বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অন্য কোনো আকারে ৫৭ ধারা যেন অন্তর্ভুক্ত না হয় টিআইবি

টিআইবি’র অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার পেলেন নয় সাংবাদিক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা অন্য কোনো আইনে কোনো আকারে যেন তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা অন্তর্ভুক্ত না হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) আয়োজিত এক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। টিআইবি ধানমন্ডি কার্যালয়ে ‘অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার২০১৭ ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাবিষয়ক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতিসংঘ ঘোষিত ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদযাপনে টিআইবির সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন টিআইবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ড. এ. টি. এম. শামসুল হুদা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন টিআইবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এম. হাফিজউদ্দিন খান ও অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিল করা হবে বলে স¤প্রতি তথ্যমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংবিধানের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকারসংশ্লিষ্ট ধারাগুলো এবং স্বাক্ষরিত আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় এমন কোনো আইন প্রণয়ন করা সরকারের উচিত নয়। তাই ৫৭ ধারা বাতিল করে- তা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা অন্য কোনো আইনে কোনো আকারে অন্তর্ভুক্ত না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. গওহর রিজভী বলেন, সাংবাদিকরা অনেক সাহসের সঙ্গে কাজ করছে এবং সাংবাদিকতার গুরুত্ব সমাজ ও সরকারকে বুঝতে হবে। তিনি বলেন, দুর্নীতি থাকলে দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর করা যায় না। আমাদের যদি দারিদ্র্য দূর করার উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে অবশ্যই দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করতে হবে। দুর্নীতির প্রতিবেদন করতে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে হুমকিসহ বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে হয় এমন অভিযোগের জবাবে গওহর রিজভী বলেন, গণমাধ্যমকে হস্তক্ষেপ করার কোনো নির্দেশনা সরকারের পক্ষ থেকে কাউকে দেয়া হয়নি।
ড. এ. টি. এম. শামসুল হুদা বলেন, বর্তমানে গণমাধ্যমের মালিকানা ব্যবসায়ীদের হাতে থাকায় ব্যবসার ঝুঁকির কথা চিন্তাা করে গণমাধ্যম মালিকরা অনেক সময় সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে চান না। তিনি সাংবাদিকদের পেশাগত কাজের মাধ্যমে দেশের সেবা করতে নিজেদের টিকে থাকার উপযুক্ত কৌশল উদ্ভাবন ও অবলম্বনের পরামর্শ দেন।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার ওপর অনুষ্ঠিত সংলাপে বক্তব্য কয়েকজন রিপোর্টার। এসময় বক্তারা বলেন, অসাধু কিছু ব্যক্তির অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সার্বিকভাবে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ হাতে থাকা সত্তে¡ও সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যম অনেক ক্ষেত্রে সংবাদ প্রকাশ করতে সাহস পাচ্ছেন না। দুঃখজনক এ পরিস্থিতি গণমাধ্যম, গণতন্ত্র বা রাষ্ট্রের জন্য কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে না।
নয় জন পেলেন টিআইবি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরুস্কার: সংলাপ শেষে টিআইবির অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০১৭-এর বিজয়ীদের পুরস্কার দেয়া হয়। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার পাঁচজন সাংবাদিক ও চারজন ভিডিও চিত্রগ্রাহকসহ মোট নয়জন সাংবাদিক এ বছর টিআইবির অনুসন্ধানীমূলক সাংবাদিকতা পুরস্কার পান। প্রিন্ট মিডিয়া (জাতীয়) পুরস্কার পান দৈনিক প্রথম আলোর অরূপ রায়। প্রিন্ট মিডিয়া (আঞ্চলিক) বিভাগে খুলনার দৈনিক পূর্বাঞ্চল পত্রিকার এইচ এম আলাউদ্দিন। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া (প্রতিবেদন) বিভাগে মাছরাঙা টেলিভিশনের বদরুদ্দাজা বাবু। এছাড়া মাছরাঙা টেলিভিশনের সিনিয়র ভিডিও চিত্রগ্রাহক মেহেদী হাসান সোহাগকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া (প্রামাণ্য অনুষ্ঠান) বিভাগে যৌথভাবে বিজয়ী হয়েছেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সবুজ মাহমুদ এবং চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের মো. জাহিদ মামর ইসলাম সাদ। এছাড়া ভিডিওচিত্র ধারণের বিশেষ ভূমিকার জন্য ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের রাকিবুল হাসান ও গোলাম কিবরিয়া এবং যমুনা টেলিভিশনের ভিডিও চিত্রগ্রাহক তানভীর মিজানকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়। প্রত্যেক পুরস্কার বিজয়ী সাংবাদিককে এক লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদ এবং প্রত্যেক ভিডিও চিত্রগ্রাহককে ৫০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদ দেয়া হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন