শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ট্রাম্প-পুতিন সংক্ষিপ্ত বৈঠকে আইএস দমনে মতৈক্য

মুক্তবাণিজ্যের কারণে মার্কিনীরা কর্মসংস্থান সুযোগ বঞ্চিত : ট্রাম্প

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অনেক নাটকীয়তার পর ভিয়েতনামে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার (এপেক) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লালাদিমির পুতিনের ‘সংক্ষিপ্ত বৈঠক’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দুই নেতা সিরিয়ায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস দমনে মতৈক্যে পৌঁছান। গতকাল শনিবার দুই নেতার বৈঠকের পর রুশ প্রেসিডেন্টের বাসভবন ক্রেমলিন থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ বিষয়ে অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট হাউস কিছু বলেনি। তবে তারা গত শুক্রবার বলেছিল, ট্রাম্পের ব্যস্ত সূচির কারণে দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে কোনো ‘আনুষ্ঠানিক বৈঠক’ হচ্ছে না। ক্রেমলিন জানায়, ভিয়েতনামের বন্দরনগরী দা নাংয়ে অ্যাপেক সম্মেলনের ফাঁকে দুই প্রেসিডেন্টের বৈঠকের পর তাদের কার্যালয় সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বিবৃতি প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু বিবৃতির বিষয়েও কিছু বলেনি হোয়াইট হাউস। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরটি জানায়, হোয়াইট হাউস ও ক্রেমলিন দুই নেতার মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক হচ্ছে না বলে জানিয়ে এলেও শুক্রবার রাতে নৈশভোজের ফাঁকে দেখা হয় ট্রাম্প ও পুতিনের। সেসময় করমর্দনও করেন তারা। শনিবার ফের মূল সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতা দেখা করেন। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী নেতাদের ফটোসেশনে দ্বিতীয় সারিতে পাশাপাশি দাঁড়িয়েও হাস্যোজ্জ্বল আলাপ করতে দেখা গেছে দুই প্রেসিডেন্টকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত তিন বার মুখোমুখি হয়েছেন ট্রাম্প ও পুতিন। প্রত্যেকবারই তারা বেশ খোশ মেজাজে কথা বলেছেন। ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়, সংক্ষিপ্ত আলাপকালে দুই নেতা এ ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছেন যে- সিরিয়ার সংঘাত বন্ধে সামরিক পদক্ষেপ সমাধান নয়। সেজন্য আইএসকে পরাজিত করতে তারা সব পক্ষকে শান্তি আলোচনায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে। এই হস্তক্ষেপের ফল ট্রাম্পের পক্ষেই গেছে বলে মনে করেন দেশটির গোয়েন্দারা। সেজন্য ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা শিবিরের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তদন্তাধীনও রয়েছেন। এই অভিযোগ-তদন্তের মধ্যেই গত জুলাইয়ে জার্মানির হামবুর্গে উন্নত দেশগুলোর জোট জি-২০ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো দেখা হয় ট্রাম্প-পুতিনের। অপর এক খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মার্কিন বাজারে অন্য দেশগুলোর পণ্যসামগ্রী প্রবেশে বিধিনিষেধ অনেক কম। তাদের শুল্কও কম দিতে হয়। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে মূল্য দিতে হচ্ছে। আমাদের জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মুক্ত বাণিজ্যের ফলে লাখ লাখ আমেরিকান কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না। ভবিষ্যতে আমেরিকা ফার্স্ট মাথায় রেখে বাণিজ্য চুক্তি করা হবে। গত শুক্রবার ভিয়েতনামে এশিয়া-প্যাসেফিক ইকোনোমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলনে প্রদত্ত ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ভাষণে এপেক-এর সদস্য দেশগুলোকে ‘ন্যায্য পারস্পরিক বাণিজ্য’ নীতি মেনে চলার আহ্বান জানান। যেসব দেশ এটা মেনে চলবে তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত। তবে এর ভিত্তি হবে পারস্পরিক সম্মান ও সুবিধা। দৃশ্যত ট্রাম্পের আক্রমণের প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিল চীন। তবে এই আক্রমণাত্মক ভাষণের ঘণ্টাখানেক আগেই চীন সফরে দেশটির ভূয়সী প্রশংসা করেন ট্রাম্প। বাণিজ্য ঘাটতি এবং উত্তর কোরিয়া নীতির জন্য তিনি শি জিনপিং সরকারের প্রশংসা করেন। ট্রাম্পের ভাষায়, ‘বাণিজ্য খাতে চীন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে যাওয়ায় আমি বেইজিংকে দায়ী করছি না। আগের মার্কিন প্রশাসনের অযোগ্যতাই এর জন্য দায়ী।’ উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে তিনি বলেন, চীন চাইলে এ সমস্যার দ্রুত ও সহজ সমাধান করতে পারে। এ সময় তিনি এ বিষয়ে চীনা প্রেসিডেন্টকে আরও বেশি কিছু করার অনুরোধ জানান। রয়টার্স জানায়, নৈশভোজের আগে অংশগ্রহণকারী শীর্ষ নেতাদের গ্রুপ ছবি তোলার সময়ও ট্রাম্প ও পুতিন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে হাসিমুখে ছবি তুলেছেন। রয়টার্স, সিএনএন, বিবিসি, আল-জাজিরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন