বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মার্চে ৪৫ ভাগ অতিবৃষ্টির রেকর্ড

প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শফিউল আলম : গত মার্চ মাসে (ফাল্গুন-চৈত্র) সারাদেশে সার্বিকভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগের মাসেও (ফেব্রুয়ারি) সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে শতকরা ৩৮ ভাগ বেশি হারে বৃষ্টিপাত হয়েছে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশের (ট্রাফ) প্রভাবে এবং পশ্চিমা লঘুচাপের সাথে পুবালি বায়ুপ্রবাহের সংযোগ ঘটার ফলেই দেশের অনেক জায়গায় ভারী বর্ষণ হয়েছে। আবহাওয়ার এমনি এলোমেলো অবস্থায় চলতি এপ্রিল ও আগামী মে মাসেও অর্থাৎ চৈত্র-বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস প্রাক-বর্ষা ঋতু পর্যন্ত সমগ্র দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। গত ফাল্গুন-চৈত্র (মার্চ) মাসের বৃষ্টিপাত বিগত ১০ বছরের মধ্যে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বর্ষণ। ২০০৫ সালে এই সময়ে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৪৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রদানের লক্ষ্যে গতকাল (রোববার) বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র ঢাকায় আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন আহমেদ।
বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় পূর্বাভাসে জানানো হয়, চলতি এপ্রিল (চৈত্র-বৈশাখ) মাসেও দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হারে বা পরিমাণে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এপ্রিল মাসে দেশের উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত ৩ থেকে ৪ দিন বজ্রসহ মাঝারি থেকে প্রবল আকারে কালবৈশাখী ঝড় বা বজ্রঝড় সংঘটিত হতে পারে। তাছাড়া দেশের অন্যত্র ৪ থেকে ৫ দিন পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি আকারে কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে।
চলতি মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ১টি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তীব্র তাপপ্রবাহের সময় পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঊর্ধ্বে উঠতে পারে। তাছাড়া দেশের অন্যত্র ১ থেকে ২টি মৃদু (৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সে.) থেকে মাঝারি (৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সে.) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এপ্রিলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পাহাড়ি ঢলের কারণে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। এ মাসের কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানানো হয়, এ মাসে দেশের দৈনিক গড় বাষ্পীভবন ৪.২৫ থেকে ৫.২৫ মিলিমিটার এবং গড় উজ্জ্বল সূর্য কিরণকাল পৌনে ৭ ঘণ্টা থেকে পৌনে ৮ ঘণ্টাকাল স্থায়ী থাকতে পারে।
উপরোক্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় জানানো হয়, বিগত মার্চ মাসে সারাদেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা ৪৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ মাসে সিলেট বিভাগে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত, বরিশাল বিভাগে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাত এবং অন্যান্য বিভাগে স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। পশ্চিমা লঘুচাপের সাথে পুবালি বায়ুপ্রবাহের সংযোগ ঘটার কারণে মার্চ তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগসহ অনেক স্থানে বজ্রঝড়সহ ভারী বর্ষণ হয়। গত মাসে রংপুর বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৭৩ শতাংশ বেশি, রাজশাহী বিভাগে ১৫৭ শতাংশ বেশি, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৮ শতাংশ বেশি, বরিশাল বিভাগে ৩৫.৬ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত মাসে দেশের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা যথাক্রমে ১.৩ ডিগ্রি সে. এবং ১.৭ ডিগ্রি সে. বেশি ছিল। বৃষ্টিপাত ও বৃষ্টিপাতের দিন সংখ্যা, কালবৈশাখী বা বজ্রঝড়, তাপপ্রবাহ, কৃষি আবহাওয়া এবং দেশের নদ-নদীর অবস্থা মার্চ মাসের পূর্বাভাসের সাথে সংগতিপূর্ণ ছিল বলে জানায় আবহাওয়া বিভাগ।
এদিকে চলতি এপ্রিল মাসে দেশের ৭টি বিভাগওয়ারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এতে ঢাকা বিভাগে ৮ থেকে ১০ দিনে ১৪০ থেকে ১৮০ মিলিমিটার, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭ থেকে ১০ দিনে ১৪০ থেকে ১৭৫ মিলিমিটার, সিলেট বিভাগে ১৩ থেকে ১৬ দিনে ৩০০ থেকে ৩৭০ মিলিমিটার, রাজশাহী বিভাগে ৬ থেকে ৮ দিনে ৮০ থেকে ১০০ মিলিমিটার, রংপুর বিভাগে ৬ থেকে ৮ দিনে ৯০ থেকে ১০৫ মিলিমিটার, খুলনায় ৫ থেকে ৭ দিনে ৭০ থেকে ১১০ মিলিমিটার এবং বরিশাল বিভাগে ৭ থেকে ৯ দিনে ১৩০ থেকে ১৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন