বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

গ্রুপিংয়ে মিলছে না স্বাস্থ্যসেবা ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের

প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঠাকুরগাঁও জেলা সংবাদদাতা
জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে স্বাস্থ্য প্রশাসকের অদূরদর্শিতা, অযোগ্যতা, খামখেয়ালিপনা, পক্ষপতিত্ব ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টির কারণে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। মাঠ পর্যায়ের স্টাফরা হয়ে পড়েছে বিভক্ত। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মসলিম উদ্দিন নামে একজন স্বাস্থ্য পরিদর্শকের বদলিকে কেন্দ্র করে বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিভক্ত হয়ে যায়। খোদ স্বাস্থ্য প্রশাসক ডাঃ আব্দুল মজিদ এই গ্রুপিং সৃষ্টিতে অন্যতম সহায়ক বলে গুঞ্জন আছে। স্বাস্থ্য পরিদর্শক মসলিম উদ্দিন ইতোপূর্বে এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত থাকাকালে তার বিরুদ্ধে অশালীন আচরণ এবং বিধিবহির্ভুত অসামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগ ছিল। পরবর্তীতে তিনি দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জে বদলি হন, বোচাগঞ্জ থেকে পুনরায় আগের কর্মস্থলে বদলির প্রক্রিয়া শুরু হলে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা তার বদলি ঠেকাতে রংপুর বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগ সরেজমিন তদন্তের জন্য স্বাস্থ্য প্রশাসক ডাঃ আব্দুল মজিদকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে ডাঃ মজিদ অভিযোকারীদের কোনো বক্তব্য না শুনে মনগড়াভাবে পক্ষপাতমূলক তদন্ত প্রতিবেদন দিলে মসলিম উদ্দিন বোচাগঞ্জ থেকে পীরগঞ্জ উপজেলায় বদলি হয়ে আসেন এবং স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা আরো জোড়ালাভাবে মারমুখী হয়ে ওঠেন। ন্যায় বিচার বঞ্চিত হয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সহ-পরিদর্শক সাহেরা বানুসহ ৩৫ জন কর্মচারী ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন বরাবরে মসলিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করলে সিভিল সার্জন গত ৯ মার্চ ৪ সদস্যের তদন্ত টিম নিয়ে পীরগঞ্জ হাসপাতালে আসেন। তদন্তকালে উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক কিছু কর্মচারীকে মোবাইলে মসলিম উদ্দিনের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। এছাড়াও তিনি স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তি ও কতিপয় সাংবাদিককে তদন্তকালে আকষ্মিকভাবে ডেকে আনায় তদন্ত কাজে বিঘেœর সৃষ্টি হয়। তদন্তকাজে বিঘœ ঘটানোয় সিভিল সার্জন, স্বাস্থ্য প্রশাসককে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেন। এসব বিষয় জানার জন্য গত ১২ মার্চ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য প্রশাসক ডাঃ আব্দুল মজিদের চেম্বার খালি। খোঁজ নিয়ে জানা যায় তিনি বাসায় ঘুমোচ্ছেন এবং এটাই তার নিত্যদিনের নিয়ম। ১২টার আগে তিনি অফিসে আসে না। কালেভাদ্রে ২/১ দিন অফিসে থাকলেও প্রায়ই অফিস ফাঁকি দেন। অন্যদিকে হাসপাতালের বহিঃবিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম দুপুর ১টায় শেষ হয়ে যায়। স্বাস্থ্য প্রশাসকের অব্যাহত অনুপস্থিতিতে জনগণের চিকিৎসা সেবার কি দশা তা একমাত্র ভুক্তভোগীরাই জানেন। সর্বোপরি স্বাস্থ্য প্রশাসক নিজেই নিয়ম মানেন না। হাসপাতাল কোয়াটারে থাকেন অথচ অফিসে যান না। কর্তৃপক্ষদেরও তোয়াক্কা করেন না। নিজের খেয়ালখুশি মতো প্রশাসন পরিচালনা করেন। অধস্তনদের মধ্যে গ্রুপিংয়ে উস্কানি দেন। এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য প্রশাসক আব্দুল মজিদের মতামত চাওয়া হলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয়। তবে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন বলেন, সেখানে সমস্যা আছে, সমাধানেরও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন