‘ভোটকেন্দ্রে আনারসের এজেন্ট থাকলে তার হাত কেটে নেওয়া হবে। নৌকার বাইরে কাউকে ভোট দিতে দেওয়া হবে না।’ এমন হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার চারজন ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিদ্র্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম পিন্টু।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এই দাবি জানান।
এ সময় তিনি আশাশুনিতে ভোট গ্রহণের দিন সকালে ব্যালট পাঠানো, সকাল ৮টার পরিবর্তে সকাল ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু ও ঝুঁকিপূর্ণ ৩৮টি কেন্দ্রে সেনাবাহিনী নিয়োগের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম পিন্টু তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৭ মার্চ সকালে আনারস প্রতীকের পোস্টার সাঁটার কারণে উপজেলার খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম তুয়ারডাঙ্গা গ্রামের মঞ্জুর মাহবুবের দোকানে ঢুকে তাকে হেনস্থা করেন। তাকে গাছে উঠিয়ে আনারসের পোস্টার ছিড়ে ফেলতে বাধ্য করেন। চেয়ারম্যান ডালিম ওই সময় মঞ্জুর মাহবুবের বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেন।
অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, আশাশুনিতে নৌকা প্রতীক পাওয়া আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী এবিএম মোস্তাকিম, তার সহযোগী খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম, আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটন, শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল ও প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বিভিন্ন নির্বাচনী সমাবেশে আপত্তিকর ঘোষণা দিচ্ছেন। তারা বলছেন, ভোটে আনারসের এজেন্ট থাকলে হাত কেটে নেওয়া হবে। ভোটকেন্দ্রে আসার দরকার নেই। ভোট আমরা নিজেরা দিয়ে নেবো।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, গত ১৪ মার্চ আনারস প্রতীকের পক্ষে প্রচারে বের হলে কুল্ল্যা মোড়ে তার কর্মী নুর ইসলাম ও ইব্রাহিম খলিলকে মারপিট করে সাদ্দাম, সিদ্দিক, রুবেল, মিকাইল ও বাদশাসহ কয়েকজন। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
একই দিনে তার কর্মী রেজাউল করিম ফুলবাবুসহ কয়েজন চেউটিয়ায় পৌঁছালে চেয়ারম্যান ডালিমসহ সন্ত্রাসীরা তাকে মারধর করে ও মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে দেয়। আহত ফুলবাবুকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার প্রতিপক্ষ নৌকার প্রার্থী প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘন করছেন। এসব বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি রিটার্নিং অফিসারও কোনো ব্যবস্থা নেননি।
পিন্টু বলেন, ভোটে হাঙ্গামা ও কারচুপির আতংকে রয়েছি। কর্মীরা কাজ করতে পারছেন না।
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম পিন্টু চারটি দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে ভোটের আগের দিন নয়, ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পাঠাতে হবে। ভোট গ্রহণ শুরু করতে হবে সকাল ৯টায়। উপজেলার ৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সেনা সদস্য মোতায়েন করতে হবে। একই সাথে চার ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম, আলমগীর আলম লিটন, আবু হেনা সাকিল ও জাকির হোসেন এবং খুন ডাকাতিসহ ৩০টিরও বেশি মামলার আসামি তুয়ারডাঙ্গার আনারুল, ফকরাবাদের সোহরাব, জগদীশ সানা, আঙ্গুর হোসেন, এজদান ও বিজনসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আশাশুনি উপজেলা চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবিএম মোস্তাকিম সাংবাদিকদের বলেন, পিন্টু সাহেব আমার দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি যেসব অভিযোগ তুলেছেন তার একটিও সত্য নয়। হেরে যাবার ভয়ে তিনি এসব বলছেন। হুমকি ও মারপিটের কথা সত্য নয়। আমি ও আমার কর্মীরা আচরণ বিধি লংঘন করছি না। কোনো সন্ত্রাসেও বিশ^াস করি না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন