বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল্লাহতায়ালা বড়ই দয়ালু এবং অত্যন্ত করুণাময়

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

আল্লাহর ব্যাপারে অনেক জাতি-সম্প্রদায় বিভ্রান্তিতে পতিত রয়েছে যেমনটি পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে যে, তারা তাকে এক ভয়ঙ্কর সম্রাট বিবেচনা করছে যিনি রাগরোষে ভরপুর এবং যাকে রাজি-খুশি করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। যেন তা সাধারণ মানুষের কাজই নয়। যার কাছে পাপী-অপরাধী বান্দাদের জন্য শুধু ভর্ৎসনাই ভর্ৎসনা রয়েছে, রয়েছে গজবই গজব, আজাবই আজাব।
আর যদি তিনি দয়ালু ও করুণাময় থেকেও থাকেন, তবে তার সে দয়া ও করুণা শুধুমাত্র কোনো বিশেষ পরিবার কিংবা বিশেষ বংশ ও সম্প্রদায়ে সীমাবদ্ধ। অবশিষ্ট জগতের জন্য তিনি অত্যন্ত কঠোর, রুদ্র ও ভয়ঙ্কর শাসক।
প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ সম্পর্কিত এসব বিভ্রান্তি-ভ্রষ্টতাই অনেক জাতি-সম্প্রদায়ের শিরকের কারণ হয়েছে। তারা দেখেছে, নিজেদের জীবন পাপমুক্ত নয়। তাছাড়া এ জগতে পুণ্যময় ও পবিত্র জীবন-যাপন করা যেন তাদের সাধ্যেরও বিষয় নয়। নিজেদের মূর্খতার দরুন মনে করেছে, আল্লাহ এমনি কঠোর ও উগ্র প্রকৃতির যে, পাপী-তাপীর প্রতি তিনি আদৌ দয়া-করুণা করতে পারেন না। সুতরাং আল্লাহর ব্যাপারে তারা সম্পূর্ণ নিরাশ হয়ে গেছে। পক্ষান্তরে শয়তান তাদের কানে মন্ত্রণা দিয়েছে যে, আল্লাহর সৃষ্টির ভেতরে এমন কিছু কিছু সত্তা রয়েছে, যারা নিজেদের পুণ্য ও পবিত্রতার কারণে আল্লাহর অতি নিকটবর্তী এবং অত্যন্ত প্রিয়। তাদেরকেও আল্লাহ তায়ালা অনেক ক্ষমতা ও অধিকার দিয়ে রেখেছেন। তাদের মধ্যে আল্লাহর মত রুদ্র-রোষও নেই এবং তাদেরকে রাজি করা আল্লাহর মত এত কঠিনও নয়। কাজেই তাদের কাছে তোমাদের মত পাপী-তাপীরাও আশ্রয় পেতে পার। তাছাড়া তাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারলেই আল্লাহর আজাব ও গজব থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
বস্তুতঃ একেই তারা সহজ মনে করেছে। আল্লাহর প্রতি নিরাশ হয়ে তারা শয়তানের বাতলানো সেসব সত্তার সম্মান ও ইবাদত করতে শুরু করেছে, তাদের নামেই নজর-নিয়াজ মানতে শুরু করেছে এ আশায় যে, তাদের দয়ায় আমরা সজীব থাকব, তাদের সুদৃষ্টি ও কল্যাণে আমাদের কাজ সম্পন্ন হতে থাকবে এবং আল্লাহর পাকড়াও ও তার আজাব থেকেও তাদের সাথে স্থাপিত এ সম্পর্কের গুণেই আমরা রক্ষা পাব।
মূলত অধিকাংশ মুশরিক সম্প্রদায়ের অবস্থা ও ধ্যান-ধারণা নিয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে বুঝা যায়, এই গুমরাহীই তাদের শিরকে পতিত হওয়ার মূল কারণ যে, আল্লাহ তায়ালার দয়া, ক্ষমা, করুণা ও দানের গুণকে তারা জানতেই পারেনি। তারা শুধু তাকে রুদ্রতা, পরাক্রম ও অত্যন্ত কঠোরতাসম্পন্ন একজন সম্রাট মনে করে তার প্রতি নিরাশ হয়ে গেছে। শয়তান নির্দেশিত বাস্তব কিংবা কাল্পনিক সত্তাসমূহকে তারা নিজেদের আশা-আকাক্সক্ষার কেন্দ্র বানিয়ে নিয়েছে।
তারা যদি আল্লাহর রহমতের সীমাহীন প্রশস্ততা এবং তার ক্ষমা ও মার্জনার মহিমা সম্পর্কে অবহিত থাকত, তাহলে এই শিরকের ফাঁদে কখনও পা দিত না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Billal Khan ২২ মার্চ, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
আল্লাহতায়ালা অতিশয় ক্ষমাশীল, মহাক্ষমাশীল। বান্দা জেনে অথবা না জেনে যত বড় অপরাধই করুক না কেন আল্লাহ গাফুরুর রাহিমের কাছে ফিরে এলে তিনি ক্ষমা করে দেন। তিনি বান্দাদের ক্ষমাশীল দৃষ্টিতে দেখেন।
Total Reply(0)
Abdur Rahman ২২ মার্চ, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
কোনো অবস্থাতেই হতাশায় নিমজ্জিত নয়, সর্বাবস্থায় ভরসা রাখতে হবে আল্লাহ গাফুরুর রাহিমের ওপর। তিনিই আমাদের শেষ আশ্রয়, তার দরবারই আমাদের চূড়ান্ত ঠিকানা।
Total Reply(0)
Howladar Nayem Islam ২২ মার্চ, ২০১৯, ১:৫৬ এএম says : 0
আল্লাহ মহান করুণাময়, বান্দাহর প্রতি অত্যধিক দয়ালু ও গভীর শুভাকাক্সী। আল্লাহর ৯৯টি সিফাতি নামের বেশির ভাগই করুণাময় দয়ার স্মারক। তাই বলে এই বিশাল করুণার সুযোগ গ্রহণ করে বেপরোয়া ভাব প্রকাশ করার কোনো অবকাশ নেই।
Total Reply(0)
Jahed Islam ২২ মার্চ, ২০১৯, ১:৫৭ এএম says : 0
আল্লাহ করুণাময়, বান্দাহর প্রতি অত্যধিক দয়ালু ও গভীর শুভাকাক্সী। কিন্তু যখন কাউকে পাকড়াও করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে, তখন তার পাকড়াও অত্যন্ত কঠিন হয়ে থাকে।
Total Reply(0)
Nasir Uddin ২২ মার্চ, ২০১৯, ১:৫৯ এএম says : 0
পাপ করার পর ক্ষমা প্রার্থনাকারী বান্দাকে আল্লাহ কতটা ভালোবাসেন তার বর্ণনা করতে গিয়ে নবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন –সেই মহান সত্তার কসম যার হাতে আমার জীবন! যদি তোমরা পাপ না কর, আল্লাহ তোমাদের নিশ্চিহ্ন নিশ্চন্ত করে দিয়ে (তোমাদের পরিবর্তে) এমন এক জাতি আনয়ন করবেন, যারা পাপ করবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করবে। আর আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। (মুসলিম)।
Total Reply(0)
Rafiul Islam Noor ২২ মার্চ, ২০১৯, ২:০৩ এএম says : 0
শিরক যেহেতু সম্পূর্ণ অমার্জনীয় অপরাধ এবং যেহেতু প্রত্যেক মুশরিকের জন্য জাহান্নামে জ্বলার অলঙ্ঘনীয় ফয়সালা হয়ে গেছে, তাই স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সা. এবং সমস্ত ঈমানদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, খবরদার, কোনো মুশরিকের জন্য আল্লাহতায়ালার দরবারে মাগফেরাত ও ক্ষমার দোয়াও করবে না। আল্লাহতায়ালা এসব নাপাক জালেমের পক্ষে মাগফেরাতের দোয়াও শুনতে চান না।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন