বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

উম্মাতের বুদ্ধিজীবীদের দায়িত্ব

মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
তাবিঈগণের পরবর্তী যুগ অর্থাৎ তাবে-তাবিঈগণের যুগে এ বিষয়ক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সোনালী অধ্যায় রচিত হয়। এই যুগেই প্রধান চার মাযহাবের প্রকাশ ও তাদের ফিকহ সংকলন সম্পন্ন হয়। ইতিহাসের কাল পরিক্রমায় সা¤প্রতিক বিষয়ের ইসলামী বিধান নির্ণয়ের যেসব পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছিল বর্তমান সময়ে এসে তাকে আমরা নিম্নোক্ত চারটি পদ্ধতি সীমাবদ্ধ করতে পারি:
শরঈ দলীল অর্থাৎ ইসলামী আইনের উৎস কয়টি সে বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। ইমাম তুফী তার রিসালাহ ফী রিআতুল মাসলাহা’ গ্রন্থে ইসলামী আইনের ১৯টি উৎ সের বর্ণনা দিয়েছেন। উক্ত গ্রন্থের ভাষ্যকর ড. আহমদ আব্দুর রহীম সায়েঈ এছাড়া আরও ২৬টিসহ মোট ৪৫টি উৎ সের উল্লেখ করেছেন। ফকীহগণ শরীয়াতের দলীলসমূহ দু’ভাগে ভাগ করেছেন- প্রথম ভাগ: যেসব উৎসবের ব্যাপারে আলিমগণ একমত হয়েছেন। এর মধ্যে কুরআন ও সুন্নাহ, ব্যাপারে সকলেই একমত। জমহুর ফকীহগণ ইজমা ও কিয়াস শরীয়াতের উৎস হওয়ার ব্যাপারে একমত। মুতাযিলা মতাদর্শী নাজ্জাম ও খারিজীগণ ইজমা এবং জাফিরিয়্যাহ ও জাহিরিয়্যাহ স¤প্রদায় কিয়াসের ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
দ্বিতীয় ভাগ: যেসব দলীলের ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে, ইমাম কারাফী তার সংখ্যা বলেছেন ১৫। ড. আবদুর রহীম সায়েঈ এর বর্ণনা অনুযায়ী ৪১। নির্ভরযোগ্য বর্ণনা ও ফকীহগণের মতামতের ভিত্তিতে এর সংখ্যা দাড়ায় ৮।
ইস্তিহসান, ইস্তিসহাব, মাসালিহ, উরফ, াদ্দুজ জারাঈ, সাহাবীগণের ফাতওয়া, মদীনাবাসীর কর্মকান্ড ও পূর্ববর্তী শরীয়াত। রঈ দলীলের ভিত্তিতে বিধান নির্ণয়ের নীতিমালা শরঈ দলীলের ভিত্তিতে সা¤প্রতিক সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে কিছু সাধারণ নীতিমালা রয়েছে, যা অনুসরণ করা জরুরী।
প্রথম: নস অনুধাবনের ক্ষেত্রে শব্দের দালালাত বা শব্দার্থতত্ত¡কে গুরুত্ব দেয়া নসে বর্ণিত শব্দের প্রকৃত অর্থ জ্ঞাত হওয়া ব্যতীত গবেষক কোনক্রমেই তা থেকে বিধান উদ্ভাবন করতে পারবেন না। এ কারণে ইমাম গাযালী শব্দার্থ তত্ত¡কে উসূলে ফিকহের মূলস্তম্ভগণ্য করেছেন। একই কারণে আধুনিক অনেক উসূলবিদ দালালাত তথা শব্দার্থতত্ত¡ অধ্যায়ের নামকরণ করেছেন “দলীল থেকে বিধান উদ্ভাবনের পদ্ধতি বা নীতি’’।
দ্বিতীয়ত: নসকে খারাপ উদ্দেশ্যে ও বিকৃত ব্যাখ্যার মাধ্যমে তার প্রকাশ্য রূপ থেকে বের না করা বাতিনী স¤প্রদায় যেমনটি করে থাকে। আল্লামা ইবনে কাইয়্যিম বলেন, মুফতি মুজতাহিদ বা গবেষক কুরআনের আয়াতের অথবা রাসূল সা.এর সুন্নাহ’র ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে তার উচিৎ নয় যে, নিজের কুপ্রবৃত্তির চাহিদার্থে বিকৃত এমন কারে তবে তার ফাতওয়া বা ইসলামী বিধানের ভাষ্য দেয়ার অধিকার রহিত হবে এবং তাকে পাথর নিক্ষেপ করা হবে।
তৃতীয়ত : বিধানের ফলে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়া সম্পর্কে সচেতন হওয়া অর্থাৎ সাম্প্রতিক বিষয়ের বিধান নির্ণয়ের পরে যাতে এর সাথে শরঈ কোন দলীলের বৈপরিতা সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া।
(চলবে)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন