মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য মাদারীপুরের শিবচরে ২টি স্থান চুড়ান্ত করা হয়েছে। জাপানি সংস্থা নিপ্পন কোই মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চরজানাজাত এবং মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলার মাঝামাঝি স্থানের (মাদারীপুরের কাদিরপুর, কাঠালবাড়ি, কুতুবপুর ও শরীয়তপুরের নাওডুবা) একটি চরসহ দু‘টি স্থান চিহ্নিত করে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য স¤প্রতি একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয় বিমান মন্ত্রণালয়কে। এরমধ্যে চরজানাজাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। চুড়ান্ত তালিকায় থাকা দু’টি স্থানই মাদারীপুর জেলার শিবচর হওয়ায় এলাকার মানুষ খুশি। পদ্মাসেতু, ৬ লেন সড়ক ও রেল লাইনের মতো স্বেচ্ছায় জমি দিতেও রাজি এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণ জমির মালিকরা। তবে সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা ন্যায্য মুল্য পাওয়ার দাবী করেছেন। আর স্থানীয় সাংসদ বলেন-সরকারের লাভ-ক্ষতির বিষয়টি মাথায় রেখেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের পদক্ষেপ নিতে হবে। বিমানবন্দর নির্মাণের চুড়ান্ত তালিকার ২টি স্থানই শিবচরে হওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে জেলার শিবচর উপজেলার চরজানাজাত এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্থাপনের জন্য এলাকার প্রায় ৫ হাজার মানুষ গণ-স্বাক্ষর দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি আবেদন করেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে ২০১৬ সালে জাপানি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোই কোম্পানি লিমিটেডকে কার্যাদেশ দেয় সরকার। সে বছর ১অক্টোবর থেকে প্রতিষ্ঠানটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নির্মাণের জন্য সমীক্ষার কাজ শুরু করে। এই সমীক্ষার জন্য ১৩৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল। পরামর্শক জাপানী কোম্পানী নিপ্পন কোই যে তিনটি স্থান সম্পর্কে মতামত দিয়েছে সেগুলোর কোন্টিতে কত জনবসতি আছে, কত লোককে রি-সেটেলমেন্ট করতে হবে, রি-সেটেলমেন্টে কত টাকা খরচ হতে পারে, নদী শাসনে কত টাকা খরচ হবে, ভূমি অধিগ্রহণে কত টাকা খরচ হতে পারে এসব বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট পরিমান ও ধারনা ছিলনা। এক বছর সমীক্ষা চালানোর পর চলতি বছর অক্টোবর মাসের শেষ দিকে তারা ওই প্রতিবেদন জমা মন্ত্রনালয়ে জমা দেয়। কিন্ত সমীক্ষায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন্ খাতে কত টাকা ব্যয় হবে তা সুস্পষ্ট উল্লেখ না থাকায় বিষয়টি আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিমানবন্দরের জন্য ইতোপূর্বে কেয়াইন, চরবিলাসপুর, মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া, মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চরজানাজাত, রাজৈর, ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা এবং গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার বাঘিয়ার বিল এই আটটি স্থান চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পরিদর্শন ও পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্টরা।
মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনের এমপি নূর-ই-আলম লিটন চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের চুড়ান্ত তালিকায় ২টি স্থানই শিবচরে হওয়ায় আমি আন্তরিকভাবে খুশী। তবে এর কোন্টিতে কত জনবসতি আছে, কত লোককে রি-সেটেলমেন্ট করতে হবে, রি-সেটেলমেন্টে কত টাকা খরচ হতে পারে, নদী শাসনে কত টাকা খরচ হবে, ভূমি অধিগ্রহণে কত টাকা খরচ হতে পারে এসব বিষয় মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। যাতে সরকারের ব্যয় কম হয় এবং জনগণও উপকৃত হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন