স্পোর্টস রিপোর্টার : ‘যতই মাথা চুলকাও, রাজা বাঁচাতে পারবে না!’- পুরনো এক বিজ্ঞাপন চিত্রের এই সংলাপটি আজ বড্ড মনে পড়ছে। আগের তিন ম্যাচেই বড় বড় জয়। শ্রীলঙ্কাকে প্রথম দেখায় ১৬৩ রানে গুড়িয়ে পেয়েছিল নিজেদের ইতিহাসেরই সবচেয়ে বড় জয়। উড়তে থাকা বাংলাদেশ ফাইনালের আগে পড়ল বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। মাত্র ৮২ রানে গুটিয়ে সেফ্র উড়ে গেছে লঙ্কানদের কাছে। এমন হারের পর অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা কোন অজুহাতের দিকেই গেলেন না। এমন হারের পর কি ব্যখ্যা হতে পারে? যতই ইতিহাস হোক না কেন, এমন হারের লজ্জা লুকাবেন কি দিয়ে!
লুকান নি মাশরাফিও। বোনাস পয়েন্টসহ দুই ম্যাচ জিতেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। জয়ের ধরনে কি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস জমা হয়েছিল? বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক বললেন, দলের কারো মধ্যেই এমন মানসিকতা দেখেননি তিনি, ‘সত্যি কথা বলতে কি কাল রাতে বলেন না আজকেও সবাই যখন একসঙ্গে ছিলাম। কাল রাতেও যখন মিটিং হয়েছে। কারো ভেতর এমন দেখিনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এমন থাকার (অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী) সুযোগ ছিল না, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তো না-ই।’
টস জিতে আগে ব্যাট করে মাত্র ২৪ ওভারে ৮২ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ১২তম ওভারেই সেই রান নিয়ে নেন শ্রীলঙ্কান দুই ওপেনার। এমন হারের একটাই ব্যাখ্যা আছে অধিনায়কের কাছে, ‘যেটা বলতে পারেন আমরা খুবই বাজে ক্রিকেট খেলেছি। আমার কাছে মনে হয় এটা বলাই ঠিক। আবার এটা বলতে পারি যে একটা বাজে দিন গিয়েছে। আমি বলব বাজে ক্রিকেট খেলেছি।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারতেই পারে বাংলাদেশ। তাতে সমস্যা নেই, অধিনায়কের আপত্তি হারের ধরন নিয়ে, ‘আমরা জানি যে শ্রীলঙ্কা আমাদের হারাতে পারে। কিন্তু এভাবে আমরা হারব সেটা কেউই প্রত্যাশা করিনি। এটাতো তো সত্যি। ড্রেসিং রুমের কেউই এটা বিশ্বাস করবে না যে আমাদেরকে শ্রীলঙ্কা হারাতে পারে না। শেষ তিন ম্যাচ এভাবে খেলার পর এভাবে হারব সেটা হয় না।’
ফাইনালের আগে এমন হারেও ইতিবাচক দিক পাচ্ছেন মাশরাফি। এমন পরিস্থিতিতে পড়লে কি করতে হবে তার শিক্ষাও নিতে চান এই ম্যাচ থেকে, ‘এখনো আমাদের ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে হবে। হয়তোবা ফাইনালের আগে এটা আমাদের জন্য ভালো একটা ওয়েকআপ কল ছিল। অমাদের নার্ভটা আরেকটু শক্ত হবে।’
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচকে সামনে রেখে এই হার তার দলের জন্য সতর্ক বার্তা হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করেন মাশরাফি। সাকিব-তামিমের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নিজেদের স্বাভাবিক খেলেটা খেলার তাগিদ টাইগার অধিনায়কের। মাশরাফির ভাষ্যমতে, ‘চার উইকেট পড়ার পরও আমাদের সামর্থ্য ছিল ওটাকে হেলদি করার। তাহলে হয়তো যারা ছিল তাদের জন্য ভালো হতো। ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস ভালো হতো। যেটা হয়েছে এটা ভালো সতর্কবার্তা, যে আমাদের বাজে দিনে আমরা কতটা খারাপ খেলতে পারি। এটাও আমাদের জন্য জানা গেল। ফাইনাল ম্যাচে যে তাড়াতাড়ি দুটা উইকেট পড়বে না সেই গ্যারান্টি নেই। পরপর দুই বলে সাকিব-তামিম দুজনই আউট হয়ে যেতে পারে। কখন কিভাবে ব্যাটিং করতে হবে। আজকে আমরা না পারলেও কিছুটা হলেও আমাদের ধারণা পাওয়া গেল যে এ রানটাকে কত দূর নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।’
সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচেই দাপুটে জয়ের পর এভাবে হারাটা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না মাশরাফি, ‘এভাবে আমরা হারব সেটা কেউই প্রত্যাশা করিনি। এটাতো তো সত্যি। ড্রেসিং রুমের কেউই এটা বিশ্বাস করবে না যে আমাদেরকে শ্রীলঙ্কা হারাতে পারে না। শেষ তিন ম্যাচ এভাবে খেলার পর এভাবে হারব সেটা হয় না। আসলে কমেন্ট করা খুব কঠিন এভাবে তিন ম্যাচে পারফরম্যান্সের পর। ম্যাচ ডিটেইলস নিয়ে এক্সপ্লেইন করাও কঠিন।’
এই হারের পরও ফাইনালে ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ টাইগার অধিনায়ক, ‘আমার কাছে মনে হয়.. যেভাবে আমরা শেষ তিন ম্যাচ খেলেছি সেভাবেই আমাদের চিন্তা করতে হবে। স্টিল আমাদের ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে হবে। হয়তোবা এটা আমাদের জন্য ভালো একটা ওয়েকআপ কল ছিল বিফর ফাইনাল। হয়তো অমাদের নার্ভটা আরেকটু শক্ত হবে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন