শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সউদী থেকে নারী কর্মীরা ফিরছে খালি হাতে : সঙ্কুচিত হচ্ছে শ্রমবাজার

শামসুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

শ্রমবাজার ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হচ্ছে। তেল সমৃদ্ধ দেশ সউদী আরবের বৃহৎ শ্রমবাজার নিয়ে অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে। সউদীতে কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র কমে যাচ্ছে। সউদী’র প্রায় বারোটি পেশায় অভিবাসী কর্মীদের নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এসব পেশায় সউদী নাগরিকদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। এতে অধিকাংশ বাংলাদেশী ব্যবসায়ী ও কর্মীদের মাঝে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সউদী’র অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি ও অভিবাসীদের আকামা’র ফি দ্বি-গুণ বৃদ্ধির করায় পুরুষ কর্মী নিয়োগের ভিসাও ব্যাপক হারে কমে যাচ্ছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে জি টু জি প্লাস প্রক্রিয়ায় দশ সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা দিন দিন বাড়ছে।
সিন্ডিকেটের বেড়া-জালে পড়ে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু কর্মীদের চড়া অভিবাসন ব্যয় মেটাতে নাভিশ্বাস উঠছে। অ্যাপ্রæভাল ছাড়াই মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু কর্মীদের স্বাস্থ পরীক্ষা করে মেডিকেল সেন্টারগুলো কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার কয়েক মাস পরেও ভিসা না পাওয়ায় বিপুল সংখ্যক কর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। অন্য দেশে যেতে চাইলে তাদের পাসপোর্টও ফেরত দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বায়রার একাধিক সূত্র এতথ্য জানিয়েছে। সউদী আরবের সফর জেল থেকে দফায় দফায় বাংলাদেশী নারী গৃহকর্মীরা খালি হাতে দেশে ফিরছে। সউদী থেকে প্রচুর রেমিটেন্স আয়ের স্বপ্ন ভেঙ্গে যাচ্ছে অনেক অভিবাসী নারী কর্মীর। বুকভরা আশা নিয়ে এসব নারী কর্মীরা নিজের শিশু সন্তান ও স্বামীকে দেশে রেখে পাড়ি দিয়েছিলো তেল সমৃদ্ধ দেশ সউদী আরবে। রোববার দিবাগত রাত ৮টায় ইত্তেহাদ এয়ার ওয়েজের একটি ফ্লাইট যোগে সউদী আরবের সফর জেল থেকে ৩৬ জন নারী কর্মী খালি হাতে দেশে ফিরেছে। নানাভাবে নির্যাতনের শিকার এসব নারী কর্মীর অনেকেই হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌছে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শিরা এতথ্য জানিয়েছে। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও ব্র্যাকের সহযোগিতায় সউদী সফর জেল থেকে মহিলা গৃহকর্মীরা খালি হাতে দেশে ফিরছে।
সউদী নিয়োগকর্তাদের অধীনে এসব নারী কর্মী নানা হয়রানির শিকার হয়ে সেইফ হোম ও সফর জেলে আশ্রয় নিচ্ছে। রিয়াদ ও জেদ্দাস্থ তিনটি সেইফ হোমে আশ্রিত বাংলাদেশী নারী কর্মীদের দেখভাল করতে মিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। এসব সেইফ হোমে আশ্রিত নারী কর্মীদের খাবার সরবরাহ এবং কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে সরকারের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। আরো নারী কর্মী দেশে ফেরার অপেক্ষায় সউদীর সফর জেল ও সেইফ হোমে অপেক্ষা করছে। সউদী সফররত বাংলাদেশী প্রতিনিধি দল গতকাল বুধবার ১৪ মার্চ রিয়াদে উভয় দেশের জয়েন্ট টেকনিক্যাল কমিটি’র অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে বাংলাদেশী অভিবাসী নারী কর্মীদের সৃষ্ট সংকট দ্রæত সমাধান এবং তাদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি জোড়ালোভাবে উত্থাপন করা হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য জানিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী মোট শ্রম অভিবাসীর সংখ্যা ১ কোটি ১৪ লক্ষ ৬৪ হাজার ৯৪৩ জন। বিশ্বের প্রায় ১৬২ টি দেশে বাংলাদেশের শ্রমঅভিবাসীরা কাজ করছে।
তবে বাংলাদেশের শ্রমবাজার মূলত ১১ টি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ। দেশগুলো হলো- সউদী আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইইউ), ওমান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, লেবানন, জর্ডান ও লিবিয়া। এর বাইরে অন্য দেশে বাংলাদেশী শ্রমিকের হার তুলনামূলক কম। বর্তমানে ১৬১টি দেশে বাংলাদেশীরা শ্রমে নিয়োজিত থাকলেও ৩৪টি দেশে লেবার এটাসে রয়েছে। ফলে বিশ্বের অনেক দেশে অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্যা সেখানকার কুটনৈতিক মিশনগুলো যথাসময়ে সমাধান করতে পারছে। কিন্তু এখনও অনেক দেশের দূতাবাসে কাঙ্খিত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আবার অভিবাসীদের জন্য কূটনৈতিক মিশনের সেবা সংক্রান্ত তথ্য অভিবাসীদের নিকট পৌছানোর ব্যবস্থা অপ্রতুল। অভিবাসী শ্রম বিশ্লেষক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সউদী আরবে জনশক্তি রফতানির চাহিদা কমে যাচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাবে সউদী থেকে দফায় দফায় মহিলা গৃহকর্মীরা খালি হাতে দেশে ফিরছে। তিনি বলেন, প্রবাসী সচিব ড. নমিতা হালদারের নেতৃত্বে বর্তমানে জয়েন্ট টেকনিক্যাল কমিটির মিটিংয়ে অংশ নিতে একটি প্রতিনিধি দল সউদী আরবে সফরে রয়েছে। সউদীতে বেশি বেশি বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ এবং মহিলা গৃহকর্মীদের সংকট নিরসনে সফররত বাংলাদেশী প্রতিনিধি দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলেও হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যত প্রতিযোগিতামূলক বৈদেশিক কর্মসংস্থানের বিষয়টি আমাদের জন্যে কতোটা অনুকূলে থাকবে তা এখনই ভাবতে হবে। কেননা বহুবিধ কারণেই বিশ্ব শ্রমবাজারে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতি যেভাবে বদলে যাচ্ছে এবং দেশে যে হারে বেকারত্ব বাড়ছে তাতে করে বিশ্ব শ্রম বাজারে আমাদের আরো জায়গা করে নেওয়া ও শ্রমিক পাঠানোর বিকল্প নেই। হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, প্রতিবছর দেশের অন্তত ২৬ থেকে ৩০ লক্ষ তরুণ শ্রমবাজারে ঢুকতে পারছে না। ফলে ব্যাপক সংখ্যক তরুণ কার্যত বেকারই থেকে যাচ্ছে। এ কারণে আমাদেরকে অবশ্যই নতুন নতুন শ্রমবাজারে প্রবেশের জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। জনশক্তিখাতে কতোটা জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, সুশাসন, ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটা আত্মমূল্যায়নের সময় এসেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বছর কয়েক আগে আইওএম তাদের এক গবেষণাপত্রে বলেছিল দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের শ্রমিকদের অভিবাসন ব্যয় সবচেয়ে বেশি। যে টাকা খরচ করে ভারত, নেপাল থেকে একজন শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্য বা অন্যান্য দেশে গমন করতে পারছে সেই তুলনায় বাংলাদেশের একজন শ্রমিকের তার চেয়ে বেশ কয়েকগুণ টাকা খরচ হচ্ছে। জি টু জি প্লাস প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে দশ সিন্ডিকেট নতুন খেলা শুরু করছে বলে অভিযোগ উঠছে। সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয়ের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি টাকা দিয়ে কর্মীরা মালয়েশিয়ায় যাতে বাধ্য হচ্ছে। ভিটেমাটি , গবাদিপশু বিক্র ও ঋণ করে চড়া অভিবাসন ব্যয়ের টাকা জোগাড় করতে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু কর্মীদের নাভিশ্বাস উঠছে। দশ সিন্ডিকেট চক্র ২০১৭ সালের ৮ মার্চ থেকে গত ৮ মার্চ পর্যন্ত জি টু জি প্লাস প্রক্রিয়ায় ১ লাখ ১২ হাজার ৮শ’ ৬৫ জন কর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়েছে। কর্মী নিয়োগের অ্যাপ্রæভাল হাতে না পেয়েই মেডিকেলের নামে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু কর্মীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। সিন্ডিকেটের অধীনের প্রায় তিন লাখ কর্মী মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য কোনো প্রকার অ্যাপ্রæভাল ছাড়ার জনপ্রতি ৫ হাজার ৩শ’ টাকা দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রহর গুণছে। অপেক্ষমান এসব কর্মীদের অনেকেরই স্বাস্থ্য পরীক্ষার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। কেউ দ্বিতীয় বার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গেলে পুনরায় জনপ্রতি ৫ হাজার ৩শ’ টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় গিয়েও প্রত্যেক কর্মীকে দ্বিতীয় বার ১শ’ ৮০ রিঙ্গিত দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হচ্ছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সুযোগ পেলে গত এক বছরে প্রায় তিন থেকে চার লাখ কর্মী দেশটিতে চাকুরি লাভের সুযোগ পেতো । অভিজ্ঞ মহল এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
বায়রার সভাপতি বেনজীর আহমেদ সম্প্রতি ইনকিলাবকে বলেন, সউদী আরবে জনশক্তি রফতানির ফ্লো’ একদম কমে গেছে। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে সউদী আরবে নারী-পুরুষ কর্মী মিলে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ গেছে। এক প্রশ্নের জবাবে বায়রা সভাপতি বলেন, ভ্রাতৃ-প্রতীম সউদী আরবে আমাদের নারী কর্মীরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে এটা খুবই দু:খজনক। তিনি বলেন, সউদী আরব একটি শর্ত আরোপ করেছে দেশটিতে নারী কর্মী না পাঠালে পুরুষ কর্মীর ভিসা দিবে না। এ ধরনের শর্তারোপের বিষয়টি আমাদেরকে বেকায়দায় ফেলেছে। বায়রা সভাপতি বলেন,র্ রিয়াদে গতকাল জয়েন্ট টেকনিক্যাল কমিটি’র দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে অভিবাসী নারী-পুরুষ কর্মীদের সৃষ্ট সংকট নিরসনের বিষয়টি উত্থাপন করেছে। কুয়েত সরকার সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী নিয়োগে স্থগিতাদেশ জারি করেছে। গৃহকর্মীদের ভিসা ইস্যুতে নানা অনিয়ম এবং বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হওয়ায় কুয়েত সরকার বাংলাদেশী গৃহকর্মী নিয়োগ আপাতত সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। অভিবাসী কর্মীদের ভোগান্তি লাঘব এবং কর্মক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলেই বাংলাদেশী গৃহকর্মী নিয়োগ পুনরায় চালু হবে বলে কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত আবুল কালাম আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। রাষ্ট্রদূত আবুল কালাম ইনকিলাবকে বলেন, ভ্রাতৃ-প্রতীম কুয়েতের সাথে বাংলাদেশের চমৎকার সর্ম্পক বিদ্যমান। কুয়েতে বাংলাদেশী কর্মীরা অত্যান্ত সুনামের সাথে কাজ করছে। কুয়েতের শ্রমবাজারের দ্বার বাংলাদেশীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বলেও রাষ্ট্রদূত আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অবৈধ অভিবাসী কর্মীদের স্ব স্ব দেশে ফিরে যাওয়ার সুবিধার্থে ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ আরো দু’মাস বাড়িয়েছে কুয়েত সরকার। কুয়েতে কর্মী প্রেরণকারী একটি রিক্রুটিং এজেন্সি’র স্বত্বাধিকারী ইনকিলাবকে বলেন, কুয়েতে প্রচুর বাংলাদেশী কর্মীর চাহিদা রয়েছে। যেসব কর্মীর ভিসা ইস্যু হয়েছে তারা কুয়েতে যেতে পারবে বলেও ঐ জনশক্তি রফতানিকারক উল্লেখ করেন।
মালয়েশিয়ায় জি টু জি প্লাস প্রক্রিয়ায় দশ সিন্ডিকেট চলতি মার্চ মাস থেকে নতুন কৌশলে শ্রমবাজারে কালো থাবা দিয়েছে। বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সি’র সংগ্রহকৃত কর্মী নিয়োগের অ্যাপ্রæভালের প্রায় ৪০% নিজেরা একতরফাভাবে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট এজেন্সি ১শ’ অ্যাপ্রæভাল তাদের পাইপ লাইনে জমা দিলে মাত্র ৬০% অ্যাপ্রæভালের মাধ্যমে কর্মী প্রেরণের সুযোগ পাবে। এজেন্সিগুলো মালয়েশিয়া থেকে একটি অ্যাপ্রæভাল সংগ্রহ করতে তিন থেকে চার হাজার রিঙ্গিত ব্যয় করছে। দশ সিন্ডিকেট এজেন্সি’র সংগ্রহকৃত ৪০% অ্যাপ্রæভাল নিয়ে জনপ্রতি ২৮শ’ রিঙ্গিত পরিশোধ করতে সম্মত হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন রিক্রুটিং এজেন্সি’র স্বত্বাধিকারী গতকাল এতথ্য জানিয়েছেন। তার মতে, একটি অ্যাপ্রæভাল ক্রয় করতে প্রায় চার হাজার রিঙ্গিত ব্যয় করতে হয়। অথচ সিন্ডিকেট চক্রের অনলাইন সিষ্টিমে এসব অ্যাপ্রæভাল ঢুকালে চোখের পলকেই তারা নিয়ে যাবে। এ খবর দ্রæত ছড়িয়ে পড়ায় অধিকাংশ রিক্রুটিং এজেন্সি’র মালিক কর্মী নিয়োগের শত শত অ্যাপ্রæভাল হাতে পাওয়ার পরেও সিন্ডিকেটের জালে ঢুকাচ্ছে না। বায়রার সভাপতি বেনজনীর আহমেদ বলেন, রোববার দিবগত রাতে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে এক মিটিং হয়েছে। ঐ মিটিংয়ে বায়রার মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপনও উপস্থিত ছিলেন। ঐ মিটিংয়ে দশ সিন্ডিকেটের পক্ষে চলতি মাস থেকে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর সংগ্রহকৃত একশ’ অ্যাপ্রæভাল থেকে ২৫% অ্যাপ্রæভাল তারা নেয়ার প্রস্তাব দেয়। বাকি ৭৫% অ্যাপ্রæভালের মাধ্যমে স্ব স্ব রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী পাঠাতে পারবে। দশ সিন্ডিকেট জানিয়েছে অভিবাসন ব্যয় কমিয়ে আনা এবং অতিরিক্ত ভিসা ট্রেডিং বন্ধ করার জন্য এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজার দীঘ সাড়ে চার বছরেও উন্মুক্ত না হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বায়রা সভাপতি বেনজীর আহমেদ সেন্ডিং কান্ট্রিগুলো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানাভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে । বায়রা সভাপতি আমিরাতের সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামান করেন। ইর্স্টান বে-বাংলাদেশ-এর স্বত্বাধিকারী আলহাজ গিয়াস উদ্দিন বাবুল জনশক্তি রফতানি খাতে মধ্যসত্ত¡ভোগীদের দৌরাত্ব অব্যাহত এবং শুধুমাত্র ১০ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে সিন্ডিকেট তৈরি হওয়ায় অভিবাসন ব্যয় দিন দিন বাড়ছে। বিদেশে কর্মী নিয়োগে অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় এখনও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, দশ সিন্ডিকেটের পরিবর্তে সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিকে জি টু জি প্লাস প্রক্রিয়ায় কর্মী প্রেরণের সুযোগ দেয়া হলে জনশক্তি রফতানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে মহিলা গৃহকর্মী প্রেরণকারী রিক্রটিং এজেন্সি এসোসিয়েশন-এর আহবায়ক আফতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সউদীতে মহিলা গৃহকর্মী প্রেরণে সৃষ্ট সংকট নিরসনের দাবীতে জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, সউদী বৃহৎ মহিলা নিয়োগকারী কোম্পানীগুলো বাংলাদেশী মহিলা প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সি’র ন্যায্য কমিশন না দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছে। সম্প্রতি ৬ টি রিক্রুটিং এজেন্সি’র বিরুদ্ধে লাখ লাখ রিয়াল পাওয়ার মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। এ ব্যাপারে ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস এসব রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে সউদীতে মহিলা গৃহকর্মী পাঠানো বন্ধ করে দেয়া হবে। এতে বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি আক্তারুজ্জামান বাবুল, বায়রার সাবেক মহাসচিব মনছুর আহমেদ কালাম, বায়রার সাবেক যুগ্ন-সচিব-১ আলহাজ আবুল বাশার, নুরুল আমিন, নাসির উদ্দিন মজুমদার সিরাজ, আব্দুল হালিম, ফজলুল মতিন তৌহিদ মোবারক উল্লাহ শিমুল। আফতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মহিলা প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সি’র গঠিত ফোরাম দশ সিন্ডিকেটের কাছে মাথা বিক্রি করবে না। তারা সউদীর বৃহৎ শ্রমবাজার ধরে রাখতে সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
আজিজুর রহমান ১৫ মার্চ, ২০১৮, ২:৩২ এএম says : 0
শ্রমশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকারকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করতে হবে।
Total Reply(0)
রাশেদ ১৫ মার্চ, ২০১৮, ২:৩৩ এএম says : 0
নিউজটি করার জন্য ইনকিলাবকে ধন্যবাদ
Total Reply(0)
moniruzzaman ১৫ মার্চ, ২০১৮, ২:৫৯ পিএম says : 0
IN KUWAIT BANGLADESHI ARE MODERN DAS.WE ARE AS LOW THAT AS SERVENT WE ARE NOT ALLOWED.WHAT A SHAME FOR US!
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন