শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটে ভাঙা ঘরে পাঠদান

| প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা: তাড়াশের সীমান্তবর্তী দেশীগ্রাম ইউনিয়নের প্রত্যন্ত কাটাগাড়ি এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়ানোর ব্রত নিয়ে ১৯৮৪ সালে ইবতেদায়ী শিক্ষা দিয়ে বলদি পাড়া দাখিল মাদরাসার যাত্রা শুরু। কাটাগাড়ি গ্রাম কেন্দ্রিক গড়ে ওঠা এ মাদরাসাটিতে সেই সময় বনের বেড়া আর দোচালা টিনের চালের দুইটি কক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করা হত।
পরবর্তীতে এলাকার সাধারণ লোকজনের দান-অনুদানে বনের বেড়ার জায়গায় টিনের বেড়ার চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি বিদ্যালয় ঘর নির্মান করা হয়। এরপর ২০১৫ সালে মাদরাসার নিজস্ব অর্থায়ন ও শিক্ষক-কর্মচারীদের সহায়তায় তিন লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ইটের দেওয়াল আর টিনের চালের তিন কক্ষ বিশিষ্ট আরো একটি ভবন নির্মান করা হয়। তবুও মাদরাসাটিতে শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়ে গেছে চরমে। বর্তমানে এ মাদরাসায় ইবতেদায়ী প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ও শিশু শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করছে ৩শ’ ৮৫ জন ছাত্র-ছাত্রী। এদের মধ্যে ২শ’ ৮০ জনের মত ছাত্রী।
মাদরাসার শিক্ষার্থী আম্বিয়া খাতুন, সুমাইয়া খাতুন, তাছলিমা খাতুন, মারুফা পারভীন, সোহেল রানা, নাছিম, সাগর হোসেনসহ অনেকে জানান, চার কক্ষ বিশিষ্ট টিনের বিদ্যালয় ঘরটির একেবারে ভঙ্গুর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শ্রেণিকক্ষ সংকটে এ ভাঙা ঘরটিতেই চলছে পাঠদান। বছর জুড়ে কখনো রোদে পুড়ে আবার কখনো বৃষ্টিতে ভিজে দীর্ঘ সময় পাঠদান হয়। বৃষ্টি নামলে ফুটো টিন দিয়ে পানি পড়ে। ভাঙা দরজা-জানালা দিয়ে পানির ছাটা এসে বইখাতা আর পরনের পোশাক ভিজে যায়। ঝড়ের দিনে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় শুরু হয় ছুটোছুটি। এভাবে পড়ালেখায় মনোযোগ নষ্ট হয়। এ চারটি শ্রেণি কক্ষের একটিতেও বৈদ্যুতিক পাখা নেই। এক বেঞ্চে ৫-৬ জন বসতে হয়। এরপরও শ্রেণিকক্ষে জায়গা সংকটে দাঁড়িয়ে ক্লাস করতে হয়। গাদাগাদি বসে প্রচন্ড গরমে ঘেমে ঠান্ডা-কাশিতে মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এ সময় তারা আরো জানায়, মাদরাসাটিতে কম্পিউটার ব্যবহারিক কক্ষ নাই। নামাজ ঘর, টিফিন রুম, ছাত্রীদের কমন রুমও নাই এ মাদরাসাটিতে। শৌচাগার সমস্যাও চরমে। চারপাশে সুরক্ষা প্রাচীর না থাকায় গরু, ছাগল, কুকুর, বিড়াল ঢুকে পড়ে মাদরাসা আঙিনার ভেতরে। কখনো শ্রেণি কক্ষেও ঢুকে পড়ে এসব প্রাণী।
এদিকে ২০০১-২০০২ অর্থ বছরে ফ্যাসেলিটিজ বিভাগ ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি এক কক্ষ বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করে দেয়। সেখানেও ১৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে সঙ্কুচিত হয়ে বসতে হয়।
এ প্রসঙ্গে বলদি পাড়া দাখিল মাদরাসার সুপারেনটেনডেন্ট মো. আলী আকবর সিদ্দিক টিনের ভাঙা ঘরের জায়গায় একটি নতুন ভবন নির্মাণের জোর দাবি জানিয়ে বলেন, এমপিও ভুক্ত এ মাদরাসাটির শিক্ষার মান বেশ ভালো। তবে শ্রেণিকক্ষ সংকটে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান বিঘিœত হচ্ছে। তিনি এও বলেন, বর্তমানে মাদরাসাটিতে নতুন-পুরাতন মিলে ৮টি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে টিনের বিদ্যালয় ঘরটি পাঠদানের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ। এ মাদরাসায় শ্রেণিকক্ষ, কম্পিউটার ব্যবহারিক কক্ষ, নামাজ ঘর, লাইব্রেরি রুম, ছাত্রীদের কমন রুম মিলে ৮টি কক্ষ প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন বলেন, শ্রেণিকক্ষ ও অন্যান্য সংকট নিরসনে সরকারিভাবে বলদি পাড়া মাদরাসায় ভবন নির্মান করা অতিব জরুরি। শিগগিরই মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত আবেদন নিয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানোর কথাও জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন