শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

রোহিঙ্গাদের বাড়িতে ফের আগুন দিলো মিয়ানমার সেনাবাহিনী

মো: সাদাত উল্লাহ, বান্দরবান থেকে | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৯:৪৮ পিএম | আপডেট : ১০:০১ পিএম, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে নতুন করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। এছাড়া তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইন বরাবর দুই দিন থেকে থেমে থেমে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করছে সে দেশের সেনাবাহিনী ও বিজিপির সদস্যরা।
এতে তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইনে বসবাসকারী ৬ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা আবারও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এ ঘটনার পর বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত বুধবার বিকেলে তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের ঢেকুবনিয়া এলাকায় নতুন করে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়। রাতেও আগুন দেয়া হয় ঘরবাড়িতে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকায় জ্বালানো ঘরবাড়িগুলো থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। সীমান্তের ওপার থেকে আতঙ্কে জিরো লাইনে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরে চলে এসেছে বেশ কিছু রোহিঙ্গা।
ঘুনধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, বুধবার বিকেলে তুমব্রু সীমান্তের ওপারে কিছু ঘরবাড়িতে প্রথম আগুন দেয়া হয়। পরে রাতেও সেখানে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। ওই এলাকার ইউপি সদস্য আবদুর রহিম জানান, মিয়ানমারে এখনো রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে। তবে বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকলেও আবারও সীমান্তের ওপারে ঘরবাড়িতে নতুন করে আগুন দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা আবু ইউসুফ জানিয়েছেন, জিরো লাইনে বসবাসকারীদের চলে যাওয়ার জন্য সেনাবাহিনী ও বিজিপি বারবার হুমকি দিচ্ছে। প্রায় সময় ক্যাম্পগুলো থেকে আচমকা গুলিবর্ষণ করা হয়। বুধবার রাতেও বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করা হয়েছে সীমান্তের ওপার থেকে। তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা এখন চরম আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
তুমব্রু বাজারের বাসিন্দা মো. সফি জানান, গত কয়েক দিন আগে লাকড়ি কুড়ানোর জন্য শিবির থেকে কিছু রোহিঙ্গা তারকাঁটা বেড়া অতিক্রম করে ওপারে গেলে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এখনো তাদের ছেড়ে দেয়নি বিজিপির সদস্যরা। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তুমব্রু ও ঘুনধুম সীমান্তে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিজিপি সদস্যরা ক্যাম্পগুলো থেকে থেমে থেমে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। তুমব্রু সীমান্তের ওপারে প্রচুর সংখ্যাক মায়ানমারের সেনাবাহিনী অবস্থান নিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে সহিংসতার পর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ১৫ হাজারেও বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান নেন। এদের মধ্যে সাপমারা ঝিড়ি, বড় ছনখোলা এলাকা থেকে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের উখিয়ার শরণার্থী শিবিরে সরিয়ে নেয়া হলেও তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইনে এখনো ছয় হাজারেও বেশি রোহিঙ্গা রয়ে গেছেন। এদের কবে নাগাদ সরিয়ে নেয়া হবে তা এখনো জানাতে পারেনি প্রশাসন।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলিপ কুমার বণিক জানান, ইউএনএইচসিআরের সহযোগিতায় শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশন ইতোমধ্যে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার রোহিঙ্গাকে কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে সরিয়ে নিয়েছে। খুব শিগগির অন্য রোহিঙ্গাদেরও সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিজিবির কক্সবাজার সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবদুল খালেক জানান, ওপার থেকে প্রায় সময়ই গুলির শব্দ শোনা যায়। নতুন করে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িতে আগুন দিয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে খবর নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিজিবি সীমান্তে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বলে জানান সেক্টর কমান্ডার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন