বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সহকারী অধ্যাপক মুবাশ্বার হাসান সিজারের অবস্থান এখনও শনাক্ত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত ৫ দিন ধরে তদন্তে সিজার সম্পর্কে কোন সুনিদিষ্ট তথ্য পাচ্ছে না আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রযুক্তিসহ সব ধরনের বিষয় মাথায় রেখেই সিজারকে উদ্ধারে তৎপরতা চলছে বলে জানিয়েছেন তদন্তের সাথে জড়িত পুলিশ ও র্যাবের একাধিক কর্মকর্তা। খিলগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান গত রাতে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, নিখোঁজ মুবাশ্বার রহমান সিজারের অবস্থান সম্পর্কে আমরা এখনও কোনো তথ্য পাইনি। তবে তাকে উদ্ধারের জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে আমরা তার ব্যক্তিগত ও কর্মস্থলসহ সব বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত করছি। তিনি জানান, সর্বশেষ রাজধানীর আগারগাঁয়ের রোকেয়া সরণীর লায়ন্স ভবনে তার অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত হলেও সিজারের নিখোঁজের প্রকৃত কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছে, সিজারের মোবাইল ফোনের কললিস্টের তথ্য ধরেই তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। তাকে উদ্ধারের জন্য যেকোনো ক্লু খুঁজে পেতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। গত ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন সহকারী অধ্যাপক মুবাশ্বার হাসান। ওই দিন সন্ধ্যার পর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার বাবা মোতাহার হোসেন খিলগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি নম্বর- ৪৭১। নিখোঁজ মুবাশ্বার হাসান সিজার ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক পাশ করেন। একসময় সাংবাদিকতাও করেছেন তিনি। পরে যুক্তরাজ্যে মাস্টার্স ও অস্ট্রেলিয়ায় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। সিজারের বাবা মোতাহের হোসেন বলেন, নিখোঁজের ৫দিন পার হতে চলেছে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ এখনও আমার ছেলেকে উদ্ধার করতে পারেনি। বিষয়টি তারা তদন্ত করছে, তবে কি কারণে সিজার নিখোঁজ হলো-তার কোনো দৃশ্যমান কারণ এখনও খুঁজে পায়নি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সিজারের ছোট বোন তামান্না তাসমিন বলেন, আমরা খুব সাধারণ একটি পরিবার। আমাদের ওপর কোনো প্রকার হুমকি নেই। আমাদের পারিবারিক কোনো ঝামেলাও নেই। সিজারের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ সিজার নিজের নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ছিলেন। গত অক্টোবর মাসে তার বাসায় এক ব্যক্তি ছাত্র পরিচয় দিয়ে তাকে খোঁজ করেছিল। এই কারণেই দক্ষিণ খিলগাঁয়ের ১২/৩ নম্বর রোডের জে/২৫ বাসার সামনে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। তবে এই বিষয়ে থানায় কোনো জিডি বা দরখাস্ত করা হয়নি। বাড়ির সামনে বাড়তি নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে সিজারের বাবা মোতাহের হোসেন বলেন, দক্ষিণ খিলগাঁও এলাকাটি অনেকটা নিরিবিলি। তাই বাড়িতে চোর-ডাকাতের হামলা থেকে রেহাই পেতেই এখানকার সোসাইটির সবার সঙ্গে আলোচনা করেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন