শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

রাতারাতি বদলে গেছে মানুষের আচরণ

অর্থনীতি চাঙ্গা, শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার জিম্বাবুয়ের নতুন নেতার

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুগাবে শাসনের অবসানের পর নতুন গণতন্ত্রের বিকাশ এবং কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিয়েছেন জিম্বাবুয়ের নতুন নেতা এমারসন ম্যানানগাগওয়া। আগামী শুক্রবারই তিনি দেশটির নতুন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সরকারী গণমাধ্যম। দেশে ফিরে সমর্থকদের উদ্দেশে এক ভাষণে তিনি ধন্যবাদ দেন সেনাবাহিনীকে এবং সকলের সহযোগিতার আহ্বান জানান। দক্ষিণ আফ্রিকায় আত্মগোপন শেষে গত বুধবার দেশে ফিরে রাজধানী হারারেতে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতায় তিনি অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের কথা বলেন। ম্যানানগাগওয়া বলেন যে, আমি আপনাদের সেবক হবার অঙ্গীকার করছি। আমি সকল দেশপ্রেমিক জিম্বাবুইয়ানদের একতাবদ্ধ হবার আহ্বান জানাই। আমরা সবাই একসাথে কাজ করবো। এখানে কেউই কারো চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নন। আমাদের পরিচয় আমরা জিম্বাবুয়ের নাগরিক। আমরা আমাদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চাই, দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে চাই। আমরা চাই কাজ, কাজ এবং কাজ। ম্যানানগাগওয়ার বেকারত্ব অবসানের এই ঘোষণায় জানু-পিএফ পার্টির সদরদপ্তরের সামনে উল্লাসে ফেটে পড়ে জনতা। ধারণা করা হয় দেশটিতে প্রায় নব্বই শতাংশ মানুষ কর্মহীন। সাবেক এই ভাইস প্রেসিডেন্ট আগামী শুক্রবারই রবার্ট মুগাবের স্থলাভিষিক্ত হয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি টেলিভিশন। ক্ষমতাসীন দল জানু-পিএফ পার্টির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, ৭১ বছর বয়সী নতুন এই নেতা ২০১৮ সেপ্টেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকছেন। মিস্টার মুগাবে এমারসন ম্যানানগাগওয়াকে চাকরিচ্যুত করলে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী। মুগাবের ৩৭ বছরের শাসনের অবসান হলে দেশে ফেরার আগে জিম্বাবুয়ের ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট দেখা করেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার সাথে। তার বক্তৃতায় মি ম্যানানগাগওয়া ধন্যবাদ জানান জিম্বাবুয়ের সেনাবাহিনীকে। একইসাথে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তার পার্শ্ববর্তী দেশ, আফ্রিকান কমিউনিটি এবং বহিঃবিশ্বের সহায়তার প্রয়োজনের কথাও জানান। খবরে বলা হয়, জিম্বাবুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগের ঘোষণার পরেই রাতারাতি যেন দেশের রাজনৈতিক আর সাধারণ মানুষের আচরণও বদলে গেছে। অনেক সংসদ সদস্য পার্লামেন্টের ভেতরেই চিৎকার করে আনন্দ করতে শুরু করেন। যে দেশটিতে এক সপ্তাহ আগেও বেশিরভাগ বিদেশী সংবাদ মাধ্যম ছিল নিষিদ্ধ, সেখানে অনেকে নেতাই এখন এসব সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এই উল্লাসের চিত্র দেখা গেছে রাজধানী হারারের অলিগলিতেও। অনেকে চিৎকার করে, নেচে গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তাদের অনেকের এই আনন্দের কারণ ভয় বা ভীতি থেকে মুক্তি। কিন্তু মি. ক্ষমতার এই পালাবদলে কি পাল্টাতে চলেছে জিম্বাবুয়ে? সম্ভবত নয়। কারণ সম্ভাব্য নতুন নেতা, এমারসন ম্যানানগাগওয়া দীর্ঘদিন রবার্ট মুগাবের ক্ষমতার মধ্যেই ছিলেন। বছরের পর বছর ধরে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্টের সব কাজে সহযোগিতা করে গেছেন। শুধুমাত্র যখন উত্তরসূরি নির্বাচনের প্রশ্নে গ্রেস মুগাবের নাম সামনে এলো, তখনি তিনি ভিন্ন পথে হাটতে শুরু করলেন। তার মানে এটা পরিষ্কার যে, জিম্বাবুয়ের ঘটনা আসলে কোন বিপ্লব নয়, যে উদারপন্থী গণতন্ত্রপন্থীরা ক্ষমতায় চলে এলেন। নতুন নেতাদের উপর ব্যাপক কোন পরিবর্তনের চাপও নেই। বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন