বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

এরশাদ-মেনন পেলে বিএনপি কেন নয়? রুহুল কবির রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-রাশেদ খান মেনন অনুমতি পেলে বিএনপি কেন পাবে না এমন প্রশ্ন তুলেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
তিনি বলেন, রাশেদ খান মেননের কয়টা লোক আছে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কয়টা লোক আছে? তারা পায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। বিএনপি পায় না কেন? সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মালিকানা কি আওয়ামী মহাজোটের? যে তারা করুণা করে দিচ্ছেন? এটাই হচ্ছে জমিদারি মানসিকতা। দেশকে যারা পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করেন তারাই এই ধরনের আচারণ করেন। গতকাল (রোববার) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দলটি আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু গতকাল রাত পর্যন্ত সমাবেশের অনুমতি পায়নি দলটি। রিজভী বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি জনসভার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের নিকট আবেদন করেছি।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতির বিষয়ে আমাদেরকে অবহিত করা হয়নি। তিনি বলেন, আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। আজকে (গতকাল) রাতের মধ্যে যখনই অনুমতি দেয়া হোক, আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা সফল করতে সক্ষম হবো। সফল হবে। বিএনপি নেতা সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সরকারকে বলব, এখনও সময় আছে, আপনাদের মনে শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। আমাদেরকে অনুমতিটা দিন, আমরা জনসভাটা করি। এর আগেও বিভিন্ন সময় বিএনপিকে শেষ মুহূর্তে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এবার সেরকম ঘটলেও জনসভা আয়োজনের প্রস্তুতি নিজেদের রয়েছে বলে জানান তিনি। এর আগে সকালে আবুল খায়ের ভুঁইয়ার নেতৃত্বে বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। তবে ইতিবাচক কোনো জবাব পাননি। রিজভী বলেন, পুলিশ কেন অনুমতি দেবে না। কালকে তো খুলনায় জনসভা হয়েছে। ওখানে কি কোনো গোলমাল হয়েছে, কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাÐ হয়েছে? তাহলে দেবে না কেন?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভারতে যাওয়া নিয়ে কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, কাদের সাহেব বলেন ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশীদের সাথে দেনদরবার করছে। আমি ওবায়দুল কাদের সাহেবের উদ্দেশ্যে বলতে চাই-বিএনপি হলো এদেশের জনগণের দল, জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় যেতে বিশ^াসী। সুতরাং বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বিদেশীদের কাছে দেনদরবার করতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে। যেসব অনুষ্ঠানে সরকারের একজন সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা গেলেই চলে সেখানে খোদ সরকার প্রধান হাজির হচ্ছেন। উদ্দেশ্য একটাই-তাহলো বিদেশীদের মন জয় করা। তাদের অবৈধ সত্তাকে ঘোচানো। কারণ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে যেভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা হয়েছিল আবারও সেরকম একটি ভোটারবিহীন দখলী ইলেকশন করা সম্ভব হবে না বলেই এখন থেকে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ টের পাচ্ছেন। সারা দুনিয়াজুড়ে বর্তমান অবৈধ সরকারের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক। দীর্ঘদিন ধরে ভোট দিতে না পেরে এদেশের আপামর জনসাধারণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, জনগণের মনের ভাব বুঝতে পেরে সরকার এখন দিশেহারা হয়ে উঠেছে। আরেকটি দেশী-বিদেশী মাস্টারপ্ল্যানের নীল নকশার নির্বাচন করতে এখন তারা বেপরোয়া। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জাল নথির মাধ্যমে সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দী করা এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাজা দেয়া গভীর চক্রান্তেরই অংশ। দেশনেত্রীর কারামুক্ত হওয়া বিলম্বিত করাও সরকারের কারসাজী।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার শাসন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অন্ধকারময় পর্ব। এখানে মানুষের স্বর স্তব্ধ। বিএনপিসহ বিরোধী দলের অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন করার আয়োজন চলছে। রাষ্ট্রীয় মদদে গোয়েন্দা পুলিশকে লেলিয়ে দেয়া হচ্ছে বিএনপি’র শন্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর। গণমাধ্যমের মাথার ওপর ঝুলছে ধারালো তরবারী। সভা-সমাবেশ পুলিশের আকস্মিক আক্রমনের শিকার। মুক্তকন্ঠ এখন মানুষ ভুলে যেতে শুরু করেছে। তথ্য জানার অধিকার আইন করে বন্ধ করা হয়েছে, নাগরিক স্বাধীনতার গলা টিপে ধরার জন্য। তিনি বলেন, ভোটারবিহীন সরকারের সবচেয়ে বড় ভয় হলো জনগণ। আর তাই যেকোন জনসমাগম দেখলেই তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল আউয়াল খান, আবেদ রাজা, আমিনুল ইসলাম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
ইসমাইল ১২ মার্চ, ২০১৮, ৪:২৮ এএম says : 0
সরকারের কাছে আদৌ এই প্রশ্নের কোন উত্তর আছে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন