মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

এরশাদের গরুর মালিক কে?

প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় পার্টির (এরশাদ) একটি গ্রুপ একটি বিশেষ দল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বলে জানিয়েছেন দলটির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেন, ‘গরু আমার কিন্তু মালিকানা অন্যের হাতে’Ñ এমন বিষয় কাজ করছে জাতীয় পার্টির কতিপয় নেতার মাঝে। গতকাল রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জিএম কাদের ‘ভাসুরে নাম মুখে নিতে নেই’ কৌশলী হলেও দলের নেতাদের প্রশ্ন এরশাদের গরুর মালিকানা এই মুহূর্তে কার হাতে?
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, নির্বাচনে জোর যার মুল্লুক তার নীতির প্রতিফলন ঘটছে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষের অনাস্থার চরম প্রকাশ ঘটছে। নির্বাচনে হতাহতের ঘটনা অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করছে। অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয় পার্টি ইউপি নির্বাচন বর্জন করবে কি নাÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, আমরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকতে চাই। কারণ গণতান্ত্রিক সমাজে নির্বাচনই ক্ষমতা বদলের একমাত্র উপায়। যে সব ইউপি নির্বাচনে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে সেখানে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এর দায় কোনোভাবেই নির্বাচন কমিশন এড়াতে পারে না। ইউপি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টি চাঙ্গা হচ্ছে দাবি করে জাতীয় পার্টির এ নেতা বলেন, যদি সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠিত হত, তাহলে দলের নেতাকর্মীরা আরো উজ্জীবিত হত। সংবাদ সম্মেলনে পার্টির মহাসচিব রহুল আমীন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, নুরুল ইসলাম নুরুসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ১৬ এপ্রিল জাতীয় পাটির সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্বনির্ধারিত সময় ছিল। তবে এ সময়ের মধ্যে জেলা সম্মেলন সমাপ্ত করা যায়নি বলে তারিখ পিছিয়ে ১৪ মে’র নির্ধারণ করা হয়েছে।
উল্লেখ, রংপুরকে এরশাদের ঘাঁটি বলা হলেও বর্তমানে সেখানে সাংগঠনিকভাবে এবং জনসমর্থনের দিক দিয়ে জাতীয় পার্টির অবস্থান চতুর্থ। প্রতিটি নির্বাচনে দলটির ভরাডুবি ঘটছে। দলের নেতা কর্মীরা জানান, অতি সম্প্রতি রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী করার মতো লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে অপরিচিত লাতিফুল খাবির নামে এক যুবককে মনোনয়ন দেয়া হলে নির্বাচনে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। অপরদিকে, হারাগাছ পৌরসভায় মেয়র পদে জাতীয় পার্টি কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। এ জন্য চারবারের নির্বাচিত এমপি করিম উদ্দিন ভরসাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। প্রথম দফায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নে নির্বাচন হয়। সেখানে জাপা প্রার্থী দিলেও পরাজিত হয়। দ্বিতীয় ধাপে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টিতে প্রার্থী দিলেও ৩টিতে প্রার্থী দিতে পারেনি জাতীয় পার্টি। নির্বাচনে ৪ জন জাপা প্রার্থী দ্বিতীয় স্থান লাভ করলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সঙ্গে ভোটের ব্যবধান ছিলো অনেক বেশি। ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মধ্যে ১০টিতে আওয়ামী লীগ, আর একটিতে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হন। এ নির্বাচনে এরশাদ সমর্থিত প্রার্থীদের শোচনীয় পরাজয়ের পর দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা আর ক্ষোভ।
অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও তৃণমূলে বেহাল দশার কারণে দলের জাতীয় কাউন্সিল আবার পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে রওশনপন্থীরা হুমকি দিয়েছেন কাউন্সিলে রওশন এরশাদকে কো চেয়ারম্যান করা না হলে তারা পৃথক জাতীয় পার্টি গঠন করবেন। এ অবস্থায় দলের ভাঙ্গন ঠেকানো এবং তৃণমূল পর্যায়ে নাজুক অবস্থার মধ্যে জাতীয় কাউন্সিল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে জাতীয় পার্টির নেতারা জানান, জিএম কাদের কার্যত ‘গরু আমার কিন্তু মালিকানা অন্যের হাতে’ বলতে ক্ষমতাসীনদের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। কারণ দলের নেতারা মনে করেন রওশনপন্থী সংসদ সদস্যরা সরকারের নীতি নির্ধারকদের পুতুলে পরিণত হয়েছেন। কিন্তু রওশন বিরোধীরা সাহস করে সেটা উচ্চারণ করতে পারছেন না। কিন্তু এরশাদের গরুর মালিকানা কার হাতে এটা নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কৌতুক হাস্যরস হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
তুষার ৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:১৩ এএম says : 0
মেরুদন্ডহীন হলে এমনই হয়।
Total Reply(0)
Ripon Hasan ৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১০:১০ এএম says : 0
এ আবার বলা লাগে
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন