শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাঁশখালীতে পুলিশ-গ্রামবাসী সংঘর্ষের নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য -বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : বাঁশখালীতে পুলিশ-গ্রামবাসী সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলা এবং দেশের উন্নয়ন কর্মকা-ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করার লক্ষ্যেই এই হত্যাকা- ঘটানো হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ইনকিলাবকে একথা জানান।
কারা এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে আপনি মনে করছেন? জানতে চাইলে নসরুল হামিদ বলেন, স্থানীয় প্রশাসন আমাকে জানিয়েছেÑ সেখানকার ছাত্রদল নেতা লিয়াকতের নেতৃত্বে গোলাগুলি হয়েছে। ওই ছাত্রদল নেতার লোকজন গ্রামবাসী ও পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা সেখানে গোলাগুলি করে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাঁশখালীর এ ঘটনা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। এটা নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়। সেখানে বেশ কয়েকজন মানুষ মারা গেছে, ১১ জন পুলিশ আহত হয়েছে। কাজেই একে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, শুধু জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে এমনটি ঘটেছে বলে আমি মনে করি না। এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। তাছাড়া সামনে নির্বাচন। এসব বিষয় অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আপনার মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা বলা হলেও তা কেন গঠন করা হয়নিÑ জানতে চাইলে নসরুল হামিদ বলেন, স্থানীয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি করেছে। আমরা ওই তদন্ত কমিটির রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি। ওই রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা পদক্ষেপ নেবো। তবে সেখানকার ঘটনাপ্রবাহ আমরা ক্লোজ মনিটরিং করছি।
উল্লেখ্য, সোমবার বিকেলে বাঁশখালীর গন্ডামারা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হাদিরপাড়া স্কুলমাঠ এলাকায় নির্মিতব্য কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষে-বিপক্ষে ডাকা সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ, আনসার ও গ্রামবাসীর মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের গুলিতে ৫ জন নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় গ্রামবাসী জানায়। এ ঘটনায় পুলিশ ও আনসারসহ আহত হয়েছে কমপক্ষে ২৫ জন। এতে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে।
বাঁশখালীর গন্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকায় কয়লাভিত্তিক এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের এ বিদ্যুৎকেন্দের জন্য সেখানে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছিল। প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ ঋণ দেবে চীন। আমদানি করা কয়লায় চলবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। উৎপাদনে যাওয়ার পর সরকার এ কোম্পানির কাছ থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ৬ টাকা ৬১ পয়সা দরে কিনবে।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এই প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ শেষ হলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল, সমাবেশ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটছিল।
গত দুই মাস ধরে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন হতাহত হয়। জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, লবণ ও চিংড়ি চাষে জড়িতরা বেকার হওয়া, পরিবেশের বিপর্যয় ও বসতি হারানোর আশঙ্কা প্রকাশ করে বসতভিটা রক্ষা কমিটি নাম দিয়ে সেখানে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল স্থানীয় জনতা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন