‘ইয়া রাসূলাল্লাহ’ শব্দটি একটি পূণ্যময় আহবান বা ডাক। ইয়া রাসূলাল্লাহ বলে রাসূল (সাঃ)Ñ কে ডাকা যায় কিনা, জিকির করা যায় কি? এটা অনেকে জানতে চান। ‘‘ইয়া রাসূলাল্লাহ’’ বাক্যটিকে রাসূল (সাঃ) এর সাথে আহŸান কারীর নিবিড় সম্পর্কটি সর্বাগ্রে ফুটে ওঠে তা হলো প্রেম ভালবাসার। রাসূল (সাঃ) এর সাথে তার প্রিয় উম্মতের অকৃত্রিম ভালবাসা ও সম্পর্কটি হচ্ছে রুহানী বা আত্মীক। সাহাবাদের সময় থেকে অদ্যাবধি মুসলমানগণ এই ভালবাসা ও সম্পর্কের কারনে অনণ্য ও অতুলনীয়। দুনিয়ার অন্য কোন জাতি নিজ নবীর প্রতি এই এশ্ক বা ভালবাসা বুকে ধারন করে না। এ অবস্থা চলে আসছে দীর্ঘ চৌদ্দশত বছর এর বেশী হতে। এক্ষেত্রে দীর্ঘ সময়ের ব্যবধান, হাজার হাজার মাইলের দূরুত্ব কিছুই নয়। বিষয়টা হচ্ছে প্রেম ও ভক্তির।
রাসূল (সাঃ) বলেছেন ঃ ‘‘ আমার নিকট জিবরাইল (আঃ) আসলেন এবং বললেন, ‘‘ নিশ্চয়ই আমার ও আপনার প্রভু আপনাকে বলেন, আপনি কি জানেন আমি কি রূপে আপনার জিকির কে সমুন্নত করেছি? আমি বললাম আল্লাহ সর্বোজ্ঞ। তখন আল্লাহ্ বললেন,আমার জিকির করা হয় না বরং আপনার জিকির ও আমার সঙ্গে করা হয়’’ (হাদীসে কুদসী)
আল্লাহ বলেন, ‘‘ হে ঈমানদারগন! তোমরা আল্লাহ্র দেয়া নেয়ামতের জিকির কর। ’’ সে অনুযায়ী রাসূল (সাঃ) এর জেকের করা আমাদের জন্য অবশ্য কর্তব্য। কারন যিনি হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত। আর তাঁর জেকের করলেই হাদীস অনুয়ায়ী তার উপর দরুদ পাঠ করাও অপরিহার্য কর্তব্য। জেকেরের মধ্যে তাঁর জেকের সর্বপ্রথম। তিনিই সমস্ত সৃজন নির্দ্ধারনের আদি। লওহে মাহফুজে তাঁর জেকেরই প্রথম। আল্লাহ তায়ালা তার নিজ নাম হতে রাসূল (সাঃ) এর নামকে বাহির করেছেন। আল্লাহ্ নিজে তাঁর এ মহান বন্ধুর জেকের করেন। তাই তাঁর জেকের করলেই আল্লাহর জেকের করা হয়। তাঁর নিকট বায়াত হলেও আল্লাহর নিকট বায়াত করা হয়। অতএব রাসূলুাল্লাহ (সাঃ) সব দিক দিয়েই আল্লাহর জেকেরের অন্তর্ভূক্ত।
আল্লাহ বলেন, ‘‘ হে প্রিয় মাহবুব! ‘‘আমি তোমার খাতিরে তোমার জিকিরকে বুলন্দতর করে দিয়েছি । (সূরা- ইন্শিরাহঃ আয়াত-৪)
প্রেমিক সাধক করি কবি সুন্দরইনা বলেছেন - ওয়ারাফায়না লাকা জিক্রাকা এর ছায়া তোমার উপর বিস্তৃত আছে, দুনিয়ার অধিবাসীরা তোমার উচ্চতর শানের কথা কতটুকুই বা জানে, তোমার কথা সর্বত্রই ঐশ্বর্য মন্ডিত ও সুমহান মর্যাদায় শৈল শিখরে প্রোথিত এবং তোমার জিকিরি সর্বত্রই উচ্চকিত ও সমুন্নত, হে সৌভাগ্যশীল! তোমার যশো-গানের পতাকা আরশের ওপর পত পত করে উড়ছে।
তাই দেখা যায়, মুসলমানদের সব ফরজ এবাদতে এবং যে গুলোকে ঐচ্ছিক করা হয়েছে, এর সর্বত্রই রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জিকির বা স্মরনকে একটি বিশেষ স্থান দান করা হয়েছে। কলেমা -“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু- মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’’ এতে প্রভু তার নিজ পবিত্র ও অসীম নামের জিকিেেরর সাথে ‘‘মোহাম্মদের’’ জিকির প্রেম ও ভক্তির সাথে সংযুক্ত করেছেন।
আল্লাহ বলেছেন, ‘‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদের স্মরন করবো।’’ এ প্রসঙ্গে এসে বারোশরীফের মহান ইমাম হয়রত শাহ্ সূফী মীর মাসউদ হেলাল (রাঃ) বলেছিলেন, আমরা মোহাম্মাদের উম্মত আমরা তাকে স্মরন করবো, তাহলে তিনিও আমাদের স্মরন করবেন। রাসূল (সাঃ) কে স্মরন করলে শান্তি ও মুক্তি মেলে। হে আল্লাহর রাসূল! আপনার প্রতি দরূদ ও সালাম, আপনি জিন্দাবাদ।
(চলবে)
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন