শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সান্তাহার স্টেডিয়াম গেইটে ফের তালা

| প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ মনসুর আলী আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে : আদমদীঘি ও সান্তাহার ক্রীড়া সংস্থার রশি টানাটানির অবসান না হওয়ায় সান্তাহার আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামের গেটে ফের ঝুলছে তালা। ফলে সাপ.বেঁজি.শিয়ালসহ নানা ধরনের বন্য জন্তুর বাসায় পরিনত হয়ে ষ্টেডিয়াম দিনে দিনে ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে। ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর তৎকালীন বিএনপি সরকারের অর্থ প্রতিমন্ত্রী এ্যাডঃ মজিবর রহমান প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৩ একর জমির ওপর এই আধুনিক মানের ষ্টেডিয়ম নির্মান কাজের ভিত্তি স্থাপন করেন। ১৯৯৭ সালের ১৮ আগষ্ট তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রী, বর্তমান সকারের সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ওই স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন। এর পর আদমদীঘি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থাকে দেখাশোনার দায়িত্ব দেয়া হয় । সান্তাহার শহর থেকে আদমদীঘি উপজেলা সদরের দুরত্ব ১০ কিলোমিটার। ফলে উপজেলা পরিষদ বা উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা এ পর্যন্ত কোন খেলাধুলা এমনকি কোন জাতীয় প্রোগ্রামও করেনি। ১৯৯৮ সালে সান্তাহার পৌর ক্রীড়া সংস্থা গঠন হওয়ার পর থেকে স্টেডিয়ামে খুলনা, যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, নাটোর, রাজশাহী, নওগাঁ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, নীলফামারী, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন, জেলা দল নিয়ে জিয়া স্মৃতি, বঙ্গবন্ধু পৌর গোল্ডকাপসহ বড় বড় টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। টুর্নামেন্টগুলোতে দেশের স্বনামধন্য খেলোয়ার সাব্বির, আলফাজ, মুন্না, জয়, নকিব, কায়সার হামিদ, মুনসহ বহু দেশসেরা খেলোয়াড় অংশগ্রহন করেন। এরপর স্টেডয়িামের তত্বাবধান নিয়ে সান্তাহার ক্রীড়া সংস্থা ও আদমদীঘি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার মধ্যে শূরু হয় রশি টানাটানি। যেহতেু সান্তাহার শহর থেকে আদমদীঘি উপজেলা সদরের দুরত্ব ১০ কিলোমিটার । ফলে বন্ধ হয়ে যায় সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহর পৌরসভা এবং আশপাশ এলাকার খেলাধুলা। একপর্যায়ে এলকার খেলাধুলার স্বার্থে সান্তাহার পৌরসভা গত ২০০০ সালে স্টেডিয়ামটি দেখাশোনার দায়িত্ব চেয়ে বগুড়া জেলা প্রসাশক ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে একটি আবেদন করে। আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং জেলা প্রশাসক, বগুড়া স্মারক নং-জে প্র-বগুড়া-৩৫-২০০১-২৯, তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০০১ এর পত্রের প্রেক্ষিতে সান্তাহার স্টেডিয়ামটিকে সান্তাহার পৌরসভা বরাবরে ন্যস্ত করা হলো বলে উল্লেখ করে তৎকালীন জাতীয় ক্রীড়া পরষিদের পরিচালক মো. হাবিবুর রহমানের স্বাক্ষর করা অনুমোদনের অনুলিপি বগুড়া জেলা প্রশাসক ও আদমদীঘি উপজেলা পরিষদকে দেয়া হয়। এরপরও আনুষ্ঠানিকভাবে সান্তাহার পৌর ক্রীড়া সংস্থাকে স্টেডিয়াম হস্তান্তর না করায় উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার অধিনে থাকায় খেলাধুলার মাঠের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় সান্তাহার পৌর ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম। শহরের রতবাড়ী এলাকার জনৈক সাইদ নামের এক ব্যক্তি স্টেডিয়াম দেখাশোনার নামে দিনরাত মুলগেটে তালা মেরে প্যাভেলিয়নের রুমগুলোতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করায় বন্ধ হয়ে পরেছে এলাকার স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীসহ সব ধরনের খেলোয়াদের খেলাধুলা। ফলে এলাকায় খেলাধুলার স্থবিরতা দেখা দেয়। অন্যদিকে ষ্টেডিয়ামটিতে সাপ বেজি, শিয়ালসহ নানা ধরনের জন্তুসহ গোচারন ভুমিতে পরিনত হয়ে দিন দিন ষ্টেডিয়ামটি ধংসের দিকে যাচ্ছে। উল্লেখ্য চলতি বছরের ২৬ ফেব্রæয়ারী সান্তাহারে প্রধান মন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বগুড়া জেলা প্রসাশক মোঃ আশরাফ উদ্দীন স্টেডিয়াম পরির্দশনে এসে এর দুরবস্থা দেখে অসšোÍষ প্রকাশ করেন এবং সান্তাহার পৌর কর্তৃপক্ষকে জরুরী ভিত্তিতে স্টেডিয়ামের ঝোপ জঙ্গঁল পরিস্কার করার নির্দেশ দেন। বগুড়া জেলা প্রসাশকের নির্দেশ পেয়ে সান্তাহার পৌর কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ ৮ বছর পর এর সংস্কার কাজ করে। ফলে উজ্জীবিত হয় সান্তাহার পৌর ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম। দীর্ঘ ৮ বছর বন্ধ থাকা সান্তাহার পৌর ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম চ্লু করতে সান্তাহার পৌরসভার সভাকক্ষে এই সংস্থার কার্যনির্বাহি কমিটির এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি পৌরমেয়র তোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সিদ্ধান্ত হয় আগামী দিনে জাতীয় প্রোগ্রামগুলোসহ সবধরনের অনুষ্ঠান উল্লেখিত স্টেডিয়াম মাঠে পালনের মধ্য দিয়ে সান্তাহার আধুনিক ষ্টেডিয়ামকে খেলাধুলার উপযোগী করে এলাকার যুব সমাজকে খেলাধুলায় ফিরিয়ে এনে সান্তাহার ষ্টেডিয়ামকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষাসহ ক্রীড়া সংস্থার সকল কার্যক্রম শুরুর ঘোষনা করা হয়। এ পর্যায়ে গত বছর স্টেডিয়ামে স্বাধীতা দিবস পালনসহ একটি ক্রিকেট টুর্নামে›র আয়োজন করে তা সুনামের সাথে সমাপ্তও করা হয়। এরপর আর সান্তাহার পৌর ক্রীড়া সংস্থা খেলাধুলার কোন আয়োজন না করায় স্টেডিয়ামের গেটে ফের তালা ঝুলে থাকায় এটি আবারো দিন দিন ধংসের দিকে যাচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন