শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

শেয়ারবাজারে লেনদেন ও সূচকের উত্থান

প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশের উভয় বাজারে সূচকের উত্থান অব্যাহত রয়েছে। সোমবার চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের উভয় বাজারে সূচকের বড় ধরনের উত্থান হয়। এ নিয়ে টানা ৫ কার্যদিবসে মূল্য সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দিনের লেনদেন। সূচকের পাশাপাশি উভয় বাজারে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে।
সোমবার বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫২ দশমিক ৪২ পয়েন্ট। সা¤প্রতিক সময়ে এক দিনের ব্যবধানে সূচকের এ পরিমাণ উত্থান ঘটেনি। সূচকের এ উত্থানের ফলে দিনশেষে ডিএসইএক্স ৪৪৩১ দশমিক ৬৫ পয়েন্টে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। রোববার সূচক বেড়েছিল ২১ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট। গত ৫ দিনের টানা উত্থানে সূচক বেড়েছে প্রায় ১৩০ পয়েন্ট। এর আগে টানা দর পতনে ডিএসই সূচকের পতন হয়েছিল ১৪০ পয়েন্ট। এর ফলে ডিএসই সূচক ২৮ মার্চ ৪৩০০ পয়েন্টে নেমে যায় এবং তা ছিল গত ১১ মাসের মধ্যে ডিএসই সূচকের সর্বনিম্ন অবস্থান। মূলত এরপর থেকেই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে বাজার।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ক্রয় চাপে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দিয়েই শুরু হয় দিনের লেনদেন। লেনদেনের শেষ অবধি বাজারে ক্রয় চাপ অব্যাহত থাকায় ৫০ পয়েন্টেরও বেশি পয়েন্টের উল­ম্ফন হয়েছে বাজারে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, গত কয়েকদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে সূচক বাড়তে থাকায় বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। তবে বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের গুজব বা হুজুগের বশবর্তী না হয়ে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়ে তারা বলেন, কোম্পানির মৌলভিত্তি দেখে বিনিয়োগ করা উচিত। আবার মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারও অতিমূল্যায়িত দরে না কেনার পক্ষে তারা মত দিয়েছেন।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩২১টি ইস্যুর মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ১৯৫টির, কমেছে ৮৭টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯টির দর। এদিকে সোমবার প্রায় ৫০০ কোটি লেনদেন হয়েছে ডিএসইতে। দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৪৯০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। রোববার লেনদেন হয়েছিল ৩৭৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। রোববারের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১১৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা। লেনদেন বাড়ার এ হার ৩১ দশমিক ১২ শতাংশ। লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে তিতাস গ্যাস। দিনশেষে কোম্পানিটির ২৬ কোটি ৬৭ লাখ ৩ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইবনে সিনার লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৩৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা। ২১ কোটি ৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। লেনদেনে এরপর রয়েছে যথাক্রমে আমান ফিড, ইফাদ অটোস, বারাকা পাওয়ার, কেডিএস এক্সেসরিজ, বিএসআরএম, কেয়া কসমেটিকস, বেক্সিমকো ফার্মা।
দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিএসসিএক্স ১০৮ দশতিক ৫৮ পয়েন্ট কমে দিনশেষে ৮২৯১ দশমিক ৭০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪২ কোটি ২১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫০টির, কমেছে ৭১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির দর।
মার্চ মাসেও কমেছে ডিএসই’র রাজস্ব আদায় চলতি বছরের শুরু থেকেই পুঁজিবাজার থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় পাল্লা দিয়ে কমেছে। আগের দুই মাসের তুলনায় গত মার্চ মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে সরকার রাজস্ব আদায় বঞ্চিত হয়েছে দেড় কোটি টাকা। পুঁজিবাজারে চলমান মন্দার কারণে লেনদেন না হওয়ায় রাজস্ব আদায় কমেছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
ডিএসইর তথ্য মতে, জানুয়ারি মাসে ডিএসই থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৫ কোটি টাকা ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা। ফেব্রæয়ারিতে হয়েছে ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৭৮ হাজার ১১৬ টাকা। আর সেখান থেকে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৮৭ হাজার ৮০৪ টাকা কমে মার্চ মাসে রাজস্ব আয় হয়েছে ১০ কোটি ১৪ লাখ ৯৩ লাখ ৩১২ টাকা।
এর মধ্যে মার্চ মাসে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির ফলে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ৭ কোটি ৯৯ লাখ ৭২ হাজার ৬৭৫ টাকা। ফেব্রæয়ারি মাসে পেয়েছিলো ৮ কোটি ৬৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। এর আগে জানুয়ারি মাসে পেয়েছিলো ৯ কোটি ৪৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা।
অপরদিকে উদ্যোক্তা পরিচালক ও প্লেসমেন্ট শেয়ারধারীদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ও কমেছে। এই মাসে ২ কোটি ১৫ লাখ ২০ হাজার ৬৯৭ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে ডিএসই। ফেব্রæয়ারি মাসে ৩ কোটি ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আর জানুয়ারি মাসে ৩ কোটি ৮৮ লাখ ১৬ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করেছে ডিএসই। আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪, ধারা ৫৩ এর আওতায় ডিএসই ২০১৪-১৫ হিসাব বছরের ফেব্রæয়ারি মাসে সদস্য ব্রোকারেজ হাউজের কাছ থেকে এই রাজস্ব আদায় হয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন