শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বারানসীতে মোদি গান্ধীনগরে অমিত

ভারতের জাতীয় নির্বাচন বিজেপির ১৮৪ প্রার্থীর নাম প্রকাশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আদভানিকে সরিয়ে দিয়ে তার আসনে নির্বাচনে প্রার্থী হলেন দলের সভাপতি অমিত শাহ। এই প্রথমবার নির্বাচন করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারাণসী, লক্ষৌয়ে রাজনাথ সিংহ, নাগপুরে নিতিন গড়কড়ি, রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে আমেথিতে স্মৃতি ইরানি লড়বেন এমনটা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু শুভ মুহূর্ত বেছে ঘোষিত বিজেপির প্রথম প্রার্থী তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। আর সেটি হচ্ছে গুজরাটের গান্ধীনগর আসন থেকে লালকৃষ্ণ আদভানির বদলে প্রথমবার লোকসভা ভোটে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের লড়ার সিদ্ধান্ত।
মোদি-শাহ জুটি বিজেপির দায়িত্বে আসার পরেই ‘মার্গদর্শক মন্ডলী’তে ঠাঁই হয়েছিল প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি, মুরলীমনোহর জোশীর মতো প্রবীণ নেতাদের। পাঁচ বছরে যে ‘মন্ডলী’র নেতাদের একবারও ‘মার্গদর্শন’ করতে দেওয়া হয়নি।
বিজেপির উত্থানের নেপথ্যে থাকা আদভানিকে এবারে প্রার্থী না করার পিছনে দলের যুক্তি, ভোটে জয়কেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের সমীক্ষাতেও উঠে এসেছে, আদভানির বদলে অমিত শাহ প্রার্থী হলেই জয়ের সম্ভাবনা আছে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী গতবার নিজের রাজ্যের আসন ছেড়ে দেওয়ার পরে অমিত শাহ গুজরাটের জমি শক্ত করতে পারবেন। গত বিধানসভা ভোটে রাহুল গান্ধীর তৎপরতার ফলে এই গুজরাটেই বেশ বিপাকে পড়েছিল বিজেপি।
দিল্লির অলিন্দে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি বিজেপিতে আদভানি-যুগের পাকাপাকিভাবে অবসান হল? সক্রিয় রাজনীতি থেকে কি তাহলে এবারে বিদায় নিতে হল একদা ‘লৌহপুরুষ’ হিসেবে পরিচিত আদভানিকে? বিজেপির আসন ঘোষণার পরেই রাহুল গান্ধীর দল আদভানিকে প্রার্থী না করা নিয়ে কটাক্ষ করেছে। দলের নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘প্রথমে জোর করে লালকৃষ্ণ আদভানিকে মার্গদর্শক মন্ডলীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার তার আসনও কেড়ে নেওয়া হল। মোদি যখন দলের প্রবীণ নেতাদেরই সম্মান করতে পারেন না, দেশের জনতাকে কী করে করবেন? বিজেপি ভাগাও, দেশ বাঁচাও।’
কিন্তু বিজেপি সূত্র বলছে, প্রবীণ নেতা আদভানিকে ইতিমধ্যেই দলের মনোভাব জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সঙ্ঘ-বিজেপির যোগসূত্র রক্ষার দায়িত্বে থাকা নেতা রামলাল আদভানির কাছে বার্তা নিয়ে যান। ৭৫ বছরের বেশি বয়সি নেতাদের জয়ের সম্ভাবনা না থাকলে এমনিতেই প্রার্থী করা হবে না, সেটি আগেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে আর এক প্রবীণ নেতা কলরাজ মিশ্র ঘোষণা করেছেন, তিনি ভোটে লড়বেন না। মুরলীমনোহর জোশী, ভগৎ সিংহ কোশিয়ারি, ভুবনচন্দ্র খান্ডুরির মতো প্রবীণ নেতাদের নামও প্রথম তালিকায় ঠাঁই পায়নি। কিন্তু বিজেপিরই একটি অংশের মতে, গান্ধীনগর আসন ১৯৮৯ সাল থেকে বিজেপির গড়া। সেখানে আদভানি জিততে পারতেন না, এ ধারণা ভুল। অমিত শাহ যে বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতে এসেছেন, সেটিও আদভানিরই সংসদীয় কেন্দ্রের অধীনে।
বিজেপি জানিয়েছে, যে ১৮৪ জনের তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে দুই ডজনের মতো বর্তমান নাম বাদ পড়েছে। মোদি সরকারের কৃষি প্রতিমন্ত্রী কৃষ্ণা রাজও টিকিট পাননি। তালিকায় উত্তরপ্রদেশে আধা ডজন নাম বাদ পড়েছে। পূর্ণ তালিকা ঘোষণা হলে সে রাজ্যে ২০ শতাংশ নাম বাদ পড়ার সম্ভাবনা। বারাণসী ছাড়া প্রধানমন্ত্রী অন্য কোনও আসনে লড়বেন কি না, সেটি অবশ্য এখনও স্থির করা বাকি। সপ্তাহখানেক আগে হ্যাক হয়ে যাওয়া বিজেপির ওয়েবসাইট শুক্রবার চালু হয়েছে। প্রথম তালিকা সেখানে আপলোড করা হয়েছে। বিজেপি জানিয়েছে, বিহারের ১৭টি আসনেও প্রার্থী চ‚ড়ান্ত হয়ে গেছে। রাজ্য নেতৃত্ব সেটি ঘোষণা করবেন।
বিজেপি ভেবেচিন্তে প্রার্থী বাছাই করার কথা বললেও কংগ্রেসের কটাক্ষ, বিজেপি এত ভেবেচিন্তে প্রার্থী বাছাই করলে ধর্ষণে অভিযুক্ত নিহালচন্দ্র, গোষ্ঠী সংঘর্ষে অভিযুক্ত সঞ্জীব বালিয়ানের নাম কী করে রইল? স্মৃতি ইরানির নামের পাশে ‘পার্সি’ লেখা আছে। অথচ বিজেপি দাবি করে, তারা জাতপাতে বিশ্বাস করে না। রাজস্থানের একমাত্র মহিলা বিজেপি সংসদ সদস্য সন্তোষ আহলাওয়াতও টিকিট পাননি। বিজেপির বক্তব্য, ‘যিনি জিততে পারবেন, তাকেই প্রার্থী করা হবে। সে কারণে এখনও রমন সিংহ, বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার মতো হেরে যাওয়া প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদের রাখা হয়নি। জনপ্রিয়তার নিরিখেই হেমা মালিনীকে ফের মথুরায় প্রার্থী করা হয়েছে। আর সুষমা স্বরাজ আগেই ভোটে না লড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। অরুণ জেটলিও অসুস্থ।’ সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন