আর মাত্র দশদিন পর অবসরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য হকি কোচ মো: কাওসার আলী। খেলোয়াড় হিসেবে যার শুরুটা হয়েছিলো ফুটবল দিয়ে। কিন্তু একসময় স্টিক হাতে মাঠ মাতিয়েছেন তিনি। পরে হকি কোচ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান। মাঠ কাঁপানো এই সাবেক ফুটবলার ক্যারিয়ারে দু’টি ডিসিপ্লিনে খেললেও পেশাগত জীবনে হকিকেই বেছে নেন। খেলোয়াড় থেকে কোচ। এ মানুষটিই অচিরে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। ইতি টানছেন নিজ কোচিং ক্যারিয়ারের। বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) প্রধান হকি কোচের দায়িত্ব পালনকারী কাওসার আগামী ১৯ নভেম্বর চাকুরী থেকে অবসরে যাচ্ছেন। তার শূন্যতায় হকি অঙ্গন বিরাট ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন দেশের হকিবোদ্ধারা।
দীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারে কাওসার ১৯৮৭ সালের অক্টোবরে হকি কোচ হিসেবে বিকেএসপিতে যোগদান করেন। ১৯৮৮ সালের ১২ মে বিকেএসপির রাজস্ব খাতে কোচ কাম কর্মকর্তা হিেেসবে কাজ শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে ১৯৯৮ সালে সিনিয়র কোচ ও ২০১১ সালে প্রধান কোচ পদে পদোন্নতীর মাধ্যমে প্রায় ৩০ বছর বিকেএসপির হকি কার্যক্রমের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। কাওসার অবসরে গেলে তার শূন্যস্থান পূরন করবেন কে? এমন প্রশ্ন এখন ঘোরপাক খাচ্ছে সবার মনে। অবশ্য এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে বেশ কটি নাম উঠে আসে। যারা বর্তমানে দেশের হকির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। বর্তমানে কাওসারের অধীনেই সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে বিকেএসপিতে হকি কোচ হিসেবে কাজ করছেন সাবেক জাতীয় তারকা খেলোয়াড় জাহিদ হোসেন রাজু, শেখ মোহাম্মদ নান্নু ও মশিউর রহমান বিপ্লব। ধারনা করা হচ্ছে এদের মধ্য থেকেই যে কোন একজন কাওসারের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন।
সবদিক বিবেচনায় এ তিনজনের মধ্যে এগিয়ে আছেন রাজু। ভারতের পাতিয়ালা থেকে হকির উপর ডিপ্লোমা ইন কোচিং ডিগ্রিধারী কাওসার আলী, শান্টা, নুর ইসলাম, এহতেশাম, মামুন-উর রশিদ ও তুষারের নামের সঙ্গে রাজুর নামও উচ্চারিত হবে। তিনি পাতিয়ালা থেকে ডিপ্লোমা ইন কোচিং ডিগ্রি নেয়ার পাশাপাশি ১৯৯৯-২০১১ পর্যন্ত প্রজেক্টে কাজ করার পর ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিকেএসপিতে রাজস্ব খাতে চাকুরী করছেন। তবে জানা গেছে, বিকেএসপির প্রধান কোচের পদে অন্যদের চেয়ে রাজু এগিয়ে থাকলেও বর্তমান জাতীয় দলের সহকারী কোচ আলমগীর আলম এই পদের জন্য একজন শক্তিশালী প্রার্থী। তার কোচিং ক্যারিয়ার রাজুর মত মজবুত না হলেও রাজনৈতিক প্রভাবে তিনি আশা করছেন বিকেএসপির প্রধান হকি কোচ হওয়ার। বিশ্বস্ত সুত্র জানায়, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের ঘনিষ্ঠজন হওয়ার কারণেই নাকি আলমগীর এই পদের অন্যতম দাবিদার। কিন্তু মাঠে (তৃনমুলে) কাজ করলেও ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারী না হওয়ায় আলমগীরে দাবী কতটা যুক্তিসংগত। এ প্রসঙ্গে কাওসার আলীর কথা, ‘বিকেএসপির প্রধান কোচ হতে হলে প্রার্থীকে দীর্ঘমেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্সধারী হতে হবে। তাকে বিকেএসপিতে দীর্ঘদিন রেভ্যিনিউ খাতে কোচ হিসেবে চাকুরিরত থাকতে হবে। স্বল্প মেয়াদে যত কোর্সই করা থাকুক না কেন সেটি বিকেএসপির প্রধান কোচ পদের জন্য বিবেচ্য নয়।’
বিকেএসপির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, যেহেতু কাওসারের সমসাময়িক কেউ নেই, তাই তাদেরকে দুটি উপায়ে প্রধান কোচ নিয়োগ দিতে হবে। প্রথমত পদোন্নতীর এবং দ্বিতীয়ত নতুন নিয়োগের মাধ্যমে। তবে এই পদে যাকেই নেয়া হোক না কেন হকির সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা থাকতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন