রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা ঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের অত্যন্ত ব্যস্ততম “রূপসী টু কাঞ্চন” সড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন এ সড়কে চলাচলরত মানুষের ভোগান্তি যেন শেষ নেই। এই রাস্তাটি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ অসংখ্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, থানা, উপজেলা, ভূমি অফিস, প্রেসক্লাবসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে যাতায়াতের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এছাড়া প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকা দৈর্ঘ্য এ রাস্তাটির আশ-পাশের মানুষে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তাটিতে ছোট-বড় মিলে হাজার খানেক খানাখন্দ রয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার বড় বড় খানাখন্দ গুলোতে পানি জমে থাকে। দূর থেকে দেখে মনে হয়, এ যেন বড় কোন জলাশয় ! গাড়ী চলাচলের সময় রাস্তার বিভিন্ন স্থানের খানাখন্দে জমে থাকা পানি সম্পূর্ণ রাস্তাটিকেই কর্দমাক্ত করে তুলে। ফলে রাস্তাটি দেখে মনে হয় এ যেন ইরি বা বোরো ধানের ক্ষেত ! এ কাঁদামাটি ছিঁটে প্রায়ই যাত্রী ও পথচারীদের কাপড়-চোপড় ও মূল্যবান কাগজপত্রাদী নষ্ট করে দেয়।
উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে সিআরবিপি-২ প্রকল্পের আওতায় এ রাস্তাটি ৪ লেন করা হবে। এর নির্মাণের কাজ আগামী ১৮-১৯ অর্থ বছরে শুরু হবে। ইতিমধ্যে রাস্তাটির সার্ভে সম্পন্ন হয়েছে এবং ডিজাইন ও প্রাকোলন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, এ রাস্তার পাশেই গড়ে উঠেছে ছোট-বড় দুই শতাধীক শিল্প-কারখানা। যার কাঁচামাল সংগ্রহ ও বাজারজাতের একমাত্র মাধ্যম এ রাস্তা। অতিরিক্ত বোঝাইকৃত মালবাহী গাড়ী রাস্তাটির বড় বড় গর্তে ফেঁসে যাওয়ার কারণে প্রতিদিনই রাস্তার এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে। এতে করে পরিবহন চালক-শ্রমীক সহ যাত্রী ও পথচারীদের স্বাভাবিক চলাচলে বাঁধা গ্রস্থ্য হচ্ছে। এছাড়া কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই রাস্তার পাশে গড়ে উঠেছে ১০-১২টি বালু মহাল। যেখানে ড্রেজিং প্রকল্পে নদীতে ভলগেটে বালু উত্তোলন করে ড্রামট্রাকে করে বিক্রি করছে। ড্রেজিং প্রকল্পে বালু উত্তোলন করতে বালু বিক্রয় কেন্দ্রগুলার আশে পাশের রাস্তা কেটে বালুর পাইপ নেয়া হয়। প্রতিনিয়ত বালু বিক্রয় কেন্দ্রগুলো থেকে চুয়ে চুয়ে পানি এসে রাস্তায় জমছে। এতে করে রাস্তাটিতে সারা বছরই পানি জমে থাকে। তাছাড়া বালুর পাইপ গুলো ছিদ্র হয়ে প্রায়ই রাস্তায় বালু ও পানি আটকে স্বাভাবিক চলাচলে বাঁধা গ্রস্থ্য করে। ফলে দিনে দিনে নতুন নতুন খানাখন্দও বেড়ে চলছে।
রাস্তাটি অতিরিক্ত ভাঙ্গা হওয়ায় কালাদী-রূপসী (মাত্র ১৪ কিলোমিটার) যেতে প্রায় দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় লাগে। এতে করে যাত্রীদের এ রাস্তাটুকু যাতায়াতে গুনতে হয় অতিরিক্ত ভাড়া। বছরের পর বছর এই দৃশ্য চলতে থাকলেও রাস্তাটি দেখার যেন কেউ নেই!
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একাধীকবার রাস্তাটি পুণঃনির্মাণের আশ্বাস দিলেও তা আর বাস্তবায়িত হয়ে উঠেনি। বর্তমানে রাস্তাটিতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী এহসানুল হক জানান, এ রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ভারী যান চলাচলের কারণে রাস্তাটির বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এলজিএইডি ও উপজেলা পরিষদের সার্বিক সহযোগীতায় এবং এলজিএইডির নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রকৌশলী স্বপন কান্তী পালের তত্ত¡াবধানে জরুরী মেরামতের কাজ চলছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে রাস্তাটিতে যানচলাচল স্বাভাবিক হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন