শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

শিশুরা যেভাবে শেখে

মো. আবুল হাসেম | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

শিশু বেড়ে ওঠার সাথে সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন অভিভাবকরা। শিশুকে শিক্ষকের কাছে পাঠান লেখাপড়া শিখার জন্য। তখন শিশুকে সুশিক্ষা দিয়ে মানুষ গড়ার দায়িত্ব চলে আসে শিক্ষকের কাঁধে। শিক্ষকরা নানা কৌশল অবলম্বন করে শিশুকে লেখাপড়া শেখান। শিশুকে স্বপ্ন দেখিয়ে তার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের দিকে ধাবিত করেন। সেকারণেই বলা হয়, শিক্ষকতা মহান পেশা। তবে অভিভাবদেরও খেয়াল রাখতে হবে, কারণ শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। বেশিরভাগ সময় আপনাদের সাথে থাকে বিদায় আপনাদেরকে অনুকরণ করেই শিশু বড় হয়। আপনাদের সব রকম আচরণ তাদের মনের উপর প্রভাব ফেলে। শিশুকে সব সময় বকুনি দিলে, মারধর করলে বা তাদের সামনে অন্যের সাথে খারাপ আচরণ করলে, নেতিবাচক কথা বললে, অন্যের সমালোচনা করলে, সেও ধীরে ধীরে বড় হয়ে অন্যের সাথে খারাপ আচরণ করবে। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। শিশুদের কোনো বিশেষ বিষয় শেখানোর জন্য বিশেষ সময় রয়েছে, এ অনুভূতিশীল পর্যায়টি সঠিকভাবে চিনে নিয়ে শিশুকে যথাযথ কাজ শিখিয়ে দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বড়দের পরিকল্পনা থাকা দরকার। এমন কাজ শিশুকে শেখাতে হবে, যা সে সহজেই করতে পারে এবং কাজে সফল হয়। সফলতার মধ্যমে কৌতূহল, আগ্রহ, শ্রমের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়। কোনো কাজে সফল হলে শিশু নিজেকে মূল্যবান মনে করে। তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস জন্ম নেয়।
শিশুদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য অভিভাবকদের শিশুদের প্রতি প্রশংসা উৎসাহ বাড়াতে হবে। শিশুর বিশেষ গুণ-প্রবণতা সম্পর্কে প্রথম সচেতন হবেন- মা, বাবা। তাকে বিশেষ গুণটি চর্চার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার দায়িত্বও মা-বাবার। শিশুর চারপাশের পরিবেশে নানান রঙের, নানান ধরনের, বিচিত্র অভিজ্ঞতা অর্জনের সরঞ্জাম থাকা আবশ্যক। বয়স বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে পরিবেশ প্রদান করা সম্ভব হলে শিশু বড়দের নির্দেশ ছাড়াই স্বাধীনভাবে শিখতে পারে। আপনারা শিশুর সাথে নমনীয় আচরণ করুন। কঠোর নিয়মনীতি শিশুর জ্ঞান বৃদ্ধির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। পৃথিবীর সর্ব ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বিরাজমান। শিশুকে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে মেধা অন্বেষণ ও জ্ঞানচর্চার বিকল্প নেই। শিশুর শিক্ষা ও আচরণের পরিবর্তনে বন্ধুর ভূমিকাও কম নয়। সেক্ষেত্রে বন্ধু নির্বাচনে শিশুকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করতে হবে। শিশুরা আবেগপ্রবণ হয়। তাই শিশুকে শিক্ষক ও অভিভাবকের কথামত চলতে হবে। তা নাহলে শিশুর জীবন বিপর্যস্ত হবে। শিক্ষক ও অভিভাবকের পরামর্শে শিশু সুশিক্ষা গ্রহণ করলে- শিশুর জীবন হবে সুন্দর, স্বার্থক ও ফলপ্রসূ। শিশুর পৃথিবী হবে আলোকিত। আমরা সবাই আলোকিত ও সুন্দর পৃথিবী চাই। সুন্দর এই পৃথিবী গড়ার জন্য শিক্ষক, অভিভাবাক ও শিশুর সমন্বয় প্রচেষ্টা অত্যাবশ্যক।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, রাবেতা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন