শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সাভারে বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে চলছে মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপ

সেলিম আহমেদ, সাভার থেকে | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাভারের বংশী নদীর কুল ঘেষে ধামরাইয়ে কুল্লা ইউনিয়নে গড়ে উঠা একটি বিনোদন কেন্দ্রের ভিতরে চলছে মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কার্য্যকলাপ। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করছে। তবে ওই বিনোদন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের দাবী তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বাড়তি আয়ের জন্য এ অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের সীতিপাল্লি গ্রামের আলাদিন’স পার্কে গিয়ে এসব চিত্র দেখা গেছে। আলাদিন’স পার্কে ঢুকার পর দেখা গেছে বিভিন্ন রাইডস থাকলেও সেগুলো অকেজো। ফলে বিনোদনের নামে প্রকাশ্যে চলছে অশ্লীলতা। বিনোদনের জন্য তৈরী হলেও এখানে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই পার্কটিতে অসংখ্য প্রেমিক যুগলের ভীড়। ২০০ টাকার টিকেটে দর্শনার্থীরা ঢুকে ঘন্টার পর ঘন্টা যে কর্মকান্ড করে সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন।
এদের মধ্যে অধিকাংশই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোর-কিশোরী বা যুবক-যুবতী। আবার আলাদিন’স কটেজে ৩ থেকে ৪হাজার টাকায় এক দিনের জন্য রুম ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কার্য্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে যুবক-যুবতীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানান, পার্কের ভিতরে বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য রাইড থাকলেও সেগুলো সচল নেই। ভিতরে ঢুকলে চোখে পড়ে ঝোপঝাড়ের ভিতরে যুবক-যুবতী ও কিশোর-কিশোরীরা আপত্তিকর অবস্থায়। এছাড়া কটেজ ভাড়া নিয়েও চলছে দেহব্যবসাসহ মাদক ব্যবসা। এসবের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে পার্ক কর্তৃপক্ষের ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে হুমকি দেয়া হয়। তাই পরিবারের কথা চিন্তা করে কাউকে কিছু বলি না। আলাদিন’স পার্কের ব্যবস্থাপক (রিসোর্ট) কামরুল ইসলাম নেওয়াজ জানান, তাদের তৃতীয় তলার রিসোর্টে ৪৪টা রুম রয়েছে। ২৪ ঘন্টার জন্য ৩হাজার ও ৪হাজার টাকার প্যাকেজ রয়েছে। ৩ হাজার টাকার প্যাকেজের রুমে মেয়েদের বাহির থেকে নিয়ে আসতে হয়। আর ৪হাজার টাকার প্যাকেজে ভিতরেই ব্যবস্থা আছে। আপনি ছবি দেখে পছন্দ করলেই রুমে পাঠিয়ে দেয়া হবে। এছাড়ও আনন্দ ফুর্তির (মদ, বিয়ারের) ব্যবস্থাও রয়েছে।
রিসোর্টের কর্মচারী মো: সোহেল জানায়, আমি এক বছর ধরে এখানে কাজ করছি। তবে পার্কে দর্শনার্থী একবার আসলে সে দ্বিতীয়বার আসতে চায়না। কারন হিসেবে বলেন, কোন রাইড সচল নাই। এখানে ছেলেরা মেয়েদের নিয়ে ফুর্তি করতে আসে। ৩/৪হাজার টাকা দিয়ে রুম ভাড়া নিয়ে ভিতরে কি করে আপনি বুঝেন না উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দেয় কর্মচারী সোহেল।
তবে স্থানীয় কুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কালিপদ সরকার জানান, পার্কের ভিতরে মাদক ব্যবসা ও নারী দিয়ে ব্যবসা করার বিষয়টি এখনও আমার নলেজে আসেনি। যেহেতুর আমি বিষয়টি জানলাম অবশ্যই এর ব্যবস্থা নেওযা হবে। তবে অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে আলাদিন’স পার্কের ব্যবস্থাপক কোরবান আলী জানান, আমাদের এখানে কোন মাদকের ব্যবসা হয়না। এটা পার্ক, বিনোদনের জন্য লোকজন আসে। তবে পার্কের একটি রাইডও চালু করে দেখাতে পারেন তিনি। তবে কর্মচারী ও এক কর্মকর্তার দেয়া বক্তব্যের বিষয়টি তুলে ধরলে তিনি পরে সব স্বীকার করে বলেন, লাখ লাখ টাকা খরচ করে পার্ক করা হয়েছে। ওইসব না চললে চালান উঠবে কিভাবে। পরে সাংবাদিক পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে এ প্রতিবেদককে বিভিন্ন লোক দিয়ে তদবির করেন।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রিজাউল হক জানান, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স। তবে আমি জানি ওই পার্ক এখনও চালুই হয়নি। যেহেতু আপনি আরো এ্যাডভান্স তথ্য দিলেন এবং কটেজে অসামাজিক কার্য্যকলাপ হয় যেহেতু বিষয়টি আমি দেখছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন