাসড়কে চলাচল অনুপোযোগী। এগুলোর ফিটনেস, রুটপারমিট নেই। আমরা প্রতিমাসেই অভিযান পরিচালনা করে এধরণের মাইক্রোবাসসহ অবৈধ সকল যানবাহন আটক করে ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়। আবার কোনটির জরিমানা করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন