স্টাফ রিপোর্টার : সরকারের জাতীয় য²া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির হিসাব মতে, দেশে বছরে প্রায় তিন লাখ রোগী য²ায় আক্রান্ত হলেও এর মধ্যে মাত্র দুই লাখ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। বাকি প্রায় এক লাখ য²ারোগী এখনো শনাক্তের বাইরে থেকে যাচ্ছেন। রোগ শনাক্তকরণ প্রযুক্তির আরো আধুনিকায়ন হলে এ বাধা অনেকটা দূর হবে। এছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে যেসব য²ারোগী চিকিৎসা নেন তাদের তথ্যাদিও পুরোপুরি সরকারি তথ্যকেন্দ্রে আসতে হবে। য²ারোগী শনাক্তকরণের তথ্য সরকারি-বেসরকারি সব উৎস থেকে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করতে একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ আইন কার্যকর করা হলে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তা সহায়ক হবে।
গতকাল (সোমবার) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস কক্ষে অনুষ্ঠিত য²া নিয়ন্ত্রণবিষয়ক সাংবাদিক ওরিয়েন্টশনে জাতীয় য²া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির বিভাগীয় পরামর্শক ডা: আহমেদ পারভেজ জাবিন এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য বিষয়ে কর্মরত ২৫ জন সাংবাদিক অংশ নেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় য²া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি), বাংলাদেশ হেল্থ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ) ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এনটিপির ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কনসালটেন্ট ডা: মো: মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএইচআরএফ) সহ-সভাপতি ডা: নুরুল ইসলাম হাসিবের সঞ্চালনা অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনটিপির ডিভিশনাল কনসালটেন্ট ডা: আহমেদ পারভেজ জাবিন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর ডা: আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি, কর্মসূচি সহায়তা ও প্রযুক্তিবিষয়ক পরিচালক কে এ এম মোরশেদ। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন ব্র্যাক টিবি কর্মসূচির প্রোগ্রাম হেড ডা: শায়লা ইসলাম এবং অ্যাডভোকেসি ফর সোস্যাল চেইঞ্জ বিভাগের কর্মসূচি সমন্বয়কারী সদরুল হাসান মজুমদার।
মূল প্রবন্ধে ডা: আহমেদ পারভেজ জাবিন বলেন, সারা বিশ্বে ৩০ লাখ য²ারোগীকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। বাংলাদেশে এ সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণ ফুসফুসজনিত য²ার বাইরে অন্য ধরনের য²ারোগী শনাক্ত করা কঠিন। আরো বেশি য²ারোগী শনাক্ত করার লক্ষ্যে সরকার এখন শহর এলাকা ও শিল্পাঞ্চল বিশেষ করে গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিক, নি¤œবিত্তদের বস্তি এলাকা ও ভাসমান মানুষের মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এতে উল্লিখিত য²া নিয়ন্ত্রণের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে ওষুধ-প্রতিরোধী য²া, শিশু য²া, শহরে নি¤œবিত্ত ও ভাসমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অপ্রতুল জিন এক্সপার্ট মেশিন, নতুন ও আরো কার্যকর ওষুধের অভাব ইত্যাদি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে ওষুধ-প্রতিরোধী য²ারোগীর সংখ্যা বর্তমানে ৩ হাজার ৬৯৯ জন। য²ারোগী শনাক্তের জন্য এ মুহূর্তে ৩৯টি জিন এক্সপার্ট মেশিন থাকলেও চালু আছে ৩৩টি। সরকারের লক্ষ্য প্রতি জেলায় অন্তত একটি জিন এক্সপার্ট মেশিন পৌঁছানো, যা দিয়ে দ্রæত য²া শনাক্ত করা সম্ভব। এতে আরো জানানো হয়, ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে য²ারোগের ঝুঁকি ২ দশমিক ৫ থেকে ৩ শতাংশ বেশি। ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি, কর্মসূচি সহায়তা ও প্রযুক্তিবিষয়ক পরিচালক কে এ এম মোরশেদ বলেন, য²া নিয়ন্ত্রণে মানুষের আচরণগত প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি নতুন আইন নিয়ে সরকার ও ব্র্যাক যৌথভাবে কাজ করতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন