বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চারদিকে যুুদ্ধ ধ্বংস আর বিপর্যয়

ফিরে দেখা বিজয়ের মাস

হোসেন মাহমুদ : | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

একাত্তরের ১২ ডিসেম্বর। যুদ্ধ এবং শুধু যুদ্ধই চলছিল চারদিকে। ধ্বংস আর বিপর্যয়। বিজয়ের আর কোন আশা ছিল না মনোবল হারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনী ঢাকাকে চারদিক থেকেই ঘিরে ফেলেছিল। দেশের বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া পাকিস্তানি বাহিনীর বিচ্ছিন্ন ইউনিটগুলোর ঢাকায় ফেরার আর কোন উপায় ছিল না। এ অবস্থায় ঢাকাকে ঘিরে আত্মরক্ষার শেষ কৌশল গ্রহণ করতে চেয়েছিল পাক সেনাবাহিনী। লেঃ জেনারেল নিয়াজিসহ পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তাদের মতে, মার্কিন সপ্তম নৌবহরের বঙ্গোপসাগরে উপস্থিতির কথিত আশ্বাস কিছুটা আশার সঞ্চার করেছিল। জানা যায়, এদিন মার্কিন সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগর থেকে ২৪ ঘন্টা দূরত্বে পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পৌঁছেনি। জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে ১২ ডিসেম্বর রাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী শর্তসম্বলিত একটি প্রস্তাব প্রেরণ করেন। এ প্রস্তাবে তিনি বলেন, পাকিস্তান তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে, বাংলাদেশ সরকারের সাথে যুক্তিসঙ্গত আপসরফা করলে তার দেশ পাক-ভারত যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব বিবেচনা করতে রাজি আছে। অন্যদিকে পাকিস্তানে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত এদিন পাক-সামরিক জান্তার সকল আশার গুড়েবালি ঢেলে দিয়ে বলেন, চীনের কাছে বেশি কিছু আশা করা ঠিক হবে না। এদিন যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় জাতিসংঘে পাক-ভারত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করে। এ প্রস্তাবে পূর্ব-পাকিস্তান থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের কথাও বলা হয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন পুনরায় ভেটো দেয়ার কারণে এ প্রস্তাব আর পাস হতে পারেনি। এদিন জুলফিকার আলী ভুট্টো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অত্যন্ত আবেগময় ভাষায় বক্তৃতা করেন। তবে তা কোন কাজে আসেনি। এদিকে ঢাকায় মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করা হয়। এদিন বৃটিশ রাজকীয় বিমানবাহিনীর বিমানে করে বিদেশী নাগরিকদের ঢাকা থেকে অপসারণের কাজ শুরু হয়। ওদিকে লন্ডনের হাইড পার্কে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে হাজার হাজার বাঙালি জড়ো হয়। সমাবেশ শেষে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান ও শেখ মুজিবের মুক্তির দাবী জানিয়ে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান ও শেখ মুজিবের মুক্তির দাবী জানিয়ে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। ১৯৭১ সালের এদিনে সরিষাবাড়ী, আশুগঞ্জ, আদমদীঘি, ভাঙ্গা, কালিয়াকৈর, ভেড়ামারা, ডিমলা, গোপালগঞ্জ, ঘোড়াঘাট, গোবিন্দগঞ্জ, চান্দিনা, ডোমার, নরসিংদীসহ বিভিন্ন এলাকা শত্রুমুক্ত হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন