হেফাজতে ইসলামের আমীর হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ও প্রবীণ আলেমেদ্বীন আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, ইসলামের আক্বিদা-বিশ্বাস হেফাজত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য। আল্লাহ’র পবিত্র কোরআন ও রাসূল (সাঃ)-এর সুন্নাহর অনুসরণ ছাড়া মানবতার কল্যাণ নেই। হেফাজতে ইসলাম মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদা ও তাহযীব-তামাদ্দুন সংরক্ষণে সর্বাত্মক ও আপোষহীন ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। কোনো রাজনৈতিক লক্ষ্য হেফাজতের নেই। কারো সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক স্বার্থভিত্তিক বন্ধুত্ব বা শত্রæতা নেই। কোন নির্বাচনে হেফাজত কাউকে মনোনয়ন বা সমর্থন দেবে না। রাজনৈতিক ইস্যুর আড়ালে ইসলামকে টার্গেট করা হলে সর্বস্তরের মুমিন-মুসলমান তথা নবীপ্রেমিক, ইসলামপ্রিয় জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো। গতকাল (শনিবার) নগরীর জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত দু’দিনব্যাপী শানে রেসালত সম্মেলনের শেষ দিনে সভাপতির বক্তব্যে হেফাজত আমীর উপরোক্ত কথা বলেন।
হেফাজত আমীর বলেন, আল্লাহ ও তার রাসূল (সাঃ)’র অবমাননাকারী নাস্তিকদের শাস্তির বিধান কায়েম করা হলে নাস্তিক তৈরি হবেনা। বাংলাদেশের জমিনে ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকদের শাস্তির বিধান অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। হেফাজত আমীর আরও বলেন, তাকওয়াভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্যে ব্যাপকভাবে কোরআন-হাদীসের শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। ঘরে ঘরে দ্বীনি শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে হবে। ইত্তিবায়ে সুন্নাহ্’র ওপর আমল করে চলতে পারে মতো হক্কানি আলেমদের দাওয়াতের যিম্মাদারি ব্যাপকভাবে আদায় করতে হবে। খোদাভীরু নেতৃত্ব সৃষ্টি হলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা হবে। অন্যায়-অবিচার ও অনাচার, ঘুষ ও দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য দূর হয়ে যাবে। সাম্য, ইনসাফ ও ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে সমাজের সর্বস্তরে।
আল্লামা শফী বলেন, হেফাজতে ইসলাম একটি আধ্যাত্মিক ও আত্মসংশোধনমূলক সংগঠন। এটি সার্বজনীন অরাজনৈতিক একটি প্লাটফরম। মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদা, সভ্যতা-সংস্কৃতি, ইসলামের বিধান ও প্রতীকসমূহের হেফাজত করার জন্যে মুসলমানদের সচেতন করে তোলা এবং ধর্মীয় ইস্যুতে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন অব্যাহত রাখা হেফাজত ইসলামের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিক হেফাজতকে নিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন করে আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ জনগণের মধ্যে বিবেদ সৃষ্টি করছে।
হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ইসলাম এদেশের মাটির গভীরে প্রোথিত। যে কেউ এ দেশ থেকে ইসলামকে ফুৎকারে উড়িয়ে দেয়ার মতো বোকামী ও দুঃসাহসিকতার স্পর্ধা দেখালে হেফাজতে ইসলাম এ দেশের তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে সর্বময় তার মোকাবিলা করবে ইনশাআল্লাহ।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী, মাওলানা আজিজুল হক আল মাদানী, মাওলানা ড. আ ফ ম খালেদ হোসেন, মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা মুফতি মাহমুদ হাসান, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সাল, মাওলানা মুহাম্মদ সলিমুল্লাহ, মাওলানা মাহমুদ হাসান ফতেপুরী, মাওলানা মুফতি শাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা ইয়াকুব ওসমানী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবী প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন