এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারো মাঠে ফিরছে ইউরোপিয়ান ফুটবল। খুব বেশি যে উত্তাপ অপেক্ষা করছে তা বলা যাবে না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথম লেগেই ম্যাচের ভাগ্য অনেকটাই অনুকূলে নিয়ে উত্তেজনার আগুনে পানি ঢেলেছে বার্সেলোনা ও লিভারপুল। ভালো কিছু করতে হলে তাই নজির স্থাপন করতে হবে ম্যানচেস্টার সিটি ও রোমাকে।
মাঝের সময়টাও যে তাদের ভালো গেছে তা বলা যাবে না। দুই দলই ঘরোয়া লিগে হেরেছে ঘরের মাঠে। জিতলেই শিরোপা- এমন হিসাবের সামনে দাঁড়িয়ে মর্যাদার ম্যাচে নগর প্রতিদ্ব›দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেও ৩-২ গোলে হেরেছে সিটি। আর ফিওরেন্তিনার কাছে রোমার হার ছিল ২-০ গোলের।
এমতাবস্থায় প্রিয় ক্লাব বার্সেলোনার কাছ থেকে কি প্রেরণা খুঁজছেন পেপ গার্দিওলা? প্রথম লেগের পর দল যখন ৩-০ গোলে পিছিয়ে তখন বার্সাই তো গার্দিওলার প্রেরণার নাম হওয়ার কথা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক-আউট পর্বে প্রথম লেগে তিন গোলে পিছিয়ে থাকার পর ঘুরে দাঁড়ানোর নজির এমনিতেই কম। তবে প্রেরণা পেতে খুব বেশি পিছনে যেতে হবে না গার্দিওলাকে। গেল মৌসুমেই প্রত্যবর্তনের রেকর্ড গড়ে শেষ আটে জায়গা করে নিয়েছিল বার্সা। প্রথম লেগে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) মাঠে ৪-০ গোলে হারের পর অনেকেই বার্সার শেষ দেখে ফেলেছিলেন। কিন্তু যে দলে মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের মত তারকা সেই দল দমে যাবে কেন। ন্যু ক্যাম্পের ম্যাচে পিএসজিকে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত করে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল লুইস এনরিকের দল।
এবারো সিটি ও রোমার আশা যেটুকু তা হলো, দুই দলই এবার নামবে ঘরের মাঠে। দুই দলকেই মেটাতে হবে নূন্যতম তিন গোলের ঘাটতি। আনফিল্ডে প্রথমার্ধে মাত্র ১৯ মিনিটের এক স্পেলে তিন গোল খেয়ে বসে সিটি। ইউরোপিয়ান ফুটবলে এমন দুর্দশাগ্রস্থ গার্দিওলাকে দেখা গেছে খুব কমই। আসরে টিকে থাকতে এখন তাদের করতে হবে নূন্যতম ৪-০ গোলে। আর কোনক্রমে যদি ইয়ুর্গুন ক্লপের শিষ্যরা একটি গোলের দেখা পেয়ে যায় তাহলে গার্দিওলার জন্য কাজটা আরো কঠিন হয়ে যাবে। তবে গার্দিওলা বলেন, ‘আমরা জানি কি করতে হবে।’
প্রতিপক্ষ ক্লপ বলেই ভয়টা বেশি। পুরো মৌসুমেই সিটি হেরেছে হাতে গোনা কয়েরকটি ম্যাচ। এর মধ্যে দুইটিই আবার ক্লপের লিভারপুলের কাছে। প্রিমিয়র লিগে ইউনাইটেডের কাছে হারের আগে সিটির একমাত্র হার ছিল অল রেডদের কাছেই। সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও সেরা খেলাটাই খেলতে চান ক্লপ, ‘আবারো আমাদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে। আমরা তো হারতেও পারতাম আনফিল্ডে।’
এক্ষেত্রে অবশ্য কিছুটা হলেও সিটির চেয়ে এগিয়ে রোমা। বার্সার মাঠে ৪-১ গোলে হারলেও প্রতিপক্ষের মাঠে মূল্যবান একটা গোল পেয়ে যায় তারা। যে কারণে আজ নূন্যতম ৩-০ গোলে জিতলেই সেই অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা নিয়ে শেষ চারে পৌঁছে যাবে সেরি আ’র দলটি। এজন্য যে তাদের কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে সেটা ভালোমতই জানেন রোমা কোচ এসেবিও ডি ফ্রান্সেসকো, ‘আমি আসলে এখানে কিছুই না। শুধু ক্লাবের একটা অংশ মাত্র। আমি আমার পরিকল্পনা জানাতে পারি ও তাদের আত্মবিশ্বাসী করতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘ভুল যত কম করা যায়। যেটা আমরা সব সময় করে থাকি।’
ফ্রান্সেকোর ইঙ্গিতটা কোন দিকে তা যারা প্রথম লেগের খেলা দেখেছে তারা জানেন। বার্সা সেদিন যতটা না ভালো খেলে জিতেছে তার চেয়েও বড় অবদান ছিল রোমার। রক্ষণের ভুলেই তো প্রথম দুই গোল খায় রোমা, দুটিই ছিল আত্মঘাতি। একই কারণে নির্ভার হলেও চিন্তামুক্ত নন বার্সা কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে, ‘ফুটবল হলো ভুলের খেলা। আমরা সকলে চাই ভুল না করে পারফেক্ট খেলা খেলতে, কিন্তু পারি না। এমনকি কোচরাও না।’ কাতালান কোচ বলেন, আমরা ভালো অবস্থানে আছি ঠিকই কিন্তু রোমাকে হালকাভাবে নিচ্ছি না।
রোমা : বার্সেলোনা
ম্যান সিটি : লিভারপুল
ম্যাচ শুরু রাত পৌনে ১টায়
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন