মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্যে খুলছে দুয়ার

প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা

হাসান সোহেল | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৫ এএম

এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ; এগিয়ে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্ব ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিশ্বের দেশে দেশে শ্রম বাজারের পাশাপাশি বাংলাদেশের উৎপাদিত পণ্যের বাজার খুলে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সউদী আরব। প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় দীর্ঘ চার বছর বন্ধ থাকার পর আমিরাতের শ্রমবাজার খুলে যাচ্ছে। বড় বিনিয়োগেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে আবুধাবিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাথে মত বিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আরব আমিরাত সফর সফল। বিনিয়োগে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। এদিকে সউদী সরকারও বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। চীন, আমেরিকা, ইউরোপের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়িয়ে দিচ্ছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে উৎপাদিত ও তৈরি নতুন নতুন পণ্যের বাজার সৃষ্টির ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক প্রচেস্টায় কার্যত বাংলাদেশের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাচ্ছে। 

বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দেশের কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের বিদেশে বাজার সৃষ্টিসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিজেই কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছেন শেখ হাসিনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধা স্থাগিত, ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিএসপি নিয়ে সংকটের কারণে কয়েক মাস আগে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের দেশে দেশে বাংলাদেশী পণ্যের বিকল্প বাজার খোঁজার উদ্যোগ নেন। একাগ্র দেশপ্রেম ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তিনি সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। সউদীসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিনিয়োগকারীরা এখন নতুন নতুন বিনিয়োগে বাংলাদেশ মুখী হয়ে পড়ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট, দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এছাড়াও সে দেশের আরো কয়েকজন মন্ত্রী ও শিল্পপতির সঙ্গে বৈঠক করেন। কয়েক মাস আগে তিনি সউদী আরব সফরে গিয়ে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সউদের সাথে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকের ফসল হচ্ছে বাংলাদেশে মধ্যপ্রচ্যের প্রভাবশালী দেশগুলোর নতুন নতুন বিনিয়োগের উদ্যোগ।
এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার পর এবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে বড় অঙ্কের বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলছে। শ্রমশক্তির পাশাপাশি আরব বিশ্বে পণ্য ও সেবা রফতানি বাড়ানোর সুযোগ চেয়েছে বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় টানা তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানী হয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গতকাল মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত আমিরাত সফর করেন। আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশকে বিনিয়োগের নতুন গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। পাশাপাশি শ্রমবাজার নিয়ে বাংলাদেশের আগ্রহকেও গুরুত্বের সঙ্গে তারা বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে। এদিকে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সউদী প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসছে। ওই সফরে ত্রিশটিরও বেশি প্রকল্পে কয়েকশ কোটি ডলার সউদী বিনিয়োগ আশা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সর্ম্পক দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের অর্থনীতিতে অভাবনীয় পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ হিসেবে তারা বলেন, রেমিটেন্স আয়ের বৃহৎ অংশই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে আসে। দীর্ঘ চার বছর আমিরাতে বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ বন্ধ বন্ধ থাকার পর শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়া বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সাফল্য। জনশক্তি রফতানি শুরু হলে এর মাধ্যমে রেমিটেন্স আয়ের বড় সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। এছাড়া বাংলাদেশের হালাল পণ্য বিশেষ করে মাছ, শাক-সবজি ও গরু-খাসির গোশত নিতে চায় সউদী আরব। নতুন বাজার অনুসন্ধান ও নতুন নতুন পণ্য রফতানিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বড় ফ্যাক্টর হয়ে ওঠার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকান্ড যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে; বিদেশী বিনিয়োগ অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অনেক প্রভাবশালী দেশকে ছাড়িয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে দেশটির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শক্তিশালীকরণের অংশ হিসেবে চারটি স্মারক সই করা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিদ্যুৎ খাতে এই সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী সুলতান আল মনসুরির নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ১৫ সদস্যের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল আবুধাবির সেন্ট রেগিজ হোটেলে সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের পর তাঁর উপস্থিতিতে এই স্মারকগুলো সাক্ষরিত হয়।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমার মনে হচ্ছে- এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও আমিরাতের মধ্যে ব্যবসার একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা আমরা আগে কখনো দেখিনি।
সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে রয়েছে- গভর্নমেন্ট অব দুবাইয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারি- বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) চুক্তি। শহীদুল হক বলেন, এর মূল ফোকাস পোর্ট ও শিল্প পার্ক। কারণ- ডিপি ওয়ার্ল্ড বলছে, তারা যেখানে পোর্ট তৈরি করে তারা সেখানে পোর্টের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, শিল্প পার্কও তৈরি করে।
আরেকটি সমঝোতা হয়েছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির। এ বিষয়ে শহীদুল হক বলেন, এর মেইন ফোকাস- বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে এলএনজি সরবরাহ। পায়রাতে ভূমিভিত্তিক এলএনজি রিসিভিং সেন্টার করা। পায়রাতে তারা ৩০০ একর জমি চেয়েছেন, যেখানে এটি করবেন।
তৃতীয় সমঝোতা স্মারকের এর আওতায় দুই ধাপে ৮০০ থেকে ১০০০ মেগাওয়াটের এলএনজি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ এবং ১০০ মেগাওয়াটের আরেকটি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। চতুর্থ চুক্তি হয়েছে মাতারবাড়িতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে।
সূত্র মতে, অর্থনৈতিক উন্নয়নে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নজর এখন বাংলাদেশের। এ লক্ষ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যপ্রাচ্য সফর করছেন। এবার বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সংক্রান্ত বেশকিছু বিষয়ের অগ্রগতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে সউদী আরব, কাতার ও আমিরাতের বিনিয়োগ চাওয়া হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশের ত্রিশটিরও বেশি প্রকল্পে কয়েকশ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছে সউদী আরব। যার মধ্যে লালমনিরহাট জেলায় একটি বিমান মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র নির্মানও রয়েছে বলে জানা গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে এ পদক্ষেপ নিচ্ছে সউদী আরব। আগামী মাসে দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের দুই মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে। এ সফরে কয়েকশ কোটি ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে সউদী প্রতিনিধি দলটির। গতবছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সউদী আরব সফরের পর এ সংক্রান্ত অগ্রগতি হয়। বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপটমেন্ট অথোরিটি (বিডা) কর্মকর্তারা বলেন, তেল সমৃদ্ধ দেশটি বাংলাদেশের বাণিজ্যিকভাবে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলোতে বিনিয়োগ করতে চায়। যার মধ্যে তেল, গ্যাস, জ্বালানি, সার, সিমেন্ট, সৌরশক্তি এবং ভৌত কাঠামো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। গত মাসে সউদী আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সউদী বিনিয়োগকারীদের পছন্দের ক্ষেত্রগুলোর তালিকা পাঠান।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, সউদী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বিনিয়োগের জন্য সম্ভাব্য ৩০ থেকে ৩৫ টি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে কি পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হতে পারে তা এ মুহুর্তে বলা কঠিন। প্রকল্পগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত সউদী প্রতিনিধিদলের বৈঠকের পরই জানা যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন। প্রতিনিধিদলের সফরে সউদী সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী এবং অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীসহ একটি বড় সউদী প্রতিনিধি ৫-৬ মার্চ দেশে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই দলে সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানও বাংলাদেশ সফর করতে পারেন বলে জানিয়েছেন আমিনুল।
সূত্র মতে, গত বছর অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকালে এই উন্নয়ন ঘটে। রিয়াদে তিনি সউদী ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বাংলাদেশে বাণিজ্য সুযোগ ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ওই সময় শেখ হাসিনা সউদী বাদশাহ প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সউদের সাথেও সাক্ষাৎ করেন, এ সময় সউদী বাদশাহ বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বিডার কর্মকর্তারা জানান, সউদী প্রতিনিধি দলটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মাল্টি বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করবে।
সূত্র মতে, রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠানো প্রকল্পের বিস্তারিত প্রস্তাবনায় দেখা যায়, উপসাগরীয় দেশটির সরকার ও বোয়িং কোম্পানির যৌথ মালিকানাধীন সউদী আরবের একমাত্র বিমান মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র ‘আল সালাম এরোস্পেস’ লালমনিরহাটে একই ধরনের একটি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র নির্মানে আগ্রহী। এ প্রকল্পগুলো ছাড়াও সউদী উদ্যোক্তাদের জন্য দেশের বিভিন্ন উদীয়মান খাত পুঁজিবাজার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, টেলিকমিউনিকেশন, তথ্যপ্রযুক্তি, পেট্রোকেমিক্যাল, ওষুধ শিল্প, জাহাজ নির্মাণ, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ খাত, হালকা প্রকৌশল শিল্প, ব্ল- ইকোনমি, গবেষণা, উন্নয়ন ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন, পানি ও সমুদ্র সম্পদসহ অন্যান্য ভৌত অবকাঠামোগত প্রকল্প; সেবামূলক খাত যেমন- ব্যাংক, অর্থনীতি ও লজিস্টিকস এবং মানবসম্পদ খাতেও বিনিয়োগের জন্য বড় অঙ্কের বিনিয়োগ সহায়তা চাইবে বাংলাদেশ। এদিকে সম্প্রতি বিশ্বের এক নম্বর তেল উত্তোলনকারী দেশটি বাংলাদেশে তেল পরিশোধনাগার নির্মাণের জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। সউদী আরবের জাতীয় তেল কোম্পানি অ্যারামকো বাংলাদেশে ২০ মিলিয়ন টন ক্ষমতার একটি পরিশোধনাগার নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে।
এর আগে ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) নিবন্ধিত দেশের সর্ববৃহৎ প্রস্তাব ৪৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আসছে বিদেশি পাঁচ প্রতিষ্ঠান। দেশীয় প্রতিষ্ঠান কসমোপলিটন গ্রুপের সহায়তায় সউদী আরবের আসির হাইটেক ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ, দুবাইয়ের রাশিদ আল হাদি জেনারেল ট্রেডিং, বাহরাইনের মিডল ইস্ট ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড, কানাডার টার্কিস কানাডিয়ান আনকা গ্রুপ ও জার্মানির লিন্ডা গ্রুপ এই বিনিয়োগ করবে। কসমোপলিটন গ্রুপ এই বিনিয়োগের দেশীয় পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে। এই বিনিয়োগের অংশ হিসেবে নয়টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে দশ বিলিয়ন ডলার। আগামী বছরের শুরুতে প্রথম ধাপের বিনিয়োগের টাকা দেশে আসবে। এরপরই তথ্যপ্রযুক্তি খাতের এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
সূত্র মতে, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ইতোমধ্যে সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিনিয়োগের প্রধান বাধাগুলো কি তা চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসব বাধা দূর করে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো হবে। এ লক্ষ্যে জাতীয় শিল্পনীতিও বিনিয়োগবান্ধব করা হয়েছে। ভারত, চীন, জাপান ও কোরিয়ার বিনিয়োগ বাড়াতে ওই দেশগুলোর জন্য পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল সংরক্ষণ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসেই সউদী সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী এবং অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। যদিও সেটি পরিবর্তন হয়েছে। আগামী মাসের (মার্চ) প্রথম সপ্তাহে তারা দু’জন বাংলাদেশে আসবেন। এই বিনিয়োগ আসলে এবং মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন। এ ছাড়া, দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নে ৩০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। শুধু তাই নয়, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে আগামী ১৫ বছরে সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। এর ফলে দেশের রপ্তানি আয় বাড়বে অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে প্রায় ১ কোটি মানুষের।
গত শুক্রবার জার্মানিতে সিমেন্স এজির সঙ্গে যৌথ উন্নয়ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি। জার্মানির মিউনিখে হোটেল শেরাটনে সিমেন্স এজির প্রেসিডেন্ট ও সিইও জোয়ে কাইজার সাক্ষাতের সময় এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তির মাধ্যমে পটুয়াখালীর পায়রায় ৩৬শ’ মেগাওয়াট ক্ষমতার এলএনজিভিত্তিক একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করবে জার্মানির সিমেন্স। আমদানি করা এলএনজি নির্ভর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপিত হলে এটিই হবে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ উদ্যোগে ভ্রাতৃ-প্রতীম সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বের নতুন দিগন্তের সৃষ্টি হওয়ায় বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার বাংলাদেশী কর্মী নিতে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বিরাট কূটনৈতিক সাফল্য। আমরা আশা করছি শিগগিরই দেশটিতে জনশক্তি রফতানি শুরু হবে। মধ্যপ্রাচ্যে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপক কূটনৈতিক সফলতাকে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অভাবনীয় পরিবর্তন আসবে বলেও বায়রা মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করেন।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
বছির আহমেদ ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৩:০২ এএম says : 0
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি
Total Reply(1)
আবু আব্দুল্লাহ ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৯:৩২ পিএম says : 4
এই মুহূর্তে যাহা দরকার তাহা হল বাংলাদেশিদের জন্য UAE তে লাইসেন্সের ভিসা চালু করা তার কিন্ত কোনো খবর নাই
আবদুল মতিন ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৩:০২ এএম says : 0
দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে হলে শ্রমবাজারকে সচল রাখতে হবে।
Total Reply(0)
অমিত ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৩:০৪ এএম says : 0
শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা হলেই হবে না। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি অ্যাম্বাসীগুলোকে সুক্রয়ভাবে কাজ করতে হবে।
Total Reply(0)
সাহেদ শফি ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৩:০৫ এএম says : 0
প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় দীর্ঘ চার বছর বন্ধ থাকার পর আমিরাতের শ্রমবাজার খুলে যাচ্ছে। বড় বিনিয়োগেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ------------ খবরটি শুনে ভালো লাগলো।
Total Reply(0)
মিলন ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৩:০৫ এএম says : 0
দীর্ঘ চার বছর আমিরাতে বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ বন্ধ বন্ধ থাকার পর শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়া বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সাফল্য।
Total Reply(0)
রোমান কবির ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৩:০৫ এএম says : 0
জনশক্তি রফতানি শুরু হলে এর মাধ্যমে রেমিটেন্স আয়ের বড় সুযোগ পাবে বাংলাদেশ।
Total Reply(0)
Dr. Faruque Hossain ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৮:৩৯ এএম says : 0
Hasina is the HERO for Bangladesh.
Total Reply(0)
সাইফ ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৯:৪৭ এএম says : 0
মাননীয়া প্রধান মন্ত্রিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, এবং মহান আল্লাহ্‌ অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি। এবং সেই সাথে আমাদের দেশকে কুচক্রিদের হাত থেকে রক্ষার জন্যে আল্লাহ্‌র দরবারে ফরিয়াদ করছি।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন