অনেকে সুস্থ থাকতে ব্যায়াম করেন। তবে অনেকেই জানেন না, ব্যায়াম যদি ঠিকমতো না-হয়, তবে শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাই সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকতে ব্যায়াম করার নিয়মগুলো ভালোভাবে জানা প্রয়োজন যেমন-
-ব্যায়ামের কোনও নিদিষ্ট সময় নেই। যে-কোনো সময়ই যোগব্যায়াম করা যায়। তবে খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কখনও যোগব্যায়াম করবেন না। অন্ততপক্ষে খাবার খাওয়ার তিন ঘন্টা পরে ব্যায়াম করতে পারেন। কোনো পানীয় পান করার পরেও যোগব্যায়াম করবেন না। এতে কোনো উপকারিতা পাওয়া যায় না।
-বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বয়সটা একটু খেয়াল রাখবেন। বাচ্চার পাঁচ বছর বয়সের পরই তাকে ব্যায়াম করতে শেখাবেন।
-আপনি যে ব্যায়ামই করুন না-কেন, শুরুতেই সামান্য স্ট্রেচিং করে নিন। তা না-হলেই পেশিতে আঘাত লাগতে পারে।
-প্রথম পাঁচ মিনিট হালকা কোনো ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম করার সময় যদি আপনার কোনোরকম শ্বাসের কষ্ট বা ব্যথা হয়, তবে তখনই ব্যায়াম থামিয়ে দিন।
-ব্যায়াম করার সময় স্বাভাবিক নিশ্বাস নিন। তবে ব্যায়ামের পদ্ধতি অনুসারে যেমন ছন্দে থাকার প্রয়োজন, তেমনই থাকুন।
-ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞর পরামর্শ প্রয়োজন। আপনার শরীরের জন্য কোনটা ঠিক হবে তিনিই সেটা বলে দেবেন।
-ঢিলেঢালা পোশাক পরে ব্যায়াম করবেন। এতে আপনার শারীরিক কোনও কষ্ট হবে না।
-সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করুন। কারণ, ভরা পেটে ব্যায়াম করা উচিৎ নয়। এছাড়া ভরা পেটে ব্যায়াম করলে আপনি কোনো উপকারই পাবেন না।
-ব্যায়ামের পর হালকা খাবার খান। যেমন- টোস্ট, আপেল, জুস, ইত্যাদি।
-আসন করার সময় চোখ বন্ধ রাখুন। এতে আপনি মানসিক একটা শান্তি উপভোগ করতে পারবেন।
-কাজের চাপে এখন অনেকেই দীর্ঘ সময় ব্যায়াম করতে পারেন না। তাই কিছু হালকা ব্যায়াম করুন। যাতে আপনি সুস্থ থাকতে পারেন।
-বাড়িতে কিছু ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম করুন। এতে সময় একেবারেই কম লাগবে। অবসর সময় বসে না- থেকে হাঁটাচলা করুন।
-বিভিন্ন সময় ষ্ট্রিচিং ব্যায়াম করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়।
-জগিং খুব ভালো ব্যায়াম। সকালে বা বিকালে বাড়ির বাগানে জগিং করতে পারেন। তবে যোগাসন করার সময় আশপাশে পরিবেশ যেন শান্ত থাকে।
-পুশ আপ করতে পারেন। এই ব্যায়াম পেশির শক্তি বাড়ায়।
-পাঁচ মিনিট কাঁধ, হাত- পা, কোমর ঘুরিয়ে নিন। রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে। পাশাপাশি সারাদিনের কাজ করার এনার্জি পাবেন।
সঠিক বসার নিয়মও আপনাকে ব্যায়ামের উপকারিতা দেয়। অনেক সময় চেয়ার কিংবা টুলে দীর্ঘক্ষণ বসলে পিঠে ব্যথা হয়। আবার বাড়িতে থেকে যখন আপনি অফিসের কাজ করেন, তখনও একভাবে বসে কাজ করার ফলে কোমরে, কাঁধে ব্যথা করে। এবার থেকে টুল বা চেয়ারের পরিবর্তে এক্সারসাইজ বল-এ বসুন। এখানে বসেই আপনি কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপে কাজ করতে পারেন। মজার কোনো টিভি প্রোগ্রাম দেখতে পারেন। এতেও আপনার ওজন কমানো সম্ভব। আসলে হাসলে আপনার শরীরের অনেকটা ক্যালোরি কমে। তাই মাঝে-মধ্যেই হাসির কোনো সিনেমা বা টিভি প্রোগ্রাম দেখুন।
যাঁরা ব্যায়াম করার সময় পান তাঁরা প্রতিদিন এই ব্যায়ামগুলো অবশ্যই করুন। যেমন- ধ্যান, অনুলোম- বিরোম, কপালভাতি, পবনমুক্তাসন, ভুজঙ্গাসন, বজ্রাসন, অর্ধচক্রাসন প্রভৃতি। তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। প্রতিদিন সকালে ৪৫ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করুন। যাঁদের নিয়মিত মর্নিংওয়াকের অভ্যাস রয়েছে, তাঁদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। মর্নিংওয়াক আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল বাড়াতে সাহায্য করে। তাই ডায়েটিংয়ের মতো দু:সাধ্য জিনিস বাড়াতে এড়িয়ে রোজ সকালে নিয়ম করে হাঁটাচলা করুন।
দিনের কিছুটা সময় নিজেকে দিন। চুপচাপ থেকে কিংবা মেডিটেশন করে, যেমনভাবে আপনার থাকতে ভালো লাগে সেভাবেই নিজের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটান। এতে আপনার মনে শান্তি আসবে।
-আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক-কলামিস্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন