শুক্রবার ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১, ৩০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

নিবন্ধ

মাওলানা মাহমুদুল হাসান : রেশমী রুমাল আন্দোলনের নেতা

কে. এস. সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
রেশমী রুমাল আন্দোলনের নেতা হিসেবে মাওলানা মাহমুদুল হাসানকে তার অপরাপর সঙ্গীসহ বন্দি করার কথা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। অপর একটি বর্ণনা হতে জানা যায় যে, ভারত বর্ষের ইংরেজ সরকার দারুল উলুম দেওবন্দ হতে মাওলানা মাহমুদুল হাসানকে গ্রেফতার করে। কোনো কোনো গ্রন্থে জেহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ও হিন্দুস্থানে বিশেষ কর্মপন্থা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, খোদ হিন্দুস্থানে বিদ্রোহের বিশেষ প্রস্তুতিমূলক কর্মপদ্ধতির পক্ষ হতে মাওলানা উবায়দুল্লাহ (সিন্দী) কে নিয়োগ করা হয়। তাকে সে সময়ে এসব দায়িত্ব অর্পণ করা হয়, তখন তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন। তিনি তার তিন বন্ধু আবদুল্লাহ, ফয়জুল্লাহ মোহাম্মদকে আলীকে সঙ্গে করে হিন্দুস্থানে আগমন করেন। মাওলানা উবায়দুল্লাহ দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষক ও ছাত্রদের সাথে মিলিত হন এবং ইংরেজদের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা পর্যালোচনা করেন। তার এসব উদ্যোগের প্রতি দারুল উলুমের খ্যাতনামা আলেম মাওলানা মাহমুদুল হাসান তাকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। এমনও বলা হয় যে, তিনি মাওলানা উবায়দুল্লাহর ডান হাত হিসেবে কাজ করেন। দারুল উলূমের প্রধান মোহতামিম (পরিচালক) মাওলানা উবায়দুল্লাহর কর্মকান্ড ও তৎপরতাকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখতে থাকেন এবং তাকে মাদরাসা হতে বহিষ্কার করেন। এবার বিদ্রোহের প্রস্তুতির সকল দায়-দায়িত্ব মাওলানা মাহমুদুল হাসানের ওপর এসে বর্তায়। প্ল্যান অনুযায়ী দেওবন্দের ছাত্রদের সমগ্র দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার এবং নির্ধারিত সময়ে বিদ্রোহ শুরু করার কথা, মাওলানা উবায়দুল্লাহ দেওবন্দ হতে প্রত্যাবর্তনের সময় মোজাহীদদের সাথে মিলিত হন এবং তাদের সতর্ক থাকতে বলেন। তিনি সেখানেই গমন করেন, সেখানে মুসলমান অধিবাসীদের মধ্যে উসমানীয় রাষ্ট্রের পক্ষ হতে প্রদত্ত জেহাদ সংক্রান্ত ফতোয়ার কপি বিতরণ করেন। প্ল্যানের মধ্যে আজীম বাগাওয়াত বা মহান বিদ্রোহের পর হিন্দুস্থানের একটি নতুন সরকার গঠন ও রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মহিদ্র প্রতাপ নামক একজন হিন্দুর নির্বাচন অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার মুসলমানদের সাথে মক্কায় আগত হিন্দুস্থানী মুসলমানদের মাধ্যমে যোগাযোগ সম্পর্ক কায়েম ছিল। মক্কায় দক্ষিণ এশিয়ার হাজীদের মধ্যে আনোয়ার পাশার পক্ষ হতে তোহফা (উপহার) হিসেবে রেশমী রুমাল পেশ করা হতো, যাতে তার সর্বশেষ নির্দেশনাবলি এবং পরিকল্পনা সংক্রান্ত শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকতো। এসব হাজী সরাসরি দেওবন্দ চলে যেতেন এবং রেশমী চিঠিগুলো মাওলানা মাহমুদুল হাসানের নিকট পেশ করতেন। দারুল উলুম দেওবন্দের প্রধান পরিচালকের সন্দেহ হয় যে, মাওলানা মাহমুদুল হাসানের মেহমান ও তার সাথে সাক্ষাৎকারীদের সংখ্যা কিছুদিন থেকে অস্বাভাবিক বেড়ে চলেছে। এতে তার সন্দেহ ঘনীভূত হয় এবং তিনি ১৯১৬ সালে ইংরেজদের কাছেও অভিযোগ পেশ করেন। সুতরাং আগস্ট মাসের এক সন্ধ্যায় মাওলানা মাহমুদুল হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। কারণ ছিল এই যে, তার কাছে যে টাটকা রেশমী চিঠি পাওয়া যায় তাতে তার প্রতি নির্দেশ ছিল যে, তিনি কাবুলে নিযুক্ত হিন্দুস্থান বাহিনীর কমান্ডার এবং তার দায়িত্ব, তিনি দেওবন্দের ছাত্রদের সাময়িক দিক থেকে পদায়ন করবেন।
উল্লেখিত বর্ণনার মাওলানা মাহমুদুল হাসানকে গ্রেফতারের তারিখ ১৯১৬ সাল বলা হয়েছে, কিন্তু কোথায় বন্দি করে রাখা হয়েছিল এবং কতদিন তিনি বন্দি অবস্থায় ছিলেন, সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। পক্ষান্তরে মক্কা মোআজ্জমায় তাকে শরীফে মক্কা হোসাইনের নির্দেশে বন্দি করে মাল্টার কারাগারে রাখা হয়েছিল বলে আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। এবং সেখানে পাঁচ বছর বন্দি ছিলেন। ভারত ও মক্কায় বন্দি হওয়ার বর্ণনা পরস্পর বিরোধী, বিষয়টি প্রশ্নবোধক হয়ে আছে। বিগত সংখ্যায় প্রকাশিত বর্ণনাটি আহমদ সাঈদ এম এ’র এবং তাহরীকে খেলাফতের বিশিষ্ট গবেষক ড. মীম কামালের।
অপর একটি বর্ণনা অনুযায়ী মাওলানা মাহমুদুল হাসান তার বিশিষ্ট ছাত্র উবায়দুল্লাহ সিন্ধীকে কাবুলে প্রেরণ করেন। যাতে তিনি আফগানিস্তান ও স্বাধীন উপজাতিদের কাছ থেকে তুর্কীদের প্রতি সমর্থন আদায় করা যায়। তাকে কাবুলে প্রেরণের আরো একটি উদ্দেশ্য ছিল এই যে, আফগানিস্তানকে তুর্কি ও জার্মানির ঐক্যে অন্তর্ভুক্ত হতে উৎসাহিত করা। এর আগ থেকে আফগানিস্তানে তুর্কি ও জার্মানির বিপ্লবী প্রতিনিধিদলগুলো একই কাজ শুরু করে দিয়েছিল। উবায়দুল্লাহ সিন্ধী ১৯১৫ সালে কাবুলে পৌঁছেন এবং সেখানে একটি অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে যাতে আমির হাবিবুল্লাহ খানকে ভারতবর্ষ আক্রমণের আহŸান জানানো হয়, কিন্তু ইংরেজদের চালবাজির ফলে এ পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যায়। অতঃপর এ অস্থায়ী সরকারের পক্ষ হতে রাশিয়া, জাপান ও তুরস্কে প্রতিনিধি দলগুলো প্রেরণ করা হয়। মাওলানা উবায়দুল্লাহ সিন্ধী আফগানিস্তানে জুনুদুল্লাহ নামক একটি দল গঠন করেন। কিন্তু এ সময় আফগানিস্তানে বিপ্লব ঘটায় তিনি নিজের বক্তব্যসমূহ কাপড়ে লিখে মাওলানা মাহমুদুল হাসানের নিকট প্রেরণ করতেন এবং তার অন্যান্য সহকর্মীও একই কাজ করতেন। এটি রেশমী রুমাল আন্দোলন হিসেবে খ্যাতিলাভ করে।
রেশমী রুমাল আন্দোলন ছাড়াও বিভিন্ন নামে বহু আন্দোলনই ছিল ইংরেজ বিরোধী। কেননা ইংরেজরা এদেশে শাসন ক্ষমতা সুদৃঢ় করার সাথে সাথে তুর্কী খেলাফত ধ্বংস করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং প্রথম মহাযুদ্ধের পর উঠে পড়ে লেগে যায়। এ খেলাফতকে ধ্বংস করার জন্য ইংরেজদের সৌভাগ্য এবং মুসলমানদের দুর্ভাগ্য এই যে, তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য তারা একজন শরীফে মক্কা হোসাইনের সমর্থন লাভ করে। ১৯১৬ সালের কথা। এটি যুদ্ধকালীন সময়। সে সময় খলিফার পর মুসলিম জাহানে সম্মান ও মর্যাদার দিক থেকে দ্বিতীয় স্তরে গণ্য হতেন শরীফে মক্কা হোসাইন। তার সম্পর্ক ছিল কোরেশ খান্দানের সাথে। ইংরেজরা তাকে উস্কে দেয় তুরস্কের বিরুদ্ধে। তিনি ঘোষণা করলেন এ বিদ্রোহে মুসলমানদের খলিফার বিরুদ্ধে নয় এ বিদ্রোহ কালো নেকড়ের বিরুদ্ধে যার পূজারী তুরাসীড়া এবং আঞ্জুমানে ইত্তেহাদে তরাকীর পাশ্চাত্যবৃন্দের বিরুদ্ধে যারা আব্দুল্লাহ জাওরাতের নীতি অনুসরণ করে চলছে যে ব্যক্তি হজরত রাসূলুল্লাহ সম্পর্কে বিদেশী ভাষায় রচিত অশ্লীলতা ও গালিগালাজে ভরা গ্রন্থাবলী তুর্কি ভাষায় অনুবাদ করেছে। এ সময় ইংরেজরা আঞ্জুমানে ইত্তেহাদে তরক্কীর নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে প্রচারণাও শুরু করে দেয় ব্যাপকভাবে। তারা অহরহ এমন সব প্রচারপত্র বিলি-বণ্টন করতে থাকে, যাতে বলা হয় যে, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদে তরক্কীর সদস্যরা ফ্রিমেসন ও ইহুদী। এ ধরনের প্রচারপত্র রণাঙ্গণে তুর্কীদের মধ্যেও বিলি করা হতে থাকে। এগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হ্যান্ডবিলও উড়োজাহাজ হতে ইরাক ও মিসরে নিক্ষেপ করা হতে থাকে। তাদের এ প্রচারণা এতই কার্যকর ছিল যে, দানিয়াল গিরিপথের যুদ্ধে ইংরেজ বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত মুসলমানদের মধ্যে এ ধারণা ও বিশ্বাস জন্মেছিল যে, আঞ্জুমানে তরক্কীয়ে ইত্তেহাদের বেদ্বীন নেতারা খলিফাকে অন্তরীণ করে রেখেছে এবং তারা তাকে রক্ষা করার জন্য মূল ও নৌ আক্রমণে অংশগ্রহণ করছে।
ইংরেজদের প্রচারণা ব্যর্থ করে দেয়ার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছিলেন মাওলানা মোহাম্মদ আলী জওহার এবং তার সহ লেখকবৃন্দ। কিন্তু ইংরেজরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে বিলম্ব করেনি। তারা আলী ভ্রাতৃদ্বয় ও অন্য তুর্কীদের সমর্থনে লেখনী চালানোর অভিযোগে কারাগারে নিক্ষেপ করে এবং প্রচারধর্মী প্রতিষ্ঠানগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেয়। রণফ্রন্টে যেসব হিন্দুস্থানী মুসলমান কমান্ডারদের নির্দেশ অমান্য করতো এবং অস্ত্র ত্যাগ করতো তাদের ফাঁসিতে ঝুলানো হতো। ফাঁসি দেওয়ার জন্য যে রশি ব্যবহার করা হতো তা, শুকরের চামড়া দ্বারা তৈরী করা হতো। যেহেতু মুসলমানদের আকীদা-বিশ্বাস অনুযায়ী শুকর হারাম, তাই সাধারণ লোকের ধারণা ছিল, যে মুসলমান শুকরের রশি দ্বারা ফাঁসিতে ঝোলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। অর্থাৎ ইংরেজরা হিন্দুস্থানী মুসলমানদের জীবন অতিষ্ট করে তোলার জন্য এসব আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। এসব ছাড়া ও গদর বা বিদ্রোহের নামে যে আন্দোলন দানা বেঁধে উঠেছিল, সবগুলো ইংরেজরা দমন করে ফেলে এবং এসব আন্দোলনের প্রায় দুইশ নেতাকে নিষ্ঠুরভাবে ফাঁসিতে ঝুলায়।
মাওলানা মাহমুদুল হাসান উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমই ছিলেন না, তিনি ছিলেন, অত্যন্ত দূরদর্শী রাজনীতিবিদ ও তার নিকট মুসলিম বিশ্বের চলমান পরিস্থিতি ছিল স্পষ্ট। বিশেষতঃ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ইংরেজদের আধিপত্য বিস্তার, মুসলমানদের ওপর উৎপীড়ন-নির্যাতন, তুর্কি খেলাফতের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র ইত্যাদির প্রতি তার তীক্ষè দৃষ্টি ছিল। তাই কর্ম জীবনের শুরুতেই তিনি সুচিন্তিত কর্মপদ্ধতি স্থির করে রেখেছিলেন। তা বাস্তবায়নের কাজ তখনই আরম্ভ করেছিলেন, যখন সমগ্র মহাদেশে রাজনৈতিক তৎপরতা নামেমাত্র শুরু হয়েছিল বিশেষভাবে তিনি ভারতবর্ষ ও তুরস্কের ঘটনাবলীকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় রেখেছিলেন। প্রথম মহাযুদ্ধ শুরু হওয়ার এবং তাতে তুর্কীদের অংশগ্রহণ করার যেসব ঘটনা ঘটে চলছিল, তাতে মাওলানা মাহমুদুল হাসান বাধ্য হয়েছিলেন তার উদ্যোগ-প্রয়াসগুলোকে আরো সম্প্রসারিত করতে। তার প্রাথমিক তৎপরতাগুলো ইংরেজদের দৃষ্টিতে ছিল। তাই তিনি হিন্দুস্থান থেকে হেজাজ যাত্রা করেন। সে সময় তুর্কীদের পক্ষ হতে গালেব পাশা তুর্কীর অধীনস্থ হেজাজের গভর্নর ছিলেন। মাওলানা মাহমুদুল হাসান তার সাথে একাধিকবার মিলিত হন এবং তার কাছ থেকে মহাদেশের মুসলমানদের নামে বাণী লাভ করেন। এ সময় তুর্কী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আনোয়ার পাশার সাথেও তার সাক্ষাৎ হয়। আনোয়ার পাশা হিন্দুস্থানের পূর্ণ স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি তুরস্কের পক্ষ হতে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন এবং আনোয়ার পাশাও হিন্দুস্থানী মুসলমানদের নামে বাণী প্রেরণ করেন। এসব রচনায় ব্রিটেনের বিরুদ্ধে ভারতীয় মুসলমানদের জেহাদ তুর্কীর পক্ষ হতে অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। এগুলোর মধ্যে গালেব নামা নামে খ্যাত চিঠিখানার কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তা মহাদেশে প্রেরণ করা হয় এবং হিন্দুস্থান ও সীমান্ত উপজাতিদের মধ্যে গোপনে বিলি করা হয়, কিন্তু ইংরেজরা সতর্ক থাকায় জেহাদের এ ঘোষণাপত্রের মাত্র কিছু কপি বিলি করা হয়েছিল। গালেব নামা তথা ঘোষণাটি ছিল এই: এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকার মুসলমানগণ সর্ব প্রকার অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আল্লাহর পথে জেহাদের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। আল্লাহ কাদের কাইয়ুমের শোকর তুর্কী বাহিনী এবং মোজাহেদীন ইসলামের দুশমনদের ওপর জয়ী হয়েছে। এজন্য হে মুসলমানগণ, এ খ্রিস্টান সরকারের ওপর আক্রমণ করো, যার বন্ধনে তোমার পড়ে রয়েছে। নিজেদের সমস্ত উদ্যোগ-প্রচেষ্টাকে সুদৃঢ় সংকল্পের সাথে শত্রুকে খতম করার জন্য উৎসর্গ করো এবং তাদের প্রতি ঘৃণা ও শত্রুতা প্রকাশ করো।
পরিশেষে বলে রাখা দরকার যে, মাওলানা মাহমুদুল হাসান একজন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন, মোহাদ্দেস, মোফাসেসর ও সাধক হওয়ার পাশাপাশি উপমহাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রপথিক ছিলেন। তিনিই ইংরেজদের কবল থেকে ভারতীয় মুসলমানদের মুক্ত করার জন্য এক অভিনব কৌশল রেশমী রুমাল আন্দোলন করতে গিয়ে তার শেষ জীবনের পাঁচ বছর কারা নির্যাতন ভোগ করেন। তার এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে তুর্কি খেলাফতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বানচাল করাও ছিল অন্যতম। তার এ আন্দোলন-সংগ্রামের প্রভাব তুর্কিদেরও আলোড়িত ও প্রভাবিত করেছিল, যার প্রকৃষ্ট প্রমাণ তুর্কি নেতৃবৃন্দের সাথে তার বিভিন্ন সাক্ষাৎকার এবং ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের সমর্থন লাভ। ১৯২০ সালের ৮ জুন পাঁচ বছর জেলজুলুম ভোগ করার পর আসীরে মাল্টা নামে খ্যাত হয়ে মুক্তি লাভ করেন। বাকি কমাসও তার নানাকর্ম তৎপরতা থেমে থাকেনি এবং একই বছর তিনি ৩০ নভেম্বর (মতান্তরে) ৩ নভেম্বর তিনি ইনতেকাল করেন।
(সমাপ্ত)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Khalilur rahman ১৫ আগস্ট, ২০২২, ১২:৩৬ এএম says : 0
আর একটু আগে আমার দেখা দরকার ছিল ,,যক খুব ভালো লাগল এমত ইতিহাস হলে আবার লিখে গুগলে দিলে আমরা উপককিরিত হব
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন