বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা আজ

ভোটার ৩৪৮ জন এমপি

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

আজ বৃহস্পতিবার দেশের ২১তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন কমিশন এই তফসিল ঘোষণা করবে। আগামী ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এই নির্বাচনের ভোটার সংখ্যা ৩৪৮ জন বলে সংসদ সচিবালয় থেকে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজ এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৩ এপ্রিল। ফলে সংবিধান অনুযায়ী, ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হতে হবে। পরবর্তী প্রেসিডেন্টকে হচ্ছেন এটা নিয়ে সরকারী দল আওয়ামী লীগের ফোরামে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের নেতাদের মুখে মুখে যেসব নাম আলোচিত হচ্ছে। এর মধ্যে আবদুল হামিদকেই আবারো প্রেসিডেন্ট পদে রেখে দেয়ার সম্ভাবনার বেশি আলোচিত হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। বৈঠকে সিইসি ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের সচিব ও দুইজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের খসড়া তফসিল, এই নির্বাচনের ভোটার তালিকাসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আইন অনুযায়ী তারা স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। স্পিকারের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি জানান, নির্বাচনের জন্য কমিশন সংসদ সচিবালয় এবং সংসদের কী ধরনের সাহায্য সহযোগিতা পেতে পারে তা নির্ধারিত আছে। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য তারা এসেছিলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশনের খসড়া তফসিল নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আলোচনা করেছেন। তারা কমিশন বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে। নির্বাচন আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাতে নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আরো জানান, ইসির চাহিদা অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংসদ সরবরাহ করেছে। ওই তালিকায় ভোটার হিসেবে ৩৪৮ জন এমপির তালিকা দেয়া হয়েছে। দুইজন এমপির মৃত্যুর কারণে দু’টি আসন শূন্য আছে। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২০তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন মো. আবদুল হামিদ। স্বাধীনতার পর থেকে ১৯ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৬ জন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই হিসোবে আবদুল হামিদ এই পদে সপ্তদশ ব্যক্তি। বাংলাদেশের আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারবেন। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মেয়াদ অবসানের কারণে প্রেসিডেন্ট পদ শূন্য হওয়ার ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তির তারিখের আগের নব্বই থেকে ষাট দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৩ এপ্রিল। ফলে সংবিধান অনুযায়ী, ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হতে হবে। এবিষয়ে স্পিকার জানান, ১৯৯১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আইনের সপ্তম ধারায় বলা হয়েছে- নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি। সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় একবারই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেন এমপিরা। এরপর থেকে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন। আইন অনুযায়ী, একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটের আয়োজন করবেন। নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে নিজের সই দিয়ে তা জমা দেবেন এমপিরা। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদ কক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেওয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে। ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক নীতি-নির্ধারণী সূত্র জানায় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আবদুল হামিদই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন এটা দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ের কথাবার্তায় আঁচ করা গেছে। তবে এরপরও নির্বাচনের দিন-তারিখ ঠিক হলে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডেকে আলোচনা হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হবে আনুষ্ঠানিকতা মেনেই। প্রেসিডেন্ট পদে আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী ঘোষণা করবে। এমপিদের ভোটে সংসদের চলতি ১৯তম অধিবেশনের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচন হবে। সংবিধান অনুযায়ী মেয়াদ অবসানে পূর্ববর্তী ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রেসিডেন্ট পদে একক প্রার্থী হলে ভোটের প্রয়োজন হবে না। একাধিক প্রার্থী থাকলে ভোট হবে। এ ক্ষেত্রে প্রার্থীরা সমান ভোট পেলে লটারি হবে। নির্বাচন বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
এদিকে বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজ এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। সিইসি বলেন, আইন অনুযায়ী তারা স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। নির্বাচনের জন্য কমিশন সংসদ সচিবালয় এবং সংসদের কী ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা পেতে পারে তা নির্ধারিত আছে। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য তারা এসেছিলেন। সিইসি বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নির্বাচন নিয়ে ইসি ব্যর্থ নয়। আইনগতভাবে ইসি নির্বাচনের তফসিল দিয়েছিল। কিন্তু আদালত যদি কারও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু করে থাকে, তাহলে ইসির কিছু করার নেই। কে এম নুরুল হুদা আরও বলেন, স্থগিতাদেশের সত্যায়িত কপি তারা আজ (গতকাল) পেয়েছেন। আলোচনা করে এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন