দ্রুত এগিয়ে আসছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন। আর তাতে চাঙ্গা হয়ে উঠছেন শীর্ষ পদপ্রত্যাশী নেতারা। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার বাসায় আনাগোনা বাড়ছে তাদের।
আগামী ১১ ও ১২ মে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন। আর আজ অনুষ্ঠিত হবে ছাত্রলীগের ১নং ইউনিট ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলন। এ দুই সম্মেলনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব বাছাই করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বেশ কয়েকজন নেতাকে। সূত্র মতে, এবার নেতৃত্বের যোগ্যতায় যারা এগিয়ে থাকবেন তারাই পেতে পারেন ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ চারটি পদ। এবারে নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একাডেমিক ও সাংগঠনিক যোগ্যতা, দক্ষ, শিক্ষার্থীবান্ধব এবং দলের প্রতি নিবেদিতরাই সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবেন। এছাড়াও সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে আওয়ামী লীগের সাথে তালে তাল মিলিয়ে চলতে পারে এমন নেতৃত্বই আসবে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। সেক্ষেত্রে এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে ছাত্রলীগের কমিটির উপর নজরদারী করবেন বলেও জানিয়েছেন ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা।
তবে এবার আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে বাছাই কমিটি করার কারণে এতদিনের সিন্ডিকেট প্রথা ভাঙতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচেছ। পদপ্রত্যাশীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, ছাত্রলীগের সাবেক এক সভাপতি এতদিন ধরে সিন্ডিকেটটি নিয়ন্ত্রণ করতেন। তবে এবার শীর্ষ নেতৃত্বে নেতা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বয়স বিবেচনার একটি ব্যাপার কাজ করছে বলে জানা গেছে। ছাত্রলীগের অনেক কেন্দ্রীয় নেতাই বলছেন, নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এবার বয়স গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বয়স ২৭ রাখার পক্ষে, তাতে আগামী দিনে তরুণদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ছাত্রলীগকে আরো সহায়তা করবে।
গঠনতন্ত্রের ধারা ৫ এর (ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংগঠনের সকল পর্যায়ে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৭ বছর থাকলেও ২০০৬ সাল থেকে অলিখিতভাবে ২৯ বছর বয়সসীমা মান্য করা হচ্ছে। পদপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, এবার যেহেতু কমিটি যথাসময়ে ভেঙে যাচ্ছে তাতে বয়স ২৭ রাখাই সমীচীন। তাতে তরুণদের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ আরো বাড়বে। আর নেতাকর্মীরাও আরো চাঙা হয়ে উঠবে। অন্যান্য কমিটি মেয়াদের পর অনেক দিন পার হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ২৯ রাখা হয়েছিল তা এবারে তেমন পরিস্থিতি নেই বলেও জানান অনেক নেতা।
এছাড়াও বিভিন্ন হলের কর্মীরাও চাচ্ছেন বয়স যেন ২৭ রাখা হয় তাতে নেতাদের সাথে কর্মীদের মানসিক অনেক দিন মিল হবে এবং সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিতে একতা ও ঐক্য বজায় থাকবে। সেক্ষেত্রে বেশী বয়সী নেতাদের সাথে অনেক কর্মীরই সম্পর্ক থাকে বড় ভাই সুলভ। বয়সের বিবেচনায় অনেক সময় কর্মীরা নেতাদের কাছে তেমন খোলাখুলি মতামত জানাতে পারে না।
একাধিক সূূত্রে জানা গেছে, এবার চার শীর্ষ পদের একটি চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আসতে পারে। এছাড়াও উত্তরবঙ্গ অ্ঞ্চল থেকেও নেতা আসার সম্ভাবনা প্রবল। আর সম্ভাবনার তালিকায় থাকা অন্যান্য অঞ্চল গুলো হলো ফরিদপুর অঞ্চল ও বরিশাল অঞ্চল।
শীর্ষ পদে এগিয়ে যারা
এবারে চার শীর্ষ পদের দৌড়ে এগিয়ে আছেন চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে কেন্দ্রীয় উপ আন্তর্জাতিক সম্পাদক এইচ এম তাজউদ্দিন, সহ-সম্পাদক জায়েদ বিন জলিল, স্কুলছাত্র বিষয়ক উপ-সম্পাদক খাজা খায়ের সুজন, স্যার এএফ রহমান হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান তুষার, ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহাসান আহমেদ রাসেল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দিদার মুহাম্মদ নিজামুল ইসলাম, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম।
বরিশাল অঞ্চল থেকে এগিয়ে আছেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়, সহ সম্পাদক খাদেমুল বাশার জয়, সহ-সভাপতি রুহুল আমিন, প্রচার বিষয়ক উপ-সম্পাদক সাইফুর রহমান সাইফ, আপ্যায়নবিষয়ক উপ-সম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান, ঢাবির কবি জসীমউদ্দীন হলের সভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসেন।
ফরিদপুর অঞ্চল থেকে এগিয়ে আছেন, কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন, সহ-সভাপতি আরেফিন সিদ্দিক সুজন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি বিদ্যুৎ শাহরিয়ার কবির, এফ রহমান হলের সভাপতি হাফিজুর রহমান।
উত্তরবঙ্গ অঞ্চল থেকে এগিয়ে আছেন, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক দেলোয়ার শাহাজাদা, কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল হাসান, উপ-দফতর সম্পাদক আবু সাইদ কনক, আপ্যায়ন বিষয়ক উপ-সম্পাদক তানভীর রহমান মাহিদ, সহ-সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য, আইনবিষয়ক উপ-সম্পাদক হোসাইন সাদ্দাম।
সিলেট অঞ্চল থেকে এগিয়ে আছেন জিয়া হলের সভাপতি ইউসুফ উদ্দিন খান। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে এগিয়ে আছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি চৈতালি হাওলাদার চৈতি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন