পুঁজিবাজার নিয়ে অধিকাংশ মানুষের ধারণা কম বলেই এ খাতে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে পারেন না। অনেকে আবার শেয়ার বাজার নামটি শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে যান। মনে করেন, শেয়ারবাজার হলো সর্বস্ব লুটে নেয়ার ফাঁদ। কিন্তু বাস্তবে তাদের কনসেপ্টটি সত্যি নয়। যদি আপনি সঠিক নিয়মে বিনিয়োগ করতে জানেন তাহলে এই খাতটি একটি লাভজনক বিনিয়োগ খাত। কিছু নিয়ম রয়েছে যা বিনিয়োগকারীরা যথার্থভাবে অনুসরণ করলে লাভের পাল্লাই ভারী থাকবে। নিয়মসমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
১. সবসময় আপডেইটেড থাকুন : শেয়ারবাজারে সফল না হওয়ার পিছনে বড় কারণ এই খাতটি সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের অজ্ঞতা। সেহেতু বিনিয়োগের পূর্বে যে সকল বিষয়ে আপনার ধারণা থাকা উচিত তা হলো- (ক) দেশের চলমান অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন চলছে, (খ) শেয়ারবাজারের বর্তমান অবস্থা কোন ধাঁচে চলছে, (গ) বিগত বছরগুলোতে শেয়ারবাজারের অবস্থা কেমন ছিল, (ঘ) যে সেক্টরে বিনিয়োগ করতে চান, সে সেক্টরের বর্তমান ও ভবিষ্যত সম্ভাবনা কেমন এবং (ঙ) বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টক সম্পর্কে ধারণা মনে রাখতে হবে। কারণ আপনি যখন শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করবেন, তখন আপনিও হয়ে উঠবেন এই খাতের একটি অংশ। তাই এই খাত সম্পর্কে ধারণা থাকাটা আপনার জন্য একান্ত প্রয়োজন। বাংলাদেশের দুটো স্টক এক্সচেঞ্জে প্রায় ১৫ লাখেরও বেশি বিনিয়োগকারী রয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে আপডেইটেড থাকার জন্য নিয়মিত চোখ রাখবেন। এই দুটো স্টক এক্সচেঞ্জের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে পোর্ট ফোলিও তৈরি করুন : চড়ৎঃভড়ষরড় ওহাবংঃসবহঃ এর মাধ্যমে সহজেই আপনার ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারেন। যেমন ১ লাখ টাকা দিয়ে ১টি কোম্পানির শেয়ার না কিনে, সে টাকা দিয়ে বরং কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কিননু। এতে যে কোনো একটি কোম্পানির শেয়ারের দরপতন ঘটলেও আপনি খুব একটা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন না। সবচেয়ে উত্তম হয়, ভিন্ন ভিন্ন সেক্টরের মাঝে পোর্ট ফোলিও গড়ে তুললে। যদি আপনার হাতে বিনিয়োগ করার মতো যথেষ্ট অর্থ থাকে, তবে কমপক্ষে ৩০টি পোর্ট ফোলিও গড়ে তোলার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকেন শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞরা।
২. দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করুন : শেয়ার কেনার পর তা নিম্নতম তিন বছর বা ততোধিক সময়ের জন্য হাতে রাখুন। আবার অনেক সময় দেখা যায়, হয়তো অল্প সময়ের ব্যবধানে তা বিক্রি করে ফেলাটা লাভজনক মনে হতে পারে। তবুও ধৈর্য্য ধরুন, অপেক্ষা করুন সবচেয়ে মোক্ষম সময়টির জন্যে। বিশ্বের সবচেয়ে সফল বিনিয়োগকারী ওয়ার্নার বাফেট এটাকে সবচেয়ে লাভজনক বিনিয়োগ কৌশল বলে মনে করেন।
৩. শেয়ার কেনা বেচা সংক্রান্ত কিছু টিপস: (১) ভবিষ্যতে একটি শেয়ারের দাম কতো দাঁড়াবে সেটা আগে থেকে অনুমান করার চেষ্টা করুন। যেমন ধরুন- একটি কোম্পানির স্টক প্রাইজ প্রথম ৪ দিন ১% করে নেমে আসে, ৫ম দিন আবার ১০% বেড়ে যায়। এখানে আপনি ১ম ৪ দিন শেয়ার কিনে ৫ম দিন বিক্রি করে নিশ্চিত লাভ করতে পারবেন। কিন্তু বাংলাদেশের শেয়ারবাজার ডবধশ ভড়ৎস হওয়ায় এই পদ্ধতি আপনাকে খুব একটা সুবিধা দিবে না। এখানে স্টক প্রাইজ নির্ধারিত হবে ডিমান্ড সাপ্লাই নীতি অনুসারে। এখানে সবাই চাইবে ১ম চারদিন শেয়ার কিনতে আর ৫ম দিনে তা বিক্রি করতে। ফলে ১ম চারদিনে স্টক এর ডিমান্ড বেড়ে যাবে, ফলে দামও বেড়ে যাবে। যদিও বাস্তবে শেয়ার মার্কেটের খবরাখবর সকল বিনিয়োগকারীদের নিকট পৌঁছাতে একটু সময় লাগে। আর আপনাকে ঠিক সেই সময়টাকেই কাজে লাগাতে হবে। (২) যদি আপনি লসে থাকেন, তবুও কেনা বেচা বন্ধ করে রাখবেন না। প্রতিদিনই আপনার শেয়ারের দাম ওঠানামা করছে। আপনি চেষ্টা করুন দিনের সর্বনিম্ন দামে কিনে আপনার আগের শেয়ার সর্বোচ্চ দামে বেঁচে দেবার। যাকে নেটিং বা নিটিং বলে। (৩) অনভিজ্ঞ লোকজনের পরামর্শ নিবেন না। সবসময় গুজব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। (৪) অধিক লাভের আশায় কখনো ভুল সিদ্ধান্ত নেবেন না। (৫) মনোবল হারাবেন না। আপনি যদি বুঝে বিনিয়োগ করেন তবে আপনার নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। বাজার দর যতই কমুক সেটা সাময়িক। কোম্পানি আপনাকে বছর শেষে মুনাফা ঠিকই দেবে। হয়তো আপনি অধিক লাভ করতে পারবেন না কিন্তু আপনার টাকা হারিয়ে যাবে না। (৬) শপিং করতে গেলে যেমন আপনি সারাবাজার ঘুরে ভালো জিনিসটা কেনেন, তেমনি শেয়ার কেনার সময়ও একই পদ্ধতি অবলম্বন করুন। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ শেয়ার ব্যবসায় না বুঝেই বিনিয়োগ করে বসে, আর মাঝখান থেকে লাভবান হয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। কিন্তুউল্লেখিত কয়েকটা নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন, তবে হয়ে উঠতে পারবেন এই খাতের একজন দক্ষ বিনিয়োগকারী।
শেয়ার শব্দটি ইংরেজি। বাংলায় যার অর্থ দাঁড়ায়-ভাগ, অংশ, সহমর্মিতা ইত্যাদি। ক্ষেত্র বিশেষে ব্যবহার ভিন্ন। কোম্পানির ক্ষেত্রে শেয়ারের অর্থবোধক বাক্য হলো- কোনো কোম্পানির অংশ সাধারণের মধ্যে নির্দিষ্ট অংকে সমান ভাগে ভাগ করে দেয়া। যেমন ন্যাশনাল ব্যাংক তার ১০ টাকা মূল্যের তিন লাখ (৩,০০,০০০) শেয়ার বাজারে বা সাধারণের জন্যে ন্যূনতম ৫০টির একটি স্ক্রিপ্ট বা লট আকারে উন্মুক্ত করে দিয়েছে (এটি সঠিক সংখ্যা নয়, শুধু উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে) যারা ঐ শেয়ারগুলো কোম্পানির প্রোসপেক্টাস দেখে কিনেছেন তারা ঐ কোম্পানির শেয়ার অনুপাতে অংশের মালিক। যার যত বেশি সংখ্যক শেয়ার সে ততো বেশি অংশের মালিক। এককভাবে সর্বাধিক শেয়ারের মালিক কোম্পানির পরিচালনায় নিয়োজিত হওয়ার উপযুক্ত হতে পারেন। এই শেয়ারে যার যত অংশ আছে, সে অনুপাতে শেয়ার হোল্ডাররা কোম্পানির লাভ বা ক্ষতির অংশের মালিকও তারা। শেয়ারবাজার এমন একটি স্থান যেখানে বিভিন্ন সসীম দায়বদ্ধ কোম্পানি (পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি) যারা স্টক এক্সচেঞ্জে নিবন্ধিত শুধু তাদের শেয়ার বেচা কেনা হয়। একে পুঁজি বাজারও বলা হয়। এই বাজারে এসে দুইভাবে ব্যবসা শুরু করা যায়- প্রথম প্রিলিমিনারি অর্থাৎ প্রাথমিক (আইপিও) শেয়ার বাজারে যখন নতুনভাবে আসে তখন দরখাস্ত করে লটারির মাধ্যমে পেয়ে গেলে আপনি যে কোনো একটি কোম্পানির মালিক হয়ে গেলেন আনুপাতিক হারে। দ্বিতীয়টি হলো ব্রোকার হাউজে কেনা বেচার মাধ্যমেও আপনি এই ব্যবসা স্বাচ্ছন্দে চালিয়ে যেতে পারেন। একে সেকেন্ডারি মার্কেট বলে। তবে বুদ্ধির প্রয়োজন, ঠান্ডা মাথায় বুঝে শুনে এই ব্যবসা করলে মুনাফা অর্জন সহজ হয়। ধরুন একজন মানুষ নতুনভাবে বিও অ্যাকাউন্ট খুলে একটি ব্রোকার হাউজে ব্যবসাটি শুরু করলেন। পাশের একজন লোককে জিজ্ঞেস করলো ভাই ব্যাংকের শেয়ারবাজার খুব চাঙ্গা দেখা যাচ্ছে। কোন ব্যাংকটির শেয়ার কিনলে লাভবান হবো। মনে করুন, ২০১০ সালের জুন-জুলাই মাসের ঘটনা। তখন বাজারে মূল্য সূচক খুব তেজি ভাব। দৈনিক লেনদেন প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এমনি এক অবস্থায় একজন মধ্যম শ্রেণির বিনিয়োগকারী যদি এরকম প্রশ্ন করে তাহলে বুঝতে হবে লোকটি শেয়ারবাজার সম্বন্ধে জ্ঞানার্জন না করে মানুষের কথা শুনে এই ব্যবসায় এসেছেন। শুধু লোকের মুখে শুনেছেন বাজারে এখন তেজি ভাব, কিনলেই লাভ করতে পারবেন। তাকে পাশের লোকটি বলেছে, কিনবেন আর বিক্রি করবেন তাহলেই রাতারাতি ধনী হয়ে যাবেন। বাজারের এই তেজি ভাব এখন যেভাবে আছে সেটা কখন যে পড়বে এই জ্ঞান নতুন আসা ঐ ব্যাক্তিটির ছিল না। ছিল না বলেই এ ধরনের মানুষ এই ব্যবসায় এসে চরমভাবে হেরে যায়। এরা অন্যের পরামর্শে শেয়ার বাজারে এসেছেন। অবশেষে সব টাকা হারিয়ে দেউলিয়া হয়ে বাড়ি ফেরা ছাড়া এ ধরনের বিনিয়োগকারীদের করণীয় কিছুই থাকে না। একটি প্রবাদ বাক্য আছে, গুজবে কান দেবেন না। শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে এটা সত্য। উচ্চমূল্যে শেয়ার কিনে এখন দাম নিম্নমুখী। এখন কি করবো, এরকম সমস্যা বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীর মধ্যেই দেখা যায়। তাদের বলবো- উঠতি বা পড়তি বাজারের ধারা বোঝার চেষ্টা করুন। যারা অল্প সময়ের ব্যবধানে শেয়ার ব্যবসা করে লাভবান হতে ইচ্ছুক তারা শেয়ার দরের চক্রাকারে ওঠানামার ছন্দ অনুসরণ করে শেয়ার ব্যবসা করে অল্প সময়ে লাভবান হতে পারেন। তবে এ জন্য কোনো কোনো বিশেষ সময়ে বাজারের ধারা ঊর্ধ্বমুখী না নিম্নমুখী সে বিষয়ে ভালো ধারণা থাকতে হবে। মনে করুন, এ থেকে বি পর্যন্ত পুরো সময়টি বাজারে চাঙ্গাভাব বজায় ছিল। আবার বি থেকে সি পর্যন্ত সময়টিতে মন্দাভাব বিরাজ করেছে, এরপর সি থেকে আবার ডি পর্যন্ত সময়টিতে চাঙ্গাভাব বজায় ছিল। যারা এ স্তরে শেয়ার ক্রয় করেছিল তারা বি স্তরে শেয়ার কিনলে লাভবান হবেন।
বিনিয়োগকারীদের প্রতি পরামর্শ হলো, হুজুগ আর গুজবে কান দেবেন না। তাহলেই অর্ধেক সমস্যার আপনাআপনি সমাধান হয়ে যাবে। মার্কেটে বড় পুঁজির বিনিয়োগকারীরা খেলা খেলতেই আসবে সব সময়। সারা দুনিয়ায় তাই হয়। কিন্তু সবখানে বিনিয়োগকারীরা সতর্ক থাকেন। ফলে ব্লাইন্ডগেম যারাই খেলতে আসে তারা খুব বেশি দূর যেতে পারে না। আর আমাদের মার্কেটের সমস্যা হলো আমাদের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানে যারা আছেন তাদের বেশিরভাগই অসৎ। সমস্যার শুরুতেই তাদের চিহ্নিত করা গেলেও সমাধান হয় না।
টাইকুন একটি জাপানি শব্দ। ‘টাই’ অর্থ মহান, ‘কুন’ অর্থ একজন সফল নায়ক। টাইকুন এমন এক ব্যক্তি যিনি উচ্চাকাক্সক্ষা ও সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নিজেকে এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে অধিষ্ঠিত করেছেন। সফল শেয়ার ব্যবসায়ী হতে হলে আপনাকেও টাইকুন মানসিকতা অর্জন করতে হবে।
প্রতিদিন হাজারো বিনিয়োগকারীর একটি প্রশ্ন। প্রশ্নটির কি উত্তর দিবেন। উত্তরটা হলো সহজ ভাষায় দেখে শুনে একটি ভালো কোম্পানি বা ততোধিক কয়েকটি ভালো কোম্পানির শেয়ার কিনলে খুব সহজেই মুনাফা করা যায়। তবে একটি প্রশ্ন থেকে যায়, কীভাবে বুঝবেন আপনি যে কোম্পানির শেয়ার কিনছেন, সেটি লাভজনক কোম্পানি? আবার শুধু ভালো বা লাভজনক কোম্পানি হলেই তো হবে না, কখন কিনবেন, কী দামে কিনবেন কোম্পানির শেয়ারটি? আবার শুধু কিনলেই তো হবে না, সঠিক সময়ে সর্বোচ্চ লাভে বিক্রি করতে হবে। তাহলেই আপনি শেয়ার ব্যবসায় সাফল্য অর্জনের একটি পর্যায়ে পৌঁছতে সক্ষম হবেন। আপনার অবশ্যই মনে রাখতে হবে- শেয়ারবাজারে প্রতিদিন, প্রতি সপ্তাহে, বিভিন্ন পরিস্থিতির আলোকে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার কারণ ও ধরন বিষয়ে আগাম ধারণা পাওয়ার জন্য বহু ধরনের দিক-নির্দেশনা রয়েছে। এসব দিক-নির্দেশনা কাজে লাগিয়ে অনেক শেয়ার ব্যবসায়ী হয়েছেন কোটিপতি। চরম মন্দাবস্থায়ও অনেকে এ বাজার থেকে প্রচুর মুনাফা অর্জন করেছেন। তবে মনে রাখা প্রয়োজন, কীভাবে সুপ্ত সম্ভাবনাসমূহ কাজে লাগাতে হবে তা বুঝেন এবং জানেন এমন শেয়ার ব্যবসায়ীর সংখ্যা আমাদের দেশে অতি নগণ্য। একটি কথা সত্য যারা ব্যর্থতার পরেও শেয়ার ব্যবসাতে লেগে থাকেন তারা কোনো না কোনো সময়ে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যান। অবশেষে সফল ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। তবে এই সাফল্যের জন্য প্রয়োজন ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতা। এ ক্ষেত্রে যত বেশি জ্ঞান অর্জন করা যাবে, সাফল্যের মাত্রাও সে পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।
যারা মনে করেন, এটা একটা জুয়া খেলা- অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার, সেটা সত্য নয়। মূলত এটা এক ধরনের বিশেষ দক্ষতা, যা অর্জন করা যে কোনো ব্যবসায়ীর পক্ষেই সম্ভব। বিশেষ দক্ষতা বলতে সঠিক সময়ে সঠিক দামে সঠিক শেয়ার বেচাকেনা করার দক্ষতাকে বুঝানো হয়েছে।
একজন শেয়ার ব্যবসায়ীকে (ডে ট্রেডার) মনে রাখতে হবে, ‘শেয়ারবাজারে যখন মন্দাবস্থা বিরাজ করবে এমনকি পত্র-পত্রিকাও শেয়ারবাজার বিষয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করবে তখনই যথাযথ বিবেচনার ভিত্তিতে সুপ্ত সম্ভাবনাময় শেয়ার ক্রয় করতে হবে।
আমার দীর্ঘ ৩৬ বছরের শেয়ার ব্যবসা সংক্রান্ত অভিজ্ঞতার আলোকে যে ধারণাটা জন্মেছে সেটা হলো- অতি তুচ্ছ কারণ, অমার্জনীয় অবহেলা, বেখেয়াল, অজ্ঞতা, অতি আবেগ বা সামান্য পরিশ্রমের অভাবে বহু মানুষ বহু কষ্টে সঞ্চিত মূল্যবান সঞ্চয় ভুলভাবে বিনিয়োগ করে নিঃস্ব হয়েছেন। আবার এও দেখা গেছে সঠিক সিদ্ধান্ত, সময়োচিত উদ্যোগ, দূরদর্শিতা ও সৃজনশীল প্রতিভা কাজে লাগিয়ে বহু মানুষের জীবনে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। প্রকৃতপক্ষে শেয়ার বা পুঁজিবাজার ব্যবসাতে সাফল্য বা ব্যর্থতার ঘটনাটি লটারি বা জুয়া খেলাতে জয়ী হওয়ার মতো ভাগ্যের ব্যাপার নয়। বরং এমন ধারণা পোষণ করা একজন শেয়ার ব্যবসায়ীর জন্য চরম ক্ষতিকর। নিকট ভবিষ্যৎ, একজন টাইকুন (মহান সমর নায়ক) ব্যবসায়ী হিসেবে আপনাকে আজই সেই শেয়ারটি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সাধারণ ব্যবসায়ীগণ যখন বিশেষ একটি শেয়ার ক্রয়ে আগ্রহী থাকবেন না তখনই বিচক্ষণতার মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে শেয়ারটি ক্রয় করতে হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীগণ যখন শেয়ারটি ক্রয়ে অতি উৎসাহী হয়ে উঠবেন তখন শেয়ারটি বিক্রি করে দিয়ে লাভ ঘরে তুলতে পারাটাই একজন সফল ব্যবসায়ীর মূল টার্গেট হওয়া উচিত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন