শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

থার্টিফার্স্ট নাইটে উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা

বিজয় দিবস শহীদ দিবস বড়দিন ও থার্টিফার্স্ট নাইটকে সামনে রেখে নিরাপত্তা জোরদার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিজয় দিবস, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বড় দিন এবং থার্টিফার্স্ট উপলক্ষে রাজধানীতে নেয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্থা ব্যবস্থা। বিজয় র‌্যালিক কেন্দ্র করে পোষকদারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকেও থাকবে র‌্যাব পুলিশ। থার্টিফার্স্ট নাইটে উন্মুক্ত স্থানে কোনো সমাবেশ করা যাবে না। তবে ইনডোর প্রোগ্রাম করা যাবে। কেউ ইনডোর প্রোগ্রম করতে নিরাপত্তার প্রয়োজন মনে করলে তাদের নিরাপত্তা দেয়া হবে। এছাড়া মহান বিজয় দিবস ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসেও নিরাপত্তা জোরদার থাকবে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ যানবাহন চলাচলের ওপর বিশেষ দিক নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি। সংশ্লিষ্ট সুত্রে এসব তথ্য জানিয়েছে।
গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও ৩১ ডিসেম্বর থার্টিফার্স্ট নাইটে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। তবে ঘরোয়া আয়োজন করা যাবে। এক্ষেত্রে নিরাপত্তার প্রয়োজন হলে পুলিশ তার ব্যবস্থা করবে। এই রাতে মাদক ব্যবহারকারীদের নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আতশবাজি বা পটকা ফোটানো যাবে না।
গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বড়দিন ও থার্টিফার্স্ট নাইটের নিরাপত্তা নিয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও ডিএমপি জানায়, রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা ও বিদেশি খ্রিস্টান মেহমান যেসব এলাকায় থাকবেন এমন সব এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ঢাকা শহরে পাঁচ হাজারের বেশি নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত থাকবে। এর বাইরেও সাদা পোশাকে পর্যাপ্তসংখ্যক নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া বড় চার্চগুলোতে মেটাল ডিটেকটরসহ সিসি ক্যামেরা লাগানোর জন্য অ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতার জন্য চার্চের স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে।
ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, বিজয় দিবস, শহীদদিবস, বড়দিন ও থার্টিফার্স্ট নাইটকে সামনে রেখে রাজধানীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পোষাকদারী ৫ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে সাদাপোষাকে গোয়েন্দা সদস্যরা। খ্রিস্টানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে তাদের চার্চগুলোতে থাকবে পুলিশের বিশেষ টহল। আজ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মহানগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থায় যানবাহন চলাচলেও কিছু দিক নিদের্শনা রয়েছে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ডিএমপি’র ট্রাফিক নির্দেশনা
আজ বৃহস্প্রতিবার ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মিরপুরস্থ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গমনাগমন করবেন। এ উপলক্ষে এলাকায় সুষ্ঠুভাবে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রনের জন্য সকাল ৬ টা হতে ৯ টা পর্যন্ত সকল প্রকার সার্ভিস ট্রান্সর্পোর্ট (বাস/ট্রাক/হিউম্যান হলার/খ্রি হুইলার ইত্যাদি), রিক্সা, রিক্সা-ভ্যান মিরপুর মাজার রোড (মাজার রোড ক্রসিং হতে মিরপুর ১ নং ক্রসিং পর্যন্ত) পরিহার করে নিম্নে বর্ণিত বিকল্প সড়কে চলাচল করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানিয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছে।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ জানায়, যে সকল যানবাহন আশুলিয়ার দিক থেকে বেঁড়ীবাধ দিয়ে মিরপুরের দিকে আসবেন, সে সকল যানবাহন নবাবেরবাগ ক্রসিং হতে বামে মোড় নিয়ে শাহআলী থানা রোড ব্যবহার করবেন।
যে সকল যানবাহন মাজার রোড ক্রসিং দিয়ে শাহআলী মাজার সংলগ্ন এলাকা অতিক্রম করবে, সে সকল যানবাহন টেকনিক্যাল মোড় হয়ে দারুস সালাম রোড ব্যবহার করবেন।
যে সকল যানবাহন মিরপুর-১০ নং হতে গাবতলী’র দিকে যাবে, সে সকল যানবাহন মিরপুর-১ নং দারুসসালাম রোড হয়ে টেকনিক্যাল মোড় হয়ে যাবেন।
উপরোক্ত অনুষ্ঠানসমূহ চলাকালীন যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষা ও যানজট এড়ানোর লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ জনসাধারণের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছে।
এদিকে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইটে ইভটিজিং এবং নেশাগ্রস্তদের নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সারাদেশে খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকায় শান্তিরক্ষা সমন্বয় কমিটি থাকবে। যারা পুলিশের ফোকাল পয়েন্টের সাথে সবসময় যুক্ত থাকবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ৩১ ডিসেম্বর বিকাল থেকে ঢাকা শহরের সব এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এদিন সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত কোনো লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র কেউ বহন বা প্রদর্শন করতে পারবে না। ফায়ার সার্ভিস তাদের রিক্রুইমেন্ট নিয়ে থার্টিফার্স্ট নাইটে প্রস্তুত থাকবে। যেকোনো সমস্যা মোকাবেলায় তারা কাজ করবে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইটে আমাদের দেশে আগে যুবকরা রাতটি উদযাপন করার জন্য বাধাহীনভাবে চলাফেরা করতো। আপনারা দেখেছেন গত দুই তিন বছর ধরে এমন উচ্ছৃঙ্খলভাবে চলাফেরা করতে দেয়া হয় না। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটবে না।
বৈঠক সুত্র জানায়, গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার পর থেকে কোনো বহিরাগত এই এলাকায় ঢুকতে পারবে না। তাদের ঠেকাতে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ র‌্যাব পুলিশ। যারা ৮টার পর ওই এলাকায় যেতে চায় তাদের সার্চ টিম সার্চ করে প্রয়োজন মনে করলে অনুমতি দেবে।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, বাংলাদেশ একটি অসা¤প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ। এখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সবাই একত্রে বাস করি। আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে স্বপ্ন ছিল এটি। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্ত্রী বলেন, খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের কাছ থেকে তাদের অনুষ্ঠান আয়োজনে কী ধরনের আশঙ্কা তা জানার চেষ্টা করেছি। সারাদেশে খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের চার্চগুলোতে কীভাবে নিরাপদে অনুষ্ঠানগুলো হয় এর জন্য আলোচনা করেছি। ঢাকা মহানগরীতে ৭৫টি চার্চ আছে। এর মধ্যে বড় চারটি চার্চ আছে তেজগাঁও, মিরপুর, বনানী এবং বাড্ডায়। এ চার্চগুলোতে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। এ চার্চগুলোতে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন