শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

বিশ্বরেকর্ড ডাকছে তামিমকে

| প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : আগের ম্যাচেই প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১১ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তামিম ইকবাল। আরো দুটি দারুণ মাইলফলক হাতছানি দিচ্ছে দেশসেরা ব্যাটসম্যানকে। আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬৬ রান করলেই ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৬ হাজার রান পূর্ণ করবেন, সেক্ষেত্রে হয়ে যাবে একটি বিশ্ব রেকর্ডও- নির্দিষ্ট কোন ভেন্যুতে হয়ে যাবেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
এমনিতেই টেস্ট ও ওয়ানডেতে দেশের সর্বোচ্চ রানের মালিক তামিম। তাই যাই করেন সেটাই দেশের হয়ে ‘প্রথম’ হয়ে যায়। ওয়ানডেতে ছয় হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ তাই তার কাছে ব্যাপারটা মামুলিই মনে হতে পারে। তবে এক ভেন্যুতে সর্বোচ্চ রানের এই হাতছানি নিশ্চয় ভাবাচ্ছে তামিমকে। এজন্য প্রয়োজন মাত্র ৪২ রান। তাহলে সনাথ জয়সুরিয়াকে পেছনে ফেলবেন তামিম। চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজে তো বটেই সম্প্রতি ওয়ানডেতে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন ড্যাসিং ওপেনার। সিরিজের প্রথম দু’ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেন অপরাজিত ৮৪, পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আউট হন একই স্কোরলাইনে দাঁড়িয়ে। আজও বড় ইনিংস খেলে বাংলাদেশের হয়ে দু’টি রেকর্ড গড়লে তাই অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।
ক্রিকেট বিশ্বে একই ভেন্যুতে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রান করার জন্য ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরুর আগে তামিমের প্রয়োজন ছিলো ২১০ রান। প্রথম দু’ম্যাচে মিরপুরের ভেন্যুতে ১৬৮ রান করে ফেলায় রেকর্ড স্পর্শ করার কাছেই চলে এসেছেন তামিম। তবে ইতোমধ্যে ছাড়িয়ে গেছেন পাকিস্তানের ইনজামাম উল হককে।
একই ভেন্যুতে সবচেয়ে বেশি রান করার বিশ্বরেকর্ডের মালিক এখন শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক সনাথ জয়সুরিয়া। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ৭১ ম্যাচের ৭০ ইনিংসে ২৫১৪ রান করেছেন তিনি। ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে এই তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে ছিলেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম-উল-হক। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৫৯ ম্যাচের ৫৯ ইনিংসে ২৪৬৪ রান করেছেন তিনি। তবে ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম দু’ম্যাচে ১৬৮ রান করায় ইনজামামকে টপকে ২৪৭৩ রানের মালিক এখন তামিম। জয়সুরিয়াকে টপকে যেতে তামিমের প্রয়োজন এখন ৪২ রান।
ত্রিদেশীয় সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১১ হাজার রান পূর্ণ করেছেন তামিম। এ ব্যাপারে তামিম বলেন, ‘মাইলফলকগুলো ভালো লাগে। কেউ দশ হাজার রান করলে এটা অবশ্যই মাইলস্টোন। জানি না কয়জন করছে। সাকিবের ১০ হাজার হয়েছে, মুশফিক সব মিলিয়ে ৩০০ ম্যাচ খেলেছে। এটাও মনে হয় না যে খুব বেশি মানুষ করেছে। আমাদের কাছে ব্যক্তিগতভাবে ভালো লাগে যেটা “দ্যাট ইন্ডিভিজ্যুয়াল ফিলস গুড।’
একই ভেন্যুতে সবচেয়ে বেশি রান করার দৌড় আছেন বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও। জয়সুরিয়াকে টপকে যেতে সাকিবের আরও লাগবে ১৯৬ রান। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম দু’ম্যাচে ৩৭ ও ৬৭ রান করেন সাকিব। এই টুর্নামেন্টে এই ভেন্যুতে এখনও বাংলাদেশের তিনটি ম্যাচ রয়েছে। এই তিন ম্যাচে সাকিব এই অর্জনের সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন, এটি বলার অপেক্ষা রাখে না।
তবে এতকিছুর পরও একটি দুঃখবোধ তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তামিমকে। বার বার সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও যে তা স্পর্শ করতে পারছেন না। গতকাল এর আক্ষেপই ঝরল তার কন্ঠে, ‘সত্যি আমার নিজের কাছে খারাপও লাগে। আমার আরও অনেক সেঞ্চুরি করা উচিত ছিল। সেঞ্চুরির সংখ্যা দুই অঙ্কে যত দ্রæত নেওয়া যায়, সেটা আমার লক্ষ্য থাকবে। ডাবল ফিগার দেখতেও ভাল লাগে, শুনতেও ভাল লাগে। কিন্তু দিনশেষে বলতে গেলে ১৭০টার বেশি ম্যাচ খেলে ফেলেছি। ৪০টির মতো ফিফটি করেছি। সেদিকে থেকে চিন্তা করলে এটা হতাশাজনক যে ৯টি মাত্র সেঞ্চুরি। আমার আরও সেঞ্চুরি করা উচিত ছিল।’
আসলেই তাই। আগের তামিম আর বর্তমান তামিমে ব্যবধান অনেক। পরিসংখ্যানও কিন্তু তাই-ই বলে। ক্যারিয়ারের ৯ সেঞ্চুরির ৫টিই করেছেন সর্বশেষ তিন বছরে। আসলেই তিনি বদলে যাওয়া তামিম। আর এমন সব টুকরো টুকরো বদলে যাওয়ার গল্প মিলেই তো তৈরী হয়েছে আজকের ‘বদলে যাওয়া বাংলাদেশ’।
একই ভেন্যুতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান
খেলোয়াড় ভেন্যু ম্যাচ ইনিংস রান
সনাথ জয়সুরিয়া (১৯৯২-২০০৯) আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম, কলম্বো ৭১ ৭০ ২৫১৪
তামিম ইকবাল (২০০৭-২০১৬) মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা ৭৩ ৭২ ২৪৭৩
ইনজামাম-উল-হক (১৯৯৩-২০০২) শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম ৫৯ ৫৯ ২৪৬৪
সাকিব আল হাসান (২০০৬-২০১৬) মিরপুর শেরে ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা ৭৩ ৭০ ২৩১৮
সাঈদ আনোয়ার (১৯৯০-২০০১) শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম ৫১ ৫১ ২১৭৯

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন