মেডিকেল ভিসা ছাড়া ভারতের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। যে কারণে অনেক বাংলাদেশী রোগী হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
গতকাল রবিবার বিকেলে সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে এসংক্রান্ত সম্পুরক প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সরকারী দলের সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার রোগী ভারতে চিকিৎসা সেবা নিতে যান। কিন্তু বর্তমানে ভারত সরকার মেডিকেল ভিসা ছাড়া বিদেশীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া বন্ধ করেছে। এমনকি সেখানকার হাসপাতালগুলোতে সংসদ সদস্যদের কাছেও মেডিকেল ভিসা দেখাতে বলা হচ্ছে। ফলে অনেকেই চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমনকি হয়রানিরও শিকার হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে কোন উদ্যোগ নেওয়া হবে কিনা?
জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু দেশ। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের বড় ধরণের অবদান রয়েছে। সেখানে এমপিদের কুটনৈতিক ভিসা নিয়ে গেলে চিকিৎসা সেবা পেতে কোন বাধা থাকার কথা নয়। আর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশন থেকে মেডিকেল ভিসা পেতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তিনি আরো বলেন, ভারতে গিয়ে চিকিৎসা সেবা পেতে সমস্যা হচ্ছে, বিষয়টি আমার জানা নেই। সংসদ সদস্য যেহেতু বিষয়টি উত্থাপন করেছেন, সেহেতু বিষয়টি নিয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবো। কোন সমস্যা থাকলে, তা ভারতীয় হাই কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জনশক্তি রপ্তানী বাড়ছে : বাংলাদেশ থেকে বিদেশে জনশক্তি রপ্তানী বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র অনুপস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে তিনি এ তথ্য জানান।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম ওমরের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ হতে বিশ্বের ১৬৫টি দেশে কর্মী প্রেরণ করা হয়। ২০১৫ সালে বিদেশগামী কর্মীর সংখ্যা ছিলো ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার ৮৮১জন। ২০১৬ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৭ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭৩১জনে উন্নীত হয়। আর চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বিদেশগামী কর্মীর সংখ্যা ৮ লক্ষ ৩৪ হাজার ৭৭৩ জন।
নারী শ্রমিক নির্যাতন \ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রী জানান, বিদেশে নারী শ্রমিকরা নির্যাতনের শিকার হন, এমন ঢালাও অভিযোগ সঠিক নয়। ঢালাও ভাবে এমনটি হলে আমাদের মা-বোনরা সেখানে যেতো না। কোথাও কোথাও এমনটা হয়ে থাকে। তবে এমন ঘটনার খবর পেলে দূতাবাসগুলো ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, অনেক স্থানেই অনেক কারণে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে থাকে। তবে বিদেশে গিয়ে কেউ নির্যাতনের শিকার হলে আমরা সকলেই কষ্ট পেয়ে থাকি। এবিষয়ে মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসগুলো সতর্ক রয়েছে।
জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমরের সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনা শুধু সৌদি আরব নয়, কুয়েত, মালেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে হয়ে থাকে। তবে এমন ঘটনার খবর পেলে দূতাবাসগুলো তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। বিদেশে শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার সচেষ্ট রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন