স্টাফ রিপোর্টার : একাদশ জাতীয় নির্বাচন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। তবে দেশে খালেদা জিয়াবিহীন কোন নির্বাচন হবে না বলে সরকারকে হুশিয়ার করে দিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দুরে রাখতে সরকার যতো অপকৌশলই করুক না কেন আগামী জাতীয় নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়াকে দুরে সরিয়ে রাখা যাবেনা। বেগম খালেদা জিয়াবিহীন নির্বাচন দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবেনা এবং দেশের জনগণ তা মেনেও নেবে না। সরকার যে নীল নকশা এঁটে বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী করেছে এতে বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে মাইনাস করার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে। এটা জনগণের কাছে পরিস্কার হয়ে গেছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন তথা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে রুদ্ধ করা যাবে না। ইতোমধ্যে খালেদা জিয়াকে বন্দী করার পর দেশবাসী যেভাবে জেগে উঠেছে তাতে সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে অসংখ্য মানুষ রাজপথে নেমে গেছে। সারাদেশব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে। এতেই সরকারের ভীত নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। তাই সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে মন্ত্রীরা যতোই আবোল-তাবোল বকুক না কেন খালেদা জিয়াবিহীন নির্বাচনের নীলনকশা প্রতিরোধ করতে জনগণ এখন বদ্ধপরিকর। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে আওয়ামী লীগের ব্যাপক ভরাডুবি হবে ভেবেই মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাজা প্রদান করা হয়েছে। প্রহসনের সাজানো মামলা বন্দী করা হয়েছে বেগম খালেদা জিয়াকে।
দেশে একজনের ক্ষমতাই সর্বব্যাপী মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আইন, বিচার, আদালত ‘সর্বত্রই শেখ হাসিনার ছায়াশাসনের আওতাভুক্ত’। আওয়ামী সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে দমন করার জন্যই অকাতরে মামলার মধ্যে জড়িয়ে এখন সাজা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যারা বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করে জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকে তাদেরকে অবলম্বন করতে হয় অনাচারের ওপর। এই অনাচারে একদিকে যেমন চলছে জবরদখল, খুনের ভয়, রক্তপাত, চাঁদা আদায়ের দাপট ও বেঘোরে জীবনহানির নিরাপত্তাহীনতার মাধ্যমে নাগরিকদের প্রাণ ওষ্ঠাগত করা, আর অন্যদিকে অনাচারের একটি কুৎসিত দিক হচ্ছে-প্রশ্নপত্র ফাঁসের মধ্য দিয়ে দেশকে আদিম কালের ঘন অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়া।
প্রশ্নফাঁস ও দুর্নীতিকে আওয়ামী লীগের সরকার পরিচালনার ইশতেহার উল্লেখ করে রিজভী বলেন, পরীক্ষার দুই ঘন্টা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং শিক্ষামন্ত্রীর সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতি করার পরামর্শ, একথাগুলি যেন আওয়ামী লীগের সরকার পরিচালনার ইশতেহার। মন্ত্রী ও সচিবকে বাঁচাতে নকলের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী অবস্থান নিয়েছেন। যেমন শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশ্রয় দিতে সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে। এটি জাতির ভবিষ্যতের জন্য এক অশুভ বার্তাবহ। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত সিন্ডিকেট আরো বেশী উৎসাহিত হয়ে উঠেছে। গত দুইদিনেও জীব বিজ্ঞানসহ কয়েকটি সাবজেক্টে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা সেটিই প্রমাণ করে।
বিএনপির কর্মসূচি: সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে সমাবেশের অনুমতি না দেয়ায় ২৪ ফেব্রæয়ারি কালো পতাকা প্রদর্শন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ বেলা ৩টায় রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, মুনির হোসেন প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন