বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কেশবপুরে কেরোসিন ঢেলে গৃহবধূকে হত্যার চেষ্টা স্বামী ও শাশুড়ী পলাতকৃ

প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কেশবপুর উপজেলা সংবাদদাতা : ওরা আমাকে বাঁচতে দিল না, প্রায় সময় ঘরে দরজা দিয়ে মারে, গ্রামের কেউ ঠেকাতেও আসে না। শত নির্যাতন সহ্য করেও সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্বামীর ঘর করার চেষ্টা করেছি। এরপরও গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। কেশবপুর হাসপাতালের বেডে শুয়ে উপজেলার কুশুলদিয়া গ্রামের গৃহবধূ জেসমিন বেগম কাঁদতে কাঁদতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। গতকাল শুক্রবার সকালে পারিবারিক কলহের জের ধরে পাষাÐ স্বামী ও শাশুড়ী তার ওপর এ মধ্যযুগীয় নির্যাতন চালায়। ঘটনাটি ঘটেছে কেশবপুরের কুশুলদিয়া গ্রামে। এঘটনার পর থেকে ঘাতক স্বামী ও শাশুড়ী পলাতক রয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে ডুমুরিয়া উপজেলার আরশনগর গ্রামের নাছের শেখের মেয়ে জেসমিন খাতুনের সাথে কেশবপুর উপজেলার কুশুলদিয়া গ্রামের শের আলী মোড়লের ছেলে রবিউল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগত টাকাসহ প্রায় ১ লাখ টাকার মালামাল দেয়া হয়। জেসমিন খাতুনের সাথে ঘর-সংসার করা কালে রবিউল ইসলাম পার্শ্ববর্তী বাগদা গ্রামের খোকা মোড়লের মেয়ে মরিয়াম খাতুনের সাথে পরকিয়া সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরই সূত্র ধরে জেসমিন খাতুনকে ভিটা থেকে তাড়াতে তার ওপর চালাতে থাকে নির্যাতন। এরই মাঝে তাদের ঘরে লামিয়া নামের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। লামিয়া খাতুন ভূমিষ্ট হওয়ার ৬ দিনের মাথায় দুশ্চরিত্র রবিউল ইসলাম তার পরকীয়া প্রেমিকা মরিয়াম খাতুনকে বাড়িতে নিয়ে তোলে। এ নিয়ে জেসমিন খাতুনের সাথে তার দাম্পত্য বিরোধ শুরু হয়। এক পর্যায়ে লামিয়ার বয়স যখন ৬ মাস তখন জেসমিন খাতুনকে তালাক দিয়ে রবিউল ইসলাম মরিয়াম খাতুনের সাথে ঘর সংসার শুরু করে। কিন্তু মরিয়াম খাতুনের সাথেও দাম্পত্য জীবন সুখের না হওয়ায় ২০১৩ সালে তাকে তালাক দিয়ে রবিউল ইসলাম পুনরায় জেসমিন খাতুনকে পুনরায় বিয়ে করে ঘর সংসার করতে থাকে। এর এক বছর যেতে না যেতেই রবিউল ইসলাম আবারও মরিয়াম খাতুনের সাথে গোপনে মেলামেশা করতে থাকে এবং বর্তমান তাকে ঘরে তুলতে জেসমিন খাতুনের ওপর চালাতে থাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এরই সূত্র ধরে শুক্রবার সকালে পারিবারিক কলহের একপর্যায়ে রবিউল ইসলাম ও তার মা সখিনা বেগম জেসমিন খাতুনের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তার চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে তাকে রক্ষা করলেও তার শরীরের একাধিক স্থান পুড়ে ঝলসে যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শেখ আবু শাহীন বলেন,আগুনে রোগীর ২০% শরীর পুড়ে গেছে। আপাতত: রোগীর অবস্থা ভালো। তাকে হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি থেকে ওষুধ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন।
এলাকার মেম্বার জাকির হোসেন জানান, জেসমিন খাতুন বহু কষ্ট করে রবিউলকে একটি মোটর সাইকেল কিনে দিয়েছে ভাড়ায় চালিয়ে সংসার চালানোর জন্যে। কিন্তু ওর চরিত্র ভালো না। সে প্রায় সময় তার স্ত্রীকে মারপিট করে থাকে। বিষয়টি নিয়ে সালিস করেও ব্যর্থ হয়েছি।
কেশবপুর থানার এসআই জাকির হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ঘাতক রবিউল ও তার মাকে গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হয়েছিল, তারা পলাতক রয়েছে। নির্যাতিতার পরিবারকে মামলা করতে বলা হয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন