শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

মোহামেডানকে পাত্তাই দিল না আবাহনী

জহুরুলের ৪ রানের আক্ষেপ * মেহেদী মারুফের টানা সেঞ্চুরি

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে আগের সেই উত্তেজনা এখন আর নেই। নামেই শুধু দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের দ্বৈরথ। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দু’দলের ম্যাচটিও আদর্শ উদাহরণ হয়ে রইল নিরুত্তাপ ‘কাগুজে লড়াইয়ের’। যে লড়াইয়ে পাত্তাই পায়নি মোহামেডান, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর কাছে ৬ উইকেটে হেরে গেছে সাদা-কালো শিবির। একই দিন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের টানা চতুর্থ জয়ের বীপরিতে টানা তিনটি হারের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স।

২৪৯ রানের লক্ষ্য। আবাহনীর দুই ওপেনার জহুরুল ইসলাম-সৌম্য সরকারের ওপেনিং জুটি তুলে ফেলল ১০৫ রান। লক্ষ্যটা যেহেতু সহজ হয়ে আসছিল, সৌম্যর সুযোগ ছিল লম্বা একটা ইনিংস খেলে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়া। বাঁহাতি ওপেনার সেটি পারলেন না, শাহাদাত হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে ফিরলেন ৪৩ রানে। সৌম্য না পারলেও জহুরুল এগোচ্ছিলেন লিগে প্রিমিয়ার লিগে আরেকটি সেঞ্চুরি করার পথে। শাহাদাতের বলে বোল্ড হয়ে তাঁর তিন অঙ্ক ছোঁয়া আর হয়নি, ফিরেছেন ৪ রানের আক্ষেপ নিয়ে। আউট হয়েছেন ৯৬ রানে। দুই ওপেনারের দুই রকম আফসোস থাকলেও আবাহনীর তাতে ক্ষতিবৃদ্ধি হয়নি, ১৫ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখে পৌঁছে গেছে জয়ের প্রান্তে। জহুরুলের অবশ্য মনটা ভালো হয়ে যাওয়ার কথা ম্যাচসেরার পুরস্কারটা পেয়ে।

টস জিতে আবাহনী ব্যাটিং করতে পাঠিয়েছিল মোহামেডানকে। মাশরাফিদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মোহামেডান ৭ উইকেটে ২৪৮ রানের বেশি করতে পারেনি। ইরফান শুক্কুর আর রকিবুল হাসানের দুটি ফিফটি তাদের সহায়তা করেছে এ মাঝারি স্কোর গড়তে। চোট থেকে ফিরে অসাধারণ বোলিং করেছেন আবাহনীর সাইফউদ্দীন, ৩১ রানে পেয়েছেন ৩ উইকেট। আবাহনীর বোলারদের প্রায় সবাই যেখানে ভালো করেছেন, রুবেল হোসেন সেখানে দিয়ে বসেছেন ১০ ওভারে ৭১ রান। মাশরাফিও ৯ ওভারে ৫১ রান দিয়ে থেকেছেন উইকেটশূন্য।

এই জয়ে আবাহনী ধরে রেখেছে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষ স্থান, ৬ ম্যাচে ৫ জয় ও ১ হার তাদের পয়েন্ট ১০। সমান পয়েন্ট নিয়েও রান রেটে পিছিয়ে থেকে শিরোপাধারীদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে টানা চতুর্থ জয় পাওয়া রূপগঞ্জ। সমান ম্যাচে তিনটি করে জায়-হারে পাঁচ নম্বরে থাকা মোহামেডানের ঝুলিতে ৬ পয়েন্ট। সমান পয়েন্ট নিয়েও রান রেটে পিছিয়ে থাকায় শেখ জামালের অবস্থান ছয়ে। টানা হারের বৃত্তে থাকা ৪ পয়েন্ট নিয়ে গাজী গ্রুপ নেমে গেছে আটে। ১২ দলের লিগে ২ পয়েন্ট নিয়ে ১১ নম্বরে ২ পয়েন্ট পাওয়া খেলাঘর।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে দিনের আরেক হাই ভোল্টেজ ম্যাচে রানের জন্য সংগ্রাম করা গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ব্যর্থ আবার। বাজে সময় পেছনে ফেলার আভাস দেওয়া শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান শেষ তিন ম্যাচে পেলেন দ্বিতীয় ফিফটি। দুই অধিনায়কের দুই রকম দিনে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে আলো ছড়ালেন আসেলা গুনারতে্ন। শেখ জামালকে এনে দিলেন দারুণ এক জয়। ষষ্ঠ রাউন্ডে ৪৩ রানে জিতেছে সোহানের দল। গাজীর ভারতীয় অলরাউন্ডার পারভেজ রসুল ৩ উইকেট নেন ৩৭ রানে। ২৭৭ রান তাড়ায় তিন ওভার বাকি থাকতে ২৩৪ রানে গুটিয়ে যায় গাজী গ্রুপ। তিনটি করে উইকেট নেন খালেদ ও শাকিল। ঝড়ো ফিফটি আর দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেটে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন গুনারতে্ন।

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে বাজে সময় পেছনে ফেলে ছন্দে ফিরেছেন মেহেদী মারুফ। টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এই ওপেনার। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতিকে হারিয়েছে লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতেছে রূপগঞ্জ। ২৬৫ রানের লক্ষ্য চার বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় নাঈম ইসলামের দল।
আগের ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে অপরাজিত ১৩৭ রান করেছিলেন মারুফ। এবার খেললেন ১০৮ রানের আরেকটি ম্যাচ জেতানো ইনিংস। লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে এটি তার ষষ্ঠ সেঞ্চুরি।

আবাহনী-মোহামেডান, মিরপুর
মোহামেডান : ৫০ ওভারে ২৪৮/৭ (লিটন ২৭, মজিদ ২৬, শুক্কুর ৫৭, রকিবুল ৫১, চতুরঙ্গ ৩২, সোহাগ ২৭, আশরাফুল ৪*; মাশরাফি ০/৫১, সাইফউদ্দিন ৩/৩১, নাজমুল ৩/২৯, মোসাদ্দেক ১/২৭)। আবাহনী : ৪৭.৩ ওভারে ২৫৪/৪ (জহুরুল ৯৬, সৌম্য ৪৩, জাফর ৩৮, শান্ত ১৬, মোসাদ্দেক ১৮*, সাব্বির ২১*; শফিউল ১/৫৪, শাহাদাত ২/৫৯, চতুরঙ্গ ১/২৭)।
ফল : আবাহনী ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : জহুরুল ইসলাম অমি।

শেখ জামাল-গাজী গ্রুপ, ফতুল্লা
শেখ জামাল : ৫০ ওভারে ২৭৭/৬ (ফারদিন ৪৬, তানবীর ১৯, নাসির ২৩, নুরুল ৮১*, গুনারতে্ন ৭৯; মেহেদি ১/৩৭, রসুল ৩/৩৭, রাব্বি ১/৭৭, মাইশুকুর ১/১৪)। গাজী গ্রুপ : ৪৭ ওভারে ২৩৪ (ইমরুল ১৫, শামসুর ৮১, তারেক ২৭, মেহেদি ৬০, রাব্বি ১৯*; এনামুল ১/৩২, খালেদ ৩/৩১, শাকিল ৩/৪৭, গুনারেত্ন ২/৫০)।
ফল : শেখ জামাল ৪৩ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : আসেলা গুনারতে্ন।

রূপগঞ্জ-খেলাঘর, সাভার
খেলাঘর : ৫০ ওভারে ২৬৪/৩ (রবি ৫৩, সাদিকুর ১৯, মাহিদুল ৭৭, মেনারিয়া ৮৭*, মইনুল ১৩*; শুভাশিস ১/৫৯, ধাওয়ান ১/৬৫, মুক্তার ১/৪২, নাঈম ০/২৮)। রূপগঞ্জ : ৪৯.২ ওভারে ২৬৮/৫ (মারুফ ১০৮, মোহাম্মদ নাঈম ৭২, মুমিনুল ২৬, নাঈম ২৮*, জাকের ১৮; রবিউল ১/৫৮, মাসুম ১/৪২, মইনুল ৩/৪২)।
ফল : রূপগঞ্জ ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : মেহেদী মারুফ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন