স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচনকালীন সরকারের সমস্যা সমাধানের আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ সরকার চাই। এই বিষয়টা রাজনৈতিকভাবে নিষ্পত্তি হওয়া দরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এর একটা সুষ্ঠু সমাধান দরকার, যেটা সরকার সবসময় উপেক্ষা করেছে। এ সমস্যা (নির্বাচনকালীন সরকার) সমাধানের আগে এ বিষয়ে কোনো কথা না বলে নির্বাচন কমিশন একতরফাভাবে তফসিল ঘোষণা করলে কোনো দলই তা মেনে নেবে না। এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। গতকাল (বুধবার) শ্রমিক দলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ তিনি এসব কথা বলেন।
আগামী অক্টোবরে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে- একজন নির্বাচন কমিশনারের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের (সরকার) লক্ষ্যই হচ্ছে একতরফাভাবে নির্বাচনে যাওয়া, বিএনপিকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া। কারণ আওয়ামী লীগ ‘পুরোপুরি জনবিচ্ছিন্ন’ হয়ে পড়েছে বলেই খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছে। আজকে যদি বিএনপি নির্বাচন করে, বিরোধী দল নির্বাচন করে, তাহলে তাদের (আওয়ামী লীগ) ভরাডুবি হবে। সে কারণে আজকে তারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য একরতফা একটা নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে, সেই নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে তারা একটা নির্বাচন করতে চাইছে যেটা কখনোই দেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। বর্তমান সরকারকে হটাতে আন্দোলনের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। আগামী নির্বাচনের জন্য ২৫টি আসনের সীমানা পরিবর্তন করে যে গেজেট নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করেছে, তারও সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমরা বরাবরই বলে আসছি, সরকার যা নির্দেশ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন তাই করছে। একতরফাভাবে নির্বাচন করার যে নীলনকশা, সেদিকেই তারা যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ দেশের রাজনীতিকে একটি ভয়াবহ অন্ধকার গহŸরে দিকে নিয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিরোধী দলের সাথে কোনো আলোচনা না করে, কোনো ডায়ালগ ওপেন না করা, দেশের মানুষের যে ওপিনিয়ন সেটি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে আজকে এই সরকার তাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী ও একদলীয় শাসন-ব্যবস্থা পোক্ত করবার জন্য, অন্ধকার গহŸরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
‘বিএনপিকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব সরকারের না’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য সম্পর্কে বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে তারা বরাবরই, মূল রাজনৈতিক বিরোধী দলকে (বিএনপিকে) বাদ দিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে। সাধারণ মানুষ যে ব্যবস্থা মেনে নিয়েছিল, সেই তত্ত¡াবধায়ক সরকার-ব্যবস্থা তারা ক্ষমতায় আসার পরেই বাতিল করে দিয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করে গোটা নির্বাচন-ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল অসহায় বোধ করছে। বিএনপি এই নেতা বলেন, শুধু আমরা বলছি না বিদেশের বিভিন্ন গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোও বলছে, এই সরকার একটা স্বৈরাচারী সরকার, সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু হতে পারে সেই অভিজ্ঞতা দেশের মানুষের রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা (ইসি) দল নিরপেক্ষ নয়, সরকার তাদেরকে তৈরি করেছে, সরকার তাদের পছন্দনীয় লোকজন দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। যে নির্বাচন কমিশনের একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করার কোনো যোগ্যতাই নেই। মে দিবসে শ্রমিক দলকে শোভাযাত্রা করার অনুমতি না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব। এসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিমসহ শ্রমিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।#####
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন