অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশের অর্থনীতি অগ্রসরমান। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত অর্থনীতিতে রূপান্তরের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ। এর মধ্যে শুধু বিদেশী বিনিয়োগই দরকার বছরে এক হাজার কোটি ডলার। কিন্তু এ চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে বিদেশীদের আগ্রহ বাড়ছে না, বরং কমছে। পরিসংখ্যানও সে কথাই বলছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বার্ষিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৬ সালের তুলনায় গত বছর দেশে বিদেশী বিনিয়োগের নিবন্ধন কমেছে সাত শতাংশ। বাংলাদেশে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে পোষক কর্তৃপক্ষের ভূমিকা পালন করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনস্থ বি আইডিএ। বিনিয়োগে আগ্রহী দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীরা সংস্থাটিতে প্রকল্প নিবন্ধন করান। ফলে বি আইডিএর নিবন্ধন পরিসংখ্যান বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিনিয়োগ আগ্রহের একটি বাস্তবিক চিত্র পাওয়া যায়। বিআইডি এর উপাত্তে দেখা গেছে, ২০১৬ সালে সংস্থাটি ১৬৪টি প্রকল্পে মোট এক হাজার ১৩২ কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ প্রস্তাবনা (যৌথ ও শতভাগ বিদেশী মিলিয়ে) পেয়েছিল। ২০১৭ সালে প্রকল্পের সংখ্যা ও প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ দুটোই কমেছে। গত বছর বিনিয়োগ প্রস্তাবের নিবন্ধন হয়েছে মোট এক হাজার ৪৬ কোটি ৯৯ লাখ ৭০ হাজার ডলারের, যা আগের বছরের চেয়ে সাত শতাংশ কম। এ সময়ে নিবন্ধিত প্রকল্পের সংখ্যাও তিনটি কমেছে।
অবশ্য বিদেশী বিনিয়োগ নিবন্ধন কমলেও সম্পূর্ণ স্থানীয় বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে। ২০১৬ সালে এক হাজার ৫১৬টি প্রকল্পে নিবন্ধিত স্থানীয় বিনিয়োগ প্রস্তাবনার পরিমাণ ছিল এক হাজার ৩০৬ কোটি ১৭ লাখ ডলার। গত বছর প্রকল্পের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ৬৬৬টিতে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে দেশীয় বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে মোট এক হাজার ৬৬৬ কোটি ৩১ লাখ ৩০ হাজার ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বিআইডিএ। উদ্যোক্তারা বলছেন, দেশীয় বা স্থানীয় বিনিয়োগ নিবন্ধনের গতি যতটা আশাব্যঞ্জক, ঠিক ততটাই হতাশ হতে হচ্ছে বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে। এর পরও দেশী-বিদেশী মিলিয়ে যে পরিমাণ বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধিত হয়েছে, সেগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন