শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ

প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৬ পিএম, ২৬ মার্চ, ২০১৬

তারেক সালমান

দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতি গতকাল শনিবার পালন করেছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। আনন্দ, বেদনা ও বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদী কর্মকা- রুখে দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি পালন করল ৪৬তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। শ্রদ্ধাবনত জাতি ফুলে ফুলে ভরে দেয় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এবং টুঙ্গীপাড়ার বঙ্গবন্ধুর সমাধির বেদিমূল।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুরুতে গতকাল প্রত্যুষে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে সূচনা হয় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানমালার। ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল তখন গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।
প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। এ সময় মন্ত্রীবর্গ, উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, মুক্তিযোদ্ধারা, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকগণ, উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগ নেতা ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, এই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সে স্বপ্ন পূরণ হবে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। সমস্ত ষড়যন্ত্র বানচাল হয়ে যাবে। কোনো ষড়যন্ত্রই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।
এছাড়াও স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা পরিদর্শক বইতে স্বাক্ষর করেন।
সকাল সাড়ে ৮টায় দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ড. আবদুল মঈন খান, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ দলের সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে যুবদল, ছাত্রদল, মহিলাদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধাদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এসময় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু দেশে এখন গণতন্ত্র নেই, সুশাসন নেই। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
এরপর সাভার থেকে ফেরার পথে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি। এ সময়ও তার সঙ্গে দলের সিনিয়র নেতাসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ৭টায় প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশে মনোজ্ঞ ডিসপ্লে উপভোগ করেন এবং বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল ৮টায় এখানে এসেই তিনি ‘টাইগার ক্যারাভ্যান’ পরিদর্শন করেন।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার ছিল সরকারি ছুটি। স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারী টেলিভিশনে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হয়। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। দিবসটি উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বাণী দেন। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী দিবসটির পৃথক বাণীতে স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবনদানকারী শহীদদের এবং জাতীয় চার নেতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ভবন, বাড়িঘর, যানবাহন ও দোকানে ওড়ে জাতীয় পতাকা। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়। রাজধানীর বিভিন্ন বড় বড় সড়ক পথগুলোও জাতীয় ও অন্যান্য পতাকা দিয়ে সাজানো হয়। সারাদেশের মসজিদে বিশেষ মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত, দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করা হয়। মসজিদ ছাড়াও মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাতেও বিশেষ প্রার্থনা সভার ব্যবস্থা করা হয়। দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন-প্রতিষ্ঠান আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা আয়োজনে মহান স্বাধীনতা দিবস পালন করে। গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন ও মোনাজাত করা হয়। সশস্ত্র বাহিনীও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্র, হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশুসদনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
স্বাধীনতা দিবসে স্মারক ডাকটিকিট উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ১০ টাকা মূল্যের একটি স্মারক ডাকটিকিট উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে ১০ টাকা মূল্যমানের একটি খাম এবং ৫ টাকা মূল্যমানের ডাটা কার্ডও উদ্বোধন করেন তিনি।
গতকাল শনিবার বিকালে গণভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষর এবং বিশেষ সিলমোহরের মাধ্যমে তা প্রকাশ করেন। রবিবার থেকে দেশের সব ডাকঘর থেকে এই স্মারক ডাকটিকিট বিক্রি শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমসহ ডাক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের শ্রদ্ধা:
সকালে ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের নেতৃত্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, গণফোরাম, এলডিপি, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, সেক্টর্স কমান্ডারস ফোরাম, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাসদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাসদ, সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ বেসরকারি মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনারর্স এসোসিয়েশন, মহিলা পরিষদ, কৃষক লীগ, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, কৃষক সমিতি, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, যুবলীগ, যুবদল, যুব ইউনিয়ন, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, জাসাস, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, বঙ্গবন্ধু সংসদসহ বিভিন্ন দল, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। এছাড়া স্মৃতিসৌধের বেদিতে ফুল দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জনতা ব্যাংক, এডাব, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযোদ্ধা ছাত্র কমান্ড, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, জাতীয় শ্রমিক লীগ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সাংবাদিকদের বলেন, দেশে জঙ্গীবাদ বলতে বিশেষ কিছু নেই। যা ঘটছে তা সবই সন্ত্রাসী কর্মকা-। এটিকে রঙ দিয়ে জঙ্গীবাদ বলা হচ্ছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৫ বছর পার হলেও এখনও দেশ কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। রাজনৈতিক দলাদলির কারণেই দেশ পিছিয়ে পড়েছে। এ সময় দলের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারসহ জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, খালেদা জিয়া নিজেকে বদলাতে পারবে না। তিনি জামায়াত-শিবির ও যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ছিলেন, এখনও আছেন। জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীবাদকে না ছেড়ে তিনি যে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন সেটিও একটি চক্রান্ত।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা:
সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও ইউসূফ হোসেন হুমায়ুন, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ প্রমুখ।
এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু ভবন এলাকা ত্যাগ করার পর সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়ক।
স্বাধীনতা স্তম্ভ ও স্বাধীনতা জাদুঘর উন্মুক্ত :
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গতকাল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘স্বাধীনতা স্তম্ভ’ ও ‘স্বাধীনতা জাদুঘর’ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। স্বাধীনতা জাদুঘরে ১৪৪টি প্যানেলে বাঙালি ও বাংলাদেশী জাতিসত্তার স্বাধীনতার ইতিহাস আলোকচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপিত হয়েছে। আলোকচিত্রের মধ্যে রয়েছে মুঘল আমল থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সময়ের ছবি, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের ছবি। আছে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের এবং ১৬ ডিসেম্বরে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের বিশাল আকৃতির দু’টি ছবি। এছাড়া যে টেবিলের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলের কমান্ডার লে. জে. আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজী আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন তার অনুকৃতি (রেপ্লিকা) আছে। রয়েছে বিভিন্ন বিদেশী পত্রিকায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কপি এবং স্বাধীনতার সপক্ষে বহির্বিশ্বে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন ও পুস্তিকার ছবি।
মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ’ বিভাগ আয়োজন করে উš§ুক্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। দেশাত্মবোধক গান, কবিতা ছাড়াও শিল্পীরা ‘একাত্তরের চিঠি’ সংকলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধক্ষেত্র থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা নির্বাচিত কয়েকটি চিঠি উপস্থাপন করে। জাতীয় প্রেসক্লাব দিবসটি উদযাপন করে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরীসহ সাংবাদিক নেতারা এসময় বক্তৃতা করেন। এছাড়া নৌ-বাহিনীর বাদ্যযন্ত্রে ফার্মগেট পার্কে অনুষ্ঠিত হয় দেশাত্মবোধক গানের অনুষ্ঠান। নৌবাহিনীর এসসিপিও (নিউজ) রিপনের নেতৃত্বে নৌ-ব্যান্ড দল সদস্যরা মাঝ মাঠে তাঁবু গেড়ে গোল হয়ে সারিবদ্ধভাবে বাদ্যযন্ত্র বাজান। সূর্যোদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ, ‘এই পদ্মা, এই মেঘনা’, ‘ও আমার দেশে মাটি তোমার কোলে ঠেকাই মাথা’, ‘আমার সোনার বাংলা’, ‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা’, ‘জš§ আমার ধন্য হল মাগো’ ইত্যাদি গান কণ্ঠ ছাড়াই বাদ্যযন্ত্রে বাজানো হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় :
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচী পালনের মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৬ উদযাপন করা হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে ছিল সকাল ৬টা ২৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের নেতৃত্বে বি ব্লকে বঙ্গবন্ধুর ম্যূরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সকাল ৮টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে ডা. কামরুল হাসান খানের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মোঃ রুহুল আমিন মিয়া, প্রো-ভিসি (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. আলী আসগর মোড়ল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ডীনবৃন্দ, শিক্ষক, চিকিৎসক, ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানী ছাড়াও সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় ৪৬তম স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
চট্টগ্রামে মহান স্বাধীনতা দিবস উযাপিত
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানান, বর্নাঢ্য নানা আয়োজনে চট্টগ্রামে উদযাপিত হয়েছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ, শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন, শিশু-কিশোরদের ডিসপ্লে, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সরকারি দল আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে পালিত হয় নানা কর্মসূচি। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসনসহ সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগেও নানা কর্মসূচি পালিত হয়।
দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সকালে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সালাম গ্রহণ করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. রুহুল আমীন। সালাম গ্রহণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোহা. শফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আকতার ও নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার একেএম শহীদুর রহমান। প্যারেড অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। বাদ্যের তালে তালে মার্চপাস্টে অংশ নিয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের ছোটমণি নিবাসের ৭ বছরের কম বয়সী অনাথ শিশুরাও।
এদিকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল জামেয়ার অধ্যক্ষ মাওলানা হাফেয মুহাম্মদ সোলাইমান আনসারীর সভাপতিত্বে মাওলানা আবুল আসাদ মুহাম্মদ জুবাইর রেজভীর সঞ্চালনায় জামেয়া অডিটরিয়মে অনুষ্ঠিত হয়। এতে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন মুফাচ্ছির মাওলানা মুহাম্মদ বখতিয়ার উদ্দিন।
ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা নিকেতন ছিপাতলী জামেয়া গাউছিয়া মুঈনীয়া আলীয়া মাদ্রাসার উদ্যোগে শাহ্ আহ্মদ রেজা (রা.) অডিটরিয়ামে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিলের অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আল্লামা আজিজুল হক আল্ ক্বাদেরী। প্রধান অতিথি ছিলেন ছিপাতলী আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শাহজাদা আল্লামা আবুল ফরাহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
চসিকের কর্মসূচি : সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস দিনব্যাপি কর্মসূচির মধ্যদিয়ে উদ্যাপিত হয়েছে। দিবসের কর্মসূচিতে ছিল নগর ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য দান, স্কুল-কলেজের গাইড, স্কাউট, রোভার, রেঞ্জার, কাব এবং ছাত্র-ছাত্রীদের কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। নগরীর বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
শাবি সংবাদদাতা জানান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযথ মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসের কর্মসূচির মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ, সেমিনার ও আলোচনা সভা, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিবসের প্রথম প্রহরে শাবি ভিসি প্রফেসর ড. মো. আমিনুল হক ভূইয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
পাবনা জেলা সংবাদদাতা জানান, পাবনায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা দিব পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, পাবনা জেলা পরিষদ, র‌্যাব, আনসার ও ভিডিপি, জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন, সদর উপজেলা পরিষদ, জেলা বিএনপি, জাসদ (ইনু), জাতীয় পার্টি, বিএমএ, স্বাচিপ, ড্যাব, পাবনা মেডিক্যাল কলেজ, পাবনা জেনারেল হাসপাতাল, মানসিক হাসপতাল, পাবনা বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্র, অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরি, ইফা, পাবনা ড্রামা সার্কেল, গণশিল্পী, গণমঞ্চ, পাবনা প্রেসক্লাব, আইনজীবী সমিতি, রিপোটার্স ইউনিটি, পাবনা ইয়াং জার্নালিস্ট ফোরাম, পাবনা কলেজ, সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজ, সরকারী শহীদ বুলবুল কলেজ, শহীদ, এম মনসুর আলী ডিগ্রী কলেজ, সিটি কলেজ, শামসুল হুদা ডিগ্রী কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও সাংষ্কৃতিক প্রতিষ্ঠান দুর্জয় পাবনার শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ অপর্ণ করে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। জেলা আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও শহীদ চার জাতীয় নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অপর্ণ করে। দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সকালে প্রশাসন ভবন থেকে র‌্যালি বের করে।
বগুড়া অফিস জানান, যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশের অন্যান্য স্থানের মত বগুড়ায় মহান স্বাধীনতার ৪৬তম দিবস ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। রাত ১২.০১ মিনিটে বগুড়ার মুক্তির ফুলবাড়ি ও শহীদ খোকন পার্কের শহীদ মিনার ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ স্মৃতি সৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শনিবার সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়। বগুড়া জেলা প্রশাসক মো: আশরাফ উদ্দীন দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এছাড়া ডিসপ্লেতে অংশগ্রহণকারীদের সালাম গ্রহণ করেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মো: আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: খোরশেদ আলম, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিন, সাবেক মহিলা এমপি অধ্যক্ষ শেফালী খাতুন।
মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন পৃথক পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বগুড়া প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়ন প্রেসক্লাবে আয়োজন করে আলোচনা সভার। প্রেসক্লাব সভাপতি জাহেদুর রহমান, সৈয়দ ফজলে রাব্বী ডলার ও আমজাদ হোসেন মিন্টুর সভাপতিত্বে পৃথক তিনটি আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম নয়ন, আব্দুস সালাম বাবু, জে এম রউফ, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সাবেক সভাপতি মীর্জা সেলিম রেজা, মীর সাজ্জাদ আলী সন্তোষ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এফ শাহজাহান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ মন্ডল, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জেএম রউফ প্রমুখ।
নোয়াখালী ব্যুরো জানান, নোয়াখালীতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয দিবম পালিত হয়েছে। জেলা মুক্তিযোদ্বা স্মৃতি সৌধে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্বা সংসদ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন সরকারি বিভাগ, আওয়ামী লীগ এর অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে পুস্পমাল্য অর্পন করা হয়। এছাড়া র‌্যালি, আলোচনা সভা এবং মাইজদী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে খেলাধূলা অনুষ্ঠিত হয়। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০১৬ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্্যাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
মাগুরা জেলা সংবাদদাতা জানান, জেলা প্রশাসন ব্যাপক কর্মসুচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির শুভ সূচনা, সকল সরকারি বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্বে পুস্পমাল্য অর্পন, মাগুরা সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয় মাঠে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, রোভার স্কাউট, গার্লস গাইটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র- ছাত্রী, মুক্তিযোদ্ধাদের কুচকাওয়াজে জেলা প্রশাসক মুহ: মাহবুবর রহমান কতৃক সালাম গ্রহণ ও শরীরচর্চা প্রদর্শনী, জাতির শান্তি সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং সুবিধামত সময়ে মন্দির গীর্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা, সন্ধ্যায় স্থানীয় নোমানী ময়দানের অডিটরিয়মে আলোচনা সভা, গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমুহে আলোক সজ্জা ইত্যাদি
যশোর ব্যুরো জানায়, যশোরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়। সকালে কালেক্টরেট চত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলমের নেতৃত্বে জাসদ, সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা একরাম উদ দ্দৌলা, আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি শাহিন চাকলাদার, বিএনপির অনিন্দ্য ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টিও ইকবাল কবীর জাহিদ, জেএসডির মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম ও ফকির শওকতের নেতৃত্বে স্ব স্ব রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এছাড়া দিনব্যাপী আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠন ও জেলা প্রশাসন দিনভর নানা কর্মসূচি পালন করে। প্রথম প্রহরেই নগরীর ভুবন মোহন পার্ক শহীদ মিনার ও রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তাবক অর্পন করে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় কর্মসূচীর। ভবনসমূহে ওড়ানো হয় জাতীয় পতাকা। স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ, মসজিদে মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ওয়ার্কাস পার্টির উদ্দ্যেগে আলোচনা সভা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়। সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক একাদশ বনাম মুক্তিযোদ্ধা একাদশ ও মেয়র একাদশ বনাম বিভাগীয় কমিশনার একাদশের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। রেডক্রিসেন্ট সিটি ইউনিট আয়োজন করে রক্তদান কর্মসূচীর।
রাবি রিপোর্টার জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পালিত হয়েছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। দিবসের শুরুতে রাতের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপাচার্য প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান ও কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর সায়েন উদ্দিন আহমেদসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সেখানে তাঁরা অমর শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতাও পালন করেন।
প্রশাসনের পরে সেখানে শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, রাবি প্রেসক্লাব, বিভিন্ন হল শাখা ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হয়। পতাকা উত্তোলন শেষে সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি জাফর আলী, সহ-সভাপতি চাষী করিম,সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ হাসান লোবান,ছাত্রলীগের সভাপতি ওয়াহেদুন্নবী সাগর, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সাকিবসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নাটোর জেলা সংবাদদাতা জানান, নাটোরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে আবুল হোসেনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের পুষ্প অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। ভোরে ৩১বার তোপধ্বনির পর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারী-বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ছ’টায় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণের পর সকাল সাড়ে আটটায় শঙ্কর গোবিন্দ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ খলিলুর রহমান। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী। সকাল ন’টায় নাটোর পৌরসভার পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি নাটোর মুসলিম ইন্সটিটিউট চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আকরাম আলী খান ফাউন্ডেশন আয়োজিত শিশু চিত্রাঙ্কন ও দেশাত্মবোধক কবিতা আবৃত্তির উদ্বোধন করেন।
গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আলোচনা সভা, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচিত্র ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এ দিন সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মোঃ নূরউদ্দিন আহমেদ, মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. এম. এ মান্নান, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি মোঃ রোকনুজ্জামান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট সুকান্ত বিশ্বাস, উপ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী মোঃ আমিনুর রহমান, সহকারী রেজিস্ট্রার মোঃ মোরাদ হোসেন, প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল আসাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক ইমরান হোসেন।
গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল বিজয়স্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ, ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা, পলাশবাড়ী এস.এম হাইস্কুল মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ, শারীরিক কসরত প্রদর্শন, শিশু-কিশোরদের রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, প্রীতি ফুটবল, মহিলাদের ক্রীড়ানুষ্ঠান, ‘সুখী সমৃদ্ধ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার’ শীর্ষক আলোচনা আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কুচ কাওয়াজ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ডা. ইউনুছ আলী সরকার ।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপিত হচ্ছে। শনিবার টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে স্মৃতিসৌধে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার পুস্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা বিএনপি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড, টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব, টাঙ্গাইল টেলিভিশন রিপোর্টার্স ফোরামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করেছে সর্বস্থরের মানুষ। এ উপলক্ষে শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় শহরের গোয়ালচামট এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় স্বাধীনতা স্থম্ভে প্রথমে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তাদের উদ্দেশে দোয়া করা হয়।
দোয়া শেষে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারফ হোসনের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক সরদার সরাফত আলী, পুলিশ সুপার জামিল হাসান ও উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার ছোট ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর।
মানিকগঞ্জ জেলা সংবাদতাদা : গতকাল শনিবার সকালে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ স্মৃতি বিজয় স্তম্ভে সর্বস্তরের মানুষ ফুলদিয়ে শ্রদ্ধা জানান। আওয়ামী লীগের পক্ষে জাহিদ মালেক স্বপন এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, বিএনপির জেলা সিনিয়র সভাপতি এ্যাডভোকেট মোকসেদুর রহমান, এ্যাডভোকেট আতাউর রহমান ভুইয়া ফরিদ, খোন্দকার আক্কাছ আলী, জেলা প্রশাসনের পক্ষে রাশিদা ফেরদৌস, পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান, পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম প্রমুখ পরে শহীদ মিরাজ তপন স্টেডিয়ামে শারিরীক কসরত ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে শনিবার ভোরে ৩১বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে দিবসটির শুভসুচনা হয়। এরপর সকাল ৮টায় জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মোঃ মহিউদ্দীন ও পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে পুলিশ, বিএনসিসি ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের সমম্বয়ে দৃষ্টি নন্দন মার্চপাস্ট, শরীরচর্চা প্রদর্শনী ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সালাম গ্রহণ করেন সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, তালা-কলারোয়া আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রিফাত আমিন, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান, দিবসের প্রথম প্রহরে শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। প্রথমে জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান ও পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক বিপিএম, পিপিএম পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন