শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিদেশী আগ্রাসনে পোল্ট্রি শিল্প

হাসান সোহেল | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে দেশের পোল্ট্রি শিল্প। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দৌড়াত্বে সম্ভাবনাময় এ শিল্পে দেশি উদ্যোক্তারা অস্তিত্ব হারাতে চলছে। সুস্পষ্ট নীতিমালা না থাকার সুযোগে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পোল্ট্রি শিল্পে কর্তৃত্ব ও আধিপত্য বিস্তার করছে। ইতোমধ্যে শিল্পের ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে বিদেশি ৭টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে পাঁচটি ভারতীয়। এই সাতটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কি পরিমাণ বিনিয়োগ করতে পারবে কিংবা কি পরিমাণ লভ্যাংশ নিয়ে যেতে পারবে তার সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। ফলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো একচেটিয়া বাজার দখলের কারণে দেশীয় কোম্পানিগুলো বাজার হারাচ্ছে। এছাড়া আরও কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠান ব্যবসার জন্য পাইপলাইনে রয়েছে। অথচ কয়েকদিন আগেও যেখানে দেশীয় ১লাখ খামারী ছিল। যা বর্তমানে ৭০ হাজারে নেমে এসেছে। যদিও ২০০৭ সালে খামারীর সংখ্যা ছিল দেড় লাখের বেশি। এদিকে বিদেশি কোম্পানীগুলো ৩শতাংশ সুদে ব্যাংক ঋণে ব্যবসার সুযোগ পেলেও দেশীয় ব্যবসায়ীরা ১২ থেকে ১৩ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছে। তবে ব্যাংক ঋণের সুবিধাও পাচ্ছে কেবল বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান। আর ঋণ সুবিধা না পেয়ে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামার এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। আরো অনেকগুলো বন্ধ হওয়ার পথে। আর তাই বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। এ জন্য লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দাবি জানিয়েছেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। এছাড়া খামারীদের ব্যয়ের ৭০শতাংশই পোল্ট্রি ফিডে। যা বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়। এই আমদানীতে ট্যাক্স ফ্রি সুবিধা না পাওয়ায় আরও বিপাকে রয়েছে পোল্ট্রি শিল্প। অপরদিকে লাইভ স্টোক ডিপার্টমেন্ট থেকে অনুমতি না নিয়ে বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট থেকে অনুমতি নিয়ে বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা করছে। খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, এ খাতের কোন সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ও নীতিমালা নেই। এ অবস্থা চরতে থাকলে পর্যায়ক্রমে পুরো পোল্ট্রি শিল্পই বিদেশীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। বাংলাদেশের যে সব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি শিল্পে জড়িত রয়েছে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। কারণ, বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার মতো অর্থনৈতিক সামর্থ্য দেশীয় প্রতিষ্ঠানের নেই। বিশেষ করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং ব্যক্তি পর্যায়ের খামারীরা বিপাকে পড়বে। তাদের মতে, এই শিল্পে বিদেশি আগ্রাসন বাড়লেও সরকারের নজর নেই। নেই বাজারের নিয়ন্ত্রণও। একাধিক ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, এই শিল্প অভিভাবকশূণ্য। কারণ আজ পর্যন্ত এই শিল্পের কোন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে পাওয়া যায়নি।
সূত্র মতে, ২০০৮ সালে প্রণীত নীতিমালায় পোল্ট্রিকে প্রাণিজ কৃষিখাত ঘোষণা দিয়ে এ শিল্পে শস্যখাতের সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়। যা কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। অথচ দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে অবদান রাখছেন দেশীয় খামারীরা। বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) মতে, পোল্ট্রি শিল্পে ব্যাংক ঋণ সুবিধা থাকলেও সেই সুবিধা পাচ্ছে কেবল বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান। আর ঋণ সুবিধা না পেয়ে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামার এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। আরো অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পথে। তাদের মতে, ২০০৭ সালের দিকে দেশে প্রায় দেড় লাখ পোল্ট্রি খামার থাকলেও গত ১০ বছরে অর্ধেকেরও বেশী কমে বর্তমানে ৬৫ হাজারের মতো খামার টিকে আছে। এছাড়াও আছে ব্রিডার ফার্ম, হ্যাচারি, মুরগির খাবার তৈরির কারখানা। পোল্ট্রি শিল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে লিংকেজ শিল্প, কাঁচামাল ও ওষুধ প্রস্তুতকারক এবং সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠান। জাতীয় অর্থনীতিতে পোল্ট্রি শিল্পের অবদান প্রায় ২ দশমিক ৪ শতাংশ।
সংস্থাটি জানায়, বর্তমানে ৭টি বিদেশি কোম্পানি সরকারের অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। এর মধ্যে ৫টিই ভারতের। কোম্পানিগুলো হচ্ছে, ভিএইচ গ্রæপ, গোদরেজ, সেগুনা, টাটা এবং অমৃত গ্রæপ। এছাড়া থাইল্যান্ডের সিপি এবং চীনা প্রতিষ্ঠান নিউ হোপ দাপটের সঙ্গে বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। এসব বড় কোম্পানি ব্যাংক ঋণ সুবিধা পেলেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি কোম্পানিগুলো ঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ফলে ভবিষ্যতে বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি দেশি কোম্পানিগুলো জিম্মি হয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক গ্রামের মামুন কবিরাজ বলেন, আমার আগে পোলট্রি খামার ছিলো। কিন্তু ব্যাংকে বিভিন্ন সময় আবেদন করেও ঋণ পাইনি। যার কারণে ডিলারদের কাছ থেকে বাকিতে মুরগীর বাচ্চা, খাবার ও মেডিসিন কিনতে হয়েছে। ঋণ সুবিধা পেলে ডিলারদের কাছ থেকে বেশি দামে পণ্য কিনতে হতো। লোকসানেও পড়তে হতো না। এখন ফার্ম তুলে দিয়ে ফার্মেসী ব্যবসা শুরু করেছি।
একই গ্রামের নুরুল ইসলাম বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে খামার দিয়েছিলাম। কিন্তু ভ্যাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেটা বেশি দিন টিকে থাকেনি। মানুষের কাছ থেকে ধার দেনা ও এনজিও থেকে লোন নিয়েছিলাম। কিন্তু বছর না পেরুতেই খামার বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এভাবে বরিশালসহ দেশের অধিকাংশ অঞ্চলের ক্ষুদ্র খামার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের মহাসচিব মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ১৯৮০ সালের দিকে বাণিজ্যিকভাবে পোল্ট্রি শিল্পের বিকাশ হয়। দেশে প্রাণীজাত প্রোটিনের বড় যোগানদাতা এখন পোল্ট্রি শিল্প। মোট চাহিদার শতকরা ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ প্রোটিন আসে পোল্ট্রি থেকে। পোল্ট্রি শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ জড়িত বলে উল্লেখ করেন তিনি। পোল্ট্রি খাতের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশে উন্নীত করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ১৬ শতাংশ। ২০২১ সালের মধ্যে এ হার ২০ শতাংশে পৌঁছবে।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বর্তমানে পোল্ট্রি শিল্পে লেনদেন হচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার ৪২ কোটি টাকা। শহর ও নগর থেকে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত পুষ্টি চাহিদারও বিরাট একটি অংশ পোল্ট্রির মাধ্যমেই পূরণ করা যাচ্ছে। পাশাপাশি রপ্তানিতেও নজড় দেয়া হচ্ছে। এমন অবস্থায় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেওয়ার পরিবর্তে ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে সরকারের সহযোগিতা এবং পোল্ট্রি শিল্পের জন্য আমদানকৃত খাদ্যে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হলে শিল্পটি দেশে নীরব বিপ্লব ঘটাতে পারে। কারণ, এ শিল্পের জন্য শহুরে দামী জমি বা শিল্প প্লটের দরকার পড়ে না। ব্যক্তি পর্যায়ের উদ্যোক্তারা এমনকি গ্রামে তাদের নিজেদের বাড়ির আঙ্গিনাতেই খামার তৈরি করে নিতে পারে। কিন্তু সব সম্ভাবনাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ব্যাংক ঋণসহ সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ার কারণে। অন্যদিকে রয়েছে বিদেশি কোম্পানিগুলোর অনিয়ন্ত্রিত কর্মকান্ড। অনেক বেশি পুঁজি বিনিয়োগ করে সক্ষমতার দিক থেকে তারা শুধু দেশি খামারিদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে না, টাকার জোরে বাজারও দখল করে নিচ্ছে। মুরগি ও ডিমের দাম বাড়বে কি কমবে তা যেমন তাদের ইচ্ছার বিষয়ে পরিণত হয়েছে তেমনি পুরো বাজারও চলে যাচ্ছে তাদের নিয়ন্ত্রণে। সময়ে সময়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করার মধ্য দিয়ে তারা এমনকি প্রচুর বাড়তি মুনাফাও লুটে নিচ্ছে। কিন্তু মূলত যথেষ্ট পরিমাণ পুঁজির অভাবে দেশি উদ্যোক্তা ও খামারিরা বিদেশিদের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারছে না। প্রতিযোগিতায় তো টিকে থাকতে পারছেই না। এমন অবস্থায় পোল্ট্রি শিল্পের ব্যাপারে ২০০৮ সালের নীতিমালা সংস্কার করে নতুন এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করার দাবি উঠেছে। দেশি উদ্যোক্তা ও খামারীরা যাতে ব্যাংক ঋণসহ সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন এবং বিদেশি কোম্পানিগুলো যাতে যথেচ্ছাভাবে কর্মকান্ড চালাতে ও বাজার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্যবসায়ীরা এ শিল্পকে অভিভাবকশূণ্য এবং নজড় নইে বললেও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আইনুল হক বলেছেন, পোল্ট্রি শিল্পের অগ্রগতিতে সরকার ইতিবাচক। তবে বেসরকারি উদ্যোগে পোল্ট্রি শিল্পে যে দ্রæততার সাথে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে এবং হচ্ছে, সে বিবেচনায় সহযোগিতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি। ডা. আইনুল বলেন, পোল্ট্রি ডিম ও মাংসের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি ভ্যালু-অ্যাডেড প্রোডাক্টের দিকেও নজর দিচ্ছে সরকার। শুধু তাই নয় বাংলাদেশ থেকে পোল্ট্রি পণ্য রপ্তানীকে সহজতর করতে আট বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, গার্মেন্টস শিল্পের পর কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখছে পোল্ট্রি শিল্প। এ খাতে নিরব বিপ্লব ঘটছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। অথচ এই খাতে সরকারের নজড় নেই। তিনি এ খাতের উন্নয়নে এবং বিদেশী জিম্মিদশা থেকে বের হতে পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান। অন্যথায় ভবিষ্যতে এই শিল্প বিদেশীদের দখলে চলে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। মসিউর রহমান বলেন, ব্যক্তি পর্যায় থেকে এ শিল্পকে অনেক উপরে নিয়ে আসা হয়েছে। সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে বার বার বলা হলেও কোন সহায়তা না পাওয়ায় আমরা হতাশ। তাদেরকে বুঝাতে পারছিনা। তাই এখনই পদক্ষেপ না নিলে একটি সময় আসবে যখন আমরা পিছিয় যাবো বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ অঞ্জন বলেন, পোল্ট্রি শিল্পের আন্তর্জাতিক হালাল মার্কেটে বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আর তাই দেশীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রপ্তানীর জন্যও প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে পোল্ট্রি ফিডের উৎপাদন ব্যয়, ভুট্টার দাম ও আমদানিতে অগ্রিম কর কমালে পোল্ট্রি শিল্প থেকে বছরে চারশত কোটি টাকা আয় করা সম্ভব বলেছেনÑশামসুল আরেফিন খালেদ। তিনি জানান, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এই শিল্প নতুন বিপ্লবের পথ দেখিয়েছে। এখানে যেসব মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত, তার প্রায় ৪০ শতাংশই নারী। গ্রামীণ অর্থনীতিতে, নারীর ক্ষমতায়নে কৃষির পরই সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে বাংলাদেশের বিকাশমান এই শিল্পটি।
সূত্র মতে, দেশে বর্তমানে মুরগির মাংসের দৈনিক উৎপাদন প্রায় ৪হাজার মেট্রিক টন। প্রতিদিন ডিম উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় দুই কোটি ৮০ লাখ। একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চার সাপ্তাহিক উৎপাদন প্রায় এক কোটি ৬৮লাখ। পোল্ট্রি ফিডের বার্ষিক উৎপাদন ৬০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বাণিজ্যিক ফিড মিলে উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় ৯৫ভাগ ফিড। মুরগির বিষ্টা দিয়ে এখন বায়োগ্যাস ছাড়াও তৈরি হচ্ছে জৈব সার। অবশ্য পোল্ট্রি শিল্পের বিকাশ ও সফলতার পেছনের গল্পটি কষ্ট, সাধনা আর অসীম ত্যাগের। ২০০৭, ২০০৯ এবং ২০১১ সালে বার্ড ফ্লু’র ভয়াবহ সংক্রমণে এ শিল্পের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রায় ৫০ শতাংশ খামার বন্ধ হওয়ার পরও এ শিল্পের অগ্রগতি থেমে থাকেনি। বেসরকারি পর্যায়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি মানের উদ্যোক্তাদের অক্লান্ত শ্রম সাধনায় এসেছে সাফল্য, ঘটেছে নীরব বিপ্লব। বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের তথ্য মতে, দেশ এখন মুরগির ডিম ও মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এ শিল্প যে দেশের ডিম ও মাংসের শতভাগ চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি, কোন কোন সময় অতিরিক্ত উৎপাদন হচ্ছে। ডিম ও মুরগির মাংস রপ্তানি করে বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে এখাত সংশ্লিষ্টরা। আশার খবর হলো, সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০২১ সালের মধ্যে বছরে ১৫০০ কোটি ডিম ও ২০লাখ মেট্রিক টন মুরগির মাংস উৎপাদনের স্বপ্ন দেখছে শিল্পটি। যা পূরণ করতে এ খাতে কমপক্ষে ৬০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রয়োজন পড়বে। এই বিনিয়োগ নিশ্চিতে সিঙ্গেল ডিজিটে ব্যাংক ঋণের সুদ, বীমার আওতায় পোলট্রি খাতকে নিয়ে আসা ও সরকারি সহায়তা দেয়ার সুপারিশ খাত সংশ্লিষ্টদের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
আরাফাত ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ২:১০ এএম says : 1
মনে হচ্ছে, ভারতীয়রা আমাদের সকল সেক্টরকে দখল করে নেবে
Total Reply(0)
কাসেম ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ২:১০ এএম says : 0
সকলকে এব্যাপারে সচেতন হতে হবে
Total Reply(0)
খাইরুল ইসলাম ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ২:১১ এএম says : 0
দেশি দেশি উদ্যোক্তাদের বাঁচাতে সকলকে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নিতে হবে
Total Reply(0)
Babul ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১১:৫২ এএম says : 0
Thanks Daily Inqilab For Imprortant Thinking.....
Total Reply(0)
আশিক ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:২৬ পিএম says : 0
সম্ভাবনাময় এই খাতটিকে ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে।
Total Reply(0)
আবির ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:২৯ পিএম says : 0
দেশি উদ্যোক্তা ও খামারীরা যাতে ব্যাংক ঋণসহ সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন এবং বিদেশি কোম্পানিগুলো যাতে যথেচ্ছাভাবে কর্মকান্ড চালাতে ও বাজার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার
Total Reply(0)
সাজিদ ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:৩০ পিএম says : 0
ঋণ সুবিধা না পেয়ে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামার এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। আরো অনেকগুলো বন্ধ হওয়ার পথে। আর তাই বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো।
Total Reply(0)
শাহেদ ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১১:৩৯ পিএম says : 0
ভারত বাংলাদেশকে এমন ফাঁস দিবে যে ফাঁস খুলে বেরিয়ে আসা এ জাতির পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়বে
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন